প্রতিনিধি, সিলেট: সিলেটে গতকাল ভোর থেকে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি পালন শুরু করছেন পরিবহন শ্রমিকরা। ট্রাফিক পুলিশের হয়রানি বন্ধসহ পাঁচ দফা দাবিতে এ ধর্মঘট পালন করছেন তারা। এতে সকাল থেকে অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার সব ধরনের বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। ভোর থেকেই শ্রমিকরা লাঠি হাতে গণপরিবহন বা পণ্যবাহী গাড়ি চলাচলে বাধা দিচ্ছেন। এতে শিক্ষার্থী ও চাকরিজীবীসহ সাধারণ যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়েছেন।
এর আগে রোববার বিকালে সিলেটের ছয়টি নিবন্ধিত শ্রমিক সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক সমন্বয় পরিষদের সভায় অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির ডাক দেয়া হয়। এরপর সোমবার রাতে পরিবহন শ্রমিক নেতাদের ধর্মঘট প্রত্যাহারের অনুরোধ জানায় প্রশাসন। তবে সে অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করে গতকাল ভোর থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতিতে যান পরিবহন শ্রমিক নেতারা।
সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক সমন্বয় পরিষদের সভাপতি ময়নুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা যৌক্তিক দাবি নিয়ে আন্দোলনে নেমেছি। আমাদের দাবি না মানা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব। অনতিবিলম্বে আমাদের ৫ দফা দাবি মেনে না নিলে আরও কঠোর কর্মসূচি পালন ছাড়া আর কোনো পথ খোলা থাকবে না।’
জানা গেছে, সিলেট বিভাগের সব পরিবহন শ্রমিক বেশ কিছুদিন ধরে পাঁচ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে কর্মবিরতি পালনসহ মিছিল ও সভা করে আসছেন। তাদের দাবিগুলো হলোÑসিলেট মহানগর পুলিশের (এসএমপি) কমিশনার ও উপকমিশনারের (ট্রাফিক) অপসারণ, ট্রাফিক পুলিশের হয়রানি ও রেকার বাণিজ্যসহ মাত্রাতিরিক্ত জরিমানা বন্ধ, সিলেটে শ্রম আদালতের প্রতিনিধি শ্রমিক লীগের নাম ব্যবহার করে প্রভাব বিস্তারকারী নাজমুল আলম রোমেনকে প্রত্যাহার, উচ্চ আদালতের নির্দেশনার আলোকে পাথর কোয়ারি খুলে দেয়া, ভাঙাচোরা রাস্তাগুলো দ্রুত সংস্কার এবং নতুন সিএনজিচালিত অটোরিকশা বিক্রি বন্ধ ও বিক্রয়কৃত গাড়ির রেজিস্ট্রেশন দেয়া। এছাড়া অনুমোদনবিহীন গাড়ি যেমনÑ অটোবাইক, ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ডাম্পিংকৃত গাড়ি চলাচল বন্ধ রাখার দাবি জানিয়ে আসছেন পরিবহন শ্রমিকরা।
পরিবহন শ্রমিকদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলনের পথে হাঁটলেও শুধু আশ্বাসের মধ্যেই তাদের আটকে রাখা হচ্ছে। একটি দাবিও বাস্তবায়ন করা হয়নি। ফলে তারা কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। গতকাল সিলেট জেলায় এবং আজ থেকে পুরো বিভাগে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি শুরু করবেন পরিবহন শ্রমিকরা।
