নবম গ্রেড দাবি সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারদের

নিজস্ব প্রতিবেদক: নবম গ্রেড বাস্তবায়নসহ বিভিন্ন দাবি-দাওয়া জানিয়েছেন সহকারী উপজেলা-থানা শিক্ষা অফিসাররা। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির কাছে সম্প্রতি এ নিয়ে স্মারকলিপি দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এমএএস রবিউল ইসলাম এবং সাধারণ সম্পাদক মো. সালাহউদ্দিন আহমেদ এ তথ্য জানিয়েছেন।

সহকারী উপজেলা-থানা শিক্ষা অফিসার পদের দশম গ্রেড থেকে নবম গ্রেডে উন্নীতকরণের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন জানিয়ে এইউইও/এটিইওরা জানান, ১৯৮৫ সালে প্রণীত নিয়োগ বিধিমালার পর ১৯৯৪ সালে এইউইও পদটি ১০ম গ্রেডে উন্নীত করা হয় এবং সে সময়ে  তার অধস্তন প্রধান শিক্ষক পদটি ১৪তম গ্রেডে এবং সহকারী শিক্ষক পদটি ১৮তম গ্রেডে ছিল। প্রধান শিক্ষক পদটি তিন দফায় উন্নীত করার ফলে ২০১৪ সালে ১১তম গ্রেড এবং সহকারী শিক্ষক পদটি চার দফায় ২০২০ সালে ১৩তম গ্রেডভুক্ত হয়। ১৯৯৪ সাল থেকে ২০২২ পর্যন্ত এই দপ্তরের জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার পদটি প্রথম গ্রেড থেকে ষষ্ঠ গ্রেডে, পিটিআই সুপারিনটেন্ডেন্ট পদটি নবম গ্রেড থেকে ষষ্ঠ গ্রেডে এবং পিটিআই ইন্সট্রাক্টর পদটি তৃতীয় শ্রেণি থেকে নবম গ্রেডে উন্নীতকরণ করা হয়েছে। কিন্তু দীর্ঘ ২৮ বছর পর্যন্ত সহকারী উপজেলা-থানা শিক্ষা অফিসার পদটি ১০ম গ্রেডেই রয়েছে।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, ১৯৮৫ সালে এনাম কমিটির রিপোর্টে শিক্ষকসহ প্রাথমিক শিক্ষার জনবল ছিল ১ লাখ ৪৭ হাজার ২০০ জন। ২০১৩ সালে ২৬ হাজার ১৯৩টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণ এবং বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে ইউআরসি ইন্সট্রাক্টরসহ বিভিন্ন পদে নিয়োগ দেয়ায় বর্তমানে শিক্ষকসহ মোট জনবল ৪ লাখ ৭৭ হাজার ১২৫ জনে উন্নীত হয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের আওতাধীন প্রধান শিক্ষকসহ দ্বিতীয় শ্রেণির পদসংখ্যা ৬৮ হাজার ৭৪৫ জনের বিপরীতে বর্তমানে প্রথম শ্রেণির পদসংখ্যা মাত্র ২ হাজার ৯৬৫টি। সরকারের সব দপ্তরের মোট অনুমোদিত জনবলের বিবেচনায় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরেরই মোট জনবল প্রায় এক-তৃতীয়াংশ। এমনকি নিকটতম স্বাস্থ্যসেবা অধিদপ্তরের জনবলের চার গুণের অধিক। জনবল বিবেচনায় সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার পদটি প্রথম শ্রেণি তথা নবম গ্রেডে উন্নীত করা একান্ত প্রয়োজন।

সহকারী উপজেলা-থানা শিক্ষা অফিসার পদের আওতাধীন জনবল একজন সহকারী উপজেলা-থানা শিক্ষা অফিসারের অধীন প্রায় ৩০ জন দ্বিতীয় শ্রেণি পদমর্যাদার প্রধান শিক্ষক এবং ১৬০-২০০ জন সহকারী শিক্ষক রয়েছেন, যাদের বার্ষিক গোপনীয় অনুবেদন প্রদান, ছুটি মঞ্জুর, একাডেমিক তত্ত্বাবধান, মনিটরিং ও মেন্টরিং সার্বিক সহযোগিতা করে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করতে হয়। শিক্ষকের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করতে হয়। এছাড়া তাকে সরাসরি সুবিধাভোগী হিসেবে প্রায় ৬ হাজার শিক্ষার্থী, অভিভাবক, বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য, শিক্ষক-অভিভাবক সমিতির সদস্যসহ বিশাল অংশীয়ানদের সমন্বয় ও নেতৃত্ব প্রদানের মাধ্যমে মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতকরণে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে উপজেলা পর্যায়ে এ ধরনের বৃহৎ প্রশাসনিক ইউনিট অন্য কোনো সরকারি কর্মকর্তার অধীন নেই। তাই এ পদটি নবম গ্রেডে উন্নীত করার যৌক্তিকতা অপরিসীম।

স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, সারাদেশে ৬৫ হাজার ৬২০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। প্রায় ৩০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নিয়ে একটি ‘ক্লাস্টার’ নির্ধারিত আছে, যার নেতৃত্বে একজন এইউইও/এটিইও রয়েছেন। এছাড়া প্রাথমিক পর্যায়ের অন্যান্য সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে সরকারের নির্দেশনা বাস্তবায়নে দায়িত্ব পালন করতে হয়। সরকারের অন্য কোনো দপ্তরের এত বেশিসংখ্যক প্রতিষ্ঠান মাঠ পর্যায়ে নেই। এমনকি নিকটতম মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের আওতাধীন প্রতিষ্ঠান প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রতিষ্ঠানের মাত্র প্রায় এক-চতুর্থাংশ। নির্বাচনী ইশতেহারের ফ্লাগশিপ প্রকল্প ‘আমার গ্রাম আমার শহর’ বাস্তবায়নকে ত্বরান্বিত করতে এ পদের উন্নয়ন এখন সময়ের দাবি।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০