নিজস্ব প্রতিবেদক: সরকার হঠাতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনের রূপরেখা চূড়ান্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। গতকাল দুপুরে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি জানান, গত সোমবার অনুষ্ঠিত বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল সভায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের পরিপ্রেক্ষিতে যুগপৎ আন্দোলনের রূপরেখা চূড়ান্ত করার সিদ্ধান্ত
গৃহীত হয়।
সভায় নেয়া সিদ্ধান্তগুলো তুলে ধরে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘সম্প্রতি জ্বালানি সরবরাহের ব্যর্থতায় ডিজেলচালিত কয়েকটি বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ থাকলেও কুইক রেন্টালে চারটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেয়াদ বৃদ্ধিতে গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করা হয় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভায়। সভা মনে করে, যেখানে বিদ্যুৎ বোর্ড জ্বালানির অপ্রতুলতার কারণে সবকটি বিদ্যুৎকেন্দ্রে উৎপাদন করতে পারছে না, উৎপাদন না করেও শত শত কোটি টাকা ভর্তুকি প্রদান করছে সরকার, সেখানে চারটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেয়াদ বৃদ্ধি ক্ষতির পরিমাণ বহুলাংশে বৃদ্ধি করবে।’
তিনি বলেন, মানুষের কষ্টার্জিত আয়ের টাকা সরকারের ট্যাক্সের মাধ্যমে কেটে নিয়ে অনৈতিকভাবে অপ্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ প্ল্যান্টগুলোকে ক্যাপাসিটি চার্জ হিসেবে দেয়ায় তাদের দুর্নীতির আরেক চিত্র উদ্ঘাটিত হয়েছে। সরকারের এই সিদ্ধান্ত অবিলম্বে বাতিল করার জন্য আহ্বান জানানো হয় স্থায়ী কমিটির সভায়।
তিনি আরও বলেন, স্বাস্থ্যসেবায় ব্যবহƒত ২০টি জেনেরিকের (মূল ওষুধ) ৫০টি ব্র্যান্ডের ওষুধের দাম ৫০ শতাংশ থেকে ১৩৪ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধির সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়েছে স্থায়ী কমিটির সভায়। সভা মনে করে, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির মূল্য যখন অস্বাভাবিকহারে বেড়ে চলেছে, সেই সময় গুটিকতক ব্যবসায়ীকে মুনাফা পাইয়ে দেয়ার জন্য অনৈতিকভাবে ওষুধের মূল্য বৃদ্ধি করা হচ্ছে। এই সিদ্ধান্ত অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, সভায় গত ২২ আগস্ট থেকে লোডশেডিং, জ্বালানি তেল, চাল, ডাল, তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে আন্দোলনে ভোলায় স্বেচ্ছাসেবক দলের আব্দুর রহিম, ছাত্রদলের নূর আলম, নারায়ণগঞ্জের যুবদল নেতা শাওন হত্যার প্রতিবাদে দেশব্যাপী আন্দোলনে অসংখ্য নেতাকর্মীর ওপর আওয়ামী সন্ত্রাসী ও পুলিশের হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়।
তিনি বলেন, এসব হামলায় পুলিশের গুলিতে অনেকের চোখ নষ্ট হয়ে গেছে, আহত হয়েছে অসংখ্য এবং হাজার হাজার নেতাকর্মীর নামে মিথ্যা মামলা করা হচ্ছে। পুলিশ বাড়ি বাড়ি তল্লাশি চালিয়ে পরিবারের সদস্যদের হয়রানি করছে। সভায় এই সরকারের দমননীতির তীব্র সমালোচনা করা হয়। অবিলম্বে গ্রেপ্তহারকৃত সব নেতাকর্মীর মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়।