প্রতিনিধি, কক্সবাজার : পরিবেশবাদীদের দাবির মুখে কক্সবাজারের পিএমখালীতে কর্তনকৃত পাহাড়ের স্থানে বনায়নের গাছ রোপণ করছে বন বিভাগ। গত ১০-১৫ দিন ধরে ৫-৬ একর কর্তনকৃত পাহাড়ের জমিতে শিমুল, কদম, জারুল, অর্জুন, আকাশমণি, কড়ই, বহেড়া ও ইপিলসহ বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় চার হাজার গাছের চারা রোপণ করা হয়েছে।
জানা গেছে, কক্সবাজার সদর উপজেলার পিএমখালী ইউনিয়নের ছনখোলা ঘোনারপাড়ার তেইল্ল্যাকাটা এলাকায় রক্ষিত ও সংরক্ষিত বনভূমিতে ৭ মাসে আনুমানিক ১০ একরের ৫-৬টি পাহাড় কেটে প্রায় দুই কোটি ঘনফুট বালি বিক্রি করে চিহ্নিত পাহাড়খেকো ৩২ মামলার আসামি ওবায়দুল করিম সিন্ডিকেট। ওই সময়ে নির্বিচারে বনভূমির আনুমানিক ২০ হাজার গাছ কেটে নেয়া হয়। প্রকাশ্যে এভাবে ২১টি ডাম্প ট্রাক নিয়ে পাহাড় কাটার ঘটনা সামনে নিয়ে আসেন পরিবেশবিষয়ক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘এনভায়রনমেন্ট পিপল’-এর প্রধান নির্বাহী রাশেদুল মজিদ। এছাড়া কক্সবাজার সচেতন নাগরিক আন্দোলনের সদস্য সচিব মোরশেদ আলম ও সাংবাদিক সিরাজুল ইসলাম পৃথকভাবে দুটি অভিযোগ দায়ের করেন পাহাড়খেকো সিন্ডিকেটের সদস্য ও সংশ্লিষ্ট বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।
এ বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর পাহাড় কাটায় কারা জড়িত এবং কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে তা জানাতে আদালত স্বপ্রণোদিত আদেশ দেন। পরে বন বিভাগ ও পরিবেশ অধিদপ্তর সরেজমিনে পাহাড় কাটার স্থান পরিদর্শন করে। দেড় কোটি ঘনফুট পাহাড় কাটার সত্যতা পাওয়ায় জড়িত ২৩ জনের বিরুদ্ধে আদালতে প্রতিবেদন দেয় পরিবেশ অধিদপ্তর।
পরিবেশবিষয়ক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘এনভায়রনমেন্ট পিপল’-এর প্রধান নির্বাহী রাশেদুল মজিদ বলেন, ‘বন বিভাগের এক কর্মকর্তার যোগসাজশে প্রকাশ্যে আনুমানিক ২০ হাজার গাছ কেটে প্রায় ১০ একর আয়তনের ৫-৬টি পাহাড় কেটে নেয় একটি সিন্ডিকেট। আমাদের দাবির মুখে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ পাহাড় কাটা বন্ধ করে সেখানে বনায়নের উদ্যোগ নিয়েছে। বন বিভাগের এ উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি।’
বনায়ন প্রসঙ্গে কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন সরকার বলেন, ‘ওবায়দুল করিম নামের এক ব্যক্তির নেতৃত্বে আনুমানিক ১০ একরের বনাঞ্চলে গাছ ও পাহাড় কাটা হয়েছে। সিন্ডিকেটটির বিরুদ্ধে বন আইনে ২৮টি মামলা করা হয়েছে। এখন টহল জোরদার করে কর্তনকৃত পাহাড়ে বনায়ন করা হচ্ছে।