দুলাল বিশ্বাস, গোপালগঞ্জ: গোপালগঞ্জে মধুমতী নদীর ভাঙনে হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামের মানুষের চিরচেনা বসতভিটা ও আবাদি জমি। গত এক সপ্তাহ ধরে ৫০০ মিটার নদীভাঙনে ১৮টি বসতবাড়ি, প্রচুর গাছপালা ও ফসলি জমি বিলীন হয়ে গেছে। সদর উপজেলার জালালাবাদ ইউনিয়নের ইছাখালী গ্রামের ডুবশী, মোল্লাপাড়া ও ধলইতলা এলাকার মানুষ এখন নদীভাঙনে দিশেহারা।
এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড ১০ হাজার বালির বস্তা ফেলে নদীভাঙন প্রতিরোধের উদ্যোগ নিয়েছে। এছাড়া জেলা প্রশাসন ক্ষতিগ্রস্ত ১৮টি পরিবারে নগদ দুই লাখ ৫২ হাজার টাকা, পরিবারপ্রতি ৩০ কেজি চাল ও ২৪টি করে ঢেউটিন, শিশুখাদ্য, গোখাদ্য ও শুকনো খাবার বিতরণ করেছে। গোপালগঞ্জের ডিসি শাহিদা সুলতানা, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ফয়জুর রহমান, উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ লুৎফার রহমান বাচ্চু, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহসিন উদ্দীন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নিরুন্নাহার ইউসুফসহ পদস্থ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
ইছাখালী গ্রামের ডুবশী মোল্লাপাড়া এলাকার বাসিন্দা হাজী আব্দুল কাফি মোল্লা (৭২) বলেন, আমার ওয়াল করা টিনের বড় বসতঘর, ১০ বিঘা জমি ও শ্যালোমেশিন নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। ক্ষতি হয়েছে প্রায় দুই কোটি টাকার। ডিসি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আমাদের সহায়তা ও সান্ত¡না দিয়েছেন। তিনি নদীভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে নির্দেশনা দিয়েছেন। আমাদের দাবি, স্থায়ীভাবে নদীভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেয়া হোক।
জালাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান এফ এম মারুফ রেজা বলেন, আমার ইউনিয়নে ইছাখালী, ডুবশী ও ধলইতলায় প্রায় ৫০০ মিটারজুড়ে নদীভাঙন হয়েছে। ১৮টি পরিবার বসতঘর হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছে। জেলা প্রশাসনের কাছে আমরা এখানে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবি করেছি।
গোপালগঞ্জের ডিসি শাহিদা সুলতানা বলেন, ‘আপাতত নদীভাঙন প্রতিরোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে নির্দেশনা দিয়েছি। ভাঙন প্রতিরোধে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করে দেয়া হবে। ক্ষতিগ্রস্ত প্রত্যেক পরিবারকে নগদ টাকা, ঢেউটিন ও চাল দিয়ে সহায়তা করা হয়েছে।’
গোপালগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ফয়জুর রহমান বলেন, ইছাখালী গ্রামের ডুবশী মোল্লাপাড়া চরে নদীভাঙন প্রতিরোধে ১০ হাজার বালুর বস্তা ফেলা হয়েছে। ব্যাগে বালু ভরার কাজ চলছে। এগুলো গণনা করে নদীতে ফেলা হবে। স্থায়ী নদীভাঙন প্রতিরোধ করতে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।