আতঙ্কে শিক্ষার্থীরা ঠিকমতো লেখাপড়া করতে পারছে না

প্রতিনিধি, বান্দরবান: সীমান্তে প্রতিদিনই হচ্ছে গোলাগুলি। মাঝে মধ্যেই বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হচ্ছে মর্টারশেল। অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে বান্দরবানের সীমান্তবর্তী বিদ্যালয়গুলোতে ভয়ে আতঙ্কে ঠিকমতো লেখাপড়া করতে পারছে না কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীরা। শঙ্কায় রয়েছে শিক্ষার্থীদের অভিভাবক এবং শিক্ষকরাও। সীমান্তজুড়েই অজানা শঙ্কার মধ্যেই দিন কাটাচ্ছে সীমান্তবাসী।

শিক্ষা বিভাগ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানায়, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার গুনদুম ইউনিয়নে ১২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১টি মাদ্রাসা এবং ১টি উচ্চ বিদ্যালয় রয়েছে। গুনদুম লাগোয়া সোনাইছড়ি ইউনিয়নে রয়েছে ৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৩টি বেসরকারি প্রাইমারি স্কুল এবং ১টি উচ্চবিদ্যালয়। আর সীমান্তবর্তী গোটা নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা হচ্ছে ৫৬টি। সীমান্তবর্তী গুনদুম ও সোনাইছড়ি ইউনিয়নে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ১৫ হাজারের মতো। দু’মাস ধরে মিয়ানমার সীমান্তে বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন আরাকান আর্মী (এএ) এবং মিয়ানমার সরকার বাহিনীর মধ্যে চলমান সংঘাতের প্রভাব পড়েছে সীমান্তবর্তী বাংলাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার্থীদের ওপরে। সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোয় স্থানীয়দের চলাচলে বিজিবির কঠোর বিধিনিষেধও বিরূপ প্রভাব ফেলছে শিক্ষার্থীদের মধ্যে। 

গুনদুম বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর অভিভাবক মোহাম্মদ হোসেন ও ছুবুর মিয়া বলেন, সীমান্তে প্রতিদিনই গোলাগুলি হচ্ছে। গতকালও তুমব্রু সীমান্তের ৩৭,৩৮ সীমান্ত পিলার এলাকায় গোলা বর্ষণের শব্দ শোনা গেছে। উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছে সীমান্তবাসী। আতঙ্কে বিপদের শঙ্কায় ছেলে-মেয়েদের স্কুলেও পাঠাতে পারছি না। অধিকাংশ বিদ্যালয়েই কমে গেছে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি। ঘরবন্দি শিক্ষার্থীরাও গুলির বিকট শব্দে কেঁপে উঠছে মাঝে মধ্যেই। বিস্ফোরণের আওয়াজে আতঙ্কিত শঙ্কিত স্কুলের শিক্ষকরাও।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ক’জন শিক্ষক বলেন, স্কুলে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির সংখ্যা কমেছে। তার মধ্যে ওপারে গোলাগুলির আওয়াজ বাড়লেই তড়িঘড়ি করে শিক্ষার্থীদের ছুটি দিয়ে দিচ্ছেন শিক্ষকরা। এছাড়া স্কুলে আসা শিক্ষার্থীদের এলোমেলো ঘোরাফেরা না করে স্কুল শেষে রাস্তার একপাশ ধরে লাইনে লাইনে বাড়ি ফেরার পরামর্শও দেয়া হচ্ছে। গোলাগুলি বিস্ফোরণের শব্দে আতঙ্কের মধ্যে লেখাপড়া হয় না। জীবনের মায়া সবারই আছে। তারপরও বাধ্য হয়েই উপস্থিত শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।

এ বিষয়ে বান্দরবানের ডিসি ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি বলেন, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা কথা বিবোচনায় এসএসসি পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা কেন্দ্র তাৎক্ষণিক পরিবর্তন করেছি। গুনদুম ইউনিয়নের সীমান্তঘেঁষা চারটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ও আমি পরিদর্শন করেছি। শিক্ষা কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে সেখানে। পরিস্থিতি বিবোচনায় শিশু ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০