শেয়ার বিজ ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজস্থানের আজমিরে খাজা গরিবে নেওয়াজ হজরত মঈনুদ্দীন চিশতি (রহ.)-এর দরগা শরিফ জিয়ারত ও প্রার্থনার মাধ্যমে তার চার দিনব্যাপী ভারত সফর সমাপ্ত করলেন।
প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ভিভিআইপি চার্টার্ড ফ্লাইটটি স্থানীয় সময় গতকাল বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৫টায় জয়পুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে রওনা হয়। রাজস্থানের শিক্ষামন্ত্রী বিডি কাল্লা ও ভারতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মুহাম্মদ ইমরান বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে বিদায় জানান। ফ্লাইটটি রাতে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। সূত্র: বাসস।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী সেখানে নফল নামাজ ও মুনাজাতের মাধ্যমে দেশ, জনগণ ও মুসলিম উম্মাহর উন্নতি, সমৃদ্ধ ও কল্যাণ কামনা করেন।’
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী সেখানে কিছু সময় থাকেন। এ সময় তিনি ফাতিহা পাঠ ও মুনাজাত করেন। এরপর শেখ হাসিনা আজমির শরীফ প্রদক্ষিণ করেন। ৬ সেপ্টেম্বর নয়াদিল্লিতে নিজামউদ্দিন আউলিয়ার দরগাহ জিয়ারত ও সেখানে প্রার্থনার মাধ্যমে তিনি ভারত সফর শুরু করেন। তিনি সেখানেও প্রার্থনা করেন।
এর আগে ৫ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী নয়াদিল্লির পালাম বিমানবন্দরে পৌঁছান। সেখানে তাকে লাল গালিচা সংবর্ধনা দেয়া হয়। ভারত সফরের প্রথম দিন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস. জয়শংকর মৌর্য্য হোটেলে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর স্যুইটের সম্মেলন কক্ষে তার সঙ্গে দেখা করেন। ৬ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় দিনের সফরে শেখ হাসিনা হায়দরাবাদ হাউসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় ও একান্ত বৈঠক করেন। নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানান এবং তাকে আনুষ্ঠানিক গার্ড অব অনার দেন।
দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর অভিন্ন সীমান্ত নদী কুশিয়ারা থেকে ১৫৩ কিউসেক পানি প্রত্যাহারসহ নিকটতম প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে সাতটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। দুই প্রধানমন্ত্রী দু’দেশের যৌথ উদ্যোগের বেশ কয়েকটি প্রকল্প উদ্বোধন করেন। এর মধ্যে খুলনার রামপালে ১৩২০ মেগাওয়াটের কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র রয়েছে।
পরে যৌথ বিবৃতিতে ভারত বাংলাদেশি পণ্য তৃতীয় কোনো দেশের রপ্তানির জন্য ফ্রি ট্রানজিটের প্রস্তাব দেয়। শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার বিদ্যমান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ভবিষ্যতে আরও জোরদার করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।
একই দিন শেখ হাসিনা তার সম্মানে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর আয়োজিত মধ্যহ্নভোজে যোগ দেন। তিনি ওই দিন ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু ও উপ-রাষ্ট্রপতি জাগদীপ ধনখারের সঙ্গে পৃথক সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন এবং রাজঘাটে মহাত্মা গান্ধীর সমাধিতে শ্রদ্ধা জানান।
৭ সেপ্টেম্বর ভারতের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের উন্নয়ন মন্ত্রী জি কিষান রেড্ডি, কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী ও নোবেল বিজয়ী কৈলাশ সত্যার্থী বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে পৃথকভাবে সাক্ষাৎ করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন ও ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে শহিদ বা গুরুতর আহত ভারতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনীর অফিসারদের বংশধরদের ‘মুজিব বৃত্তি’ বিতরণ অনুষ্ঠানে ভাষণ দেন।
