খুলনার মরিয়ম মান্নানের মাকে ফরিদপুর থেকে উদ্ধার

প্রতিনিধি, খুলনা : খুলনায় মেয়ের ফেসবুক পোস্ট নিয়ে আলোচনায় থাকা নিখোঁজ রহিমা বেগমকে অবশেষে জীবিত অবস্থায় ফরিদপুর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে; যিনি আত্মগোপনে ছিলেন বলে দাবি পুলিশের।

শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার সৈয়দপুর গ্রাম থেকে এক মাস ধরে হদিস না পাওয়া রহিমাকে উদ্ধারের কথা জানান খুলনা মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. মাসুদুর রহমান ভূঞা।

তিনি বলেন, রহিমা বেগম নিজেই আত্মগোপনে ছিলেন। রাতে মরিয়ম মান্নান ফেসবুক স্ট্যাটাসে বলেছেন, পুলিশের পক্ষ থেকে ফোন করে তার মাকে উদ্ধার করার কথা জানানো হয়েছে।

খুলনার মহেশ্বরপাশার বণিকপাড়া থেকে গত ২৭ আগস্ট নিখোঁজ হন ৫৫ বছর বয়সি রহিমা বেগম। এরপর থেকে তার সন্ধান করছিলেন তার মেয়ে মরিয়ম মান্নানসহ চার বোন। এ নিয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনও করা হয়।

গত বৃহস্পতিবার ময়মনসিংহের ফুলপুরে তার মায়ের লাশ পাওয়া গেছে বলে মরিয়ম মান্নান ফেসবুকে পোস্ট দেন। এ নিয়ে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশ হলে তা আলোচনায় আসে। ১৩ দিন আগে উদ্ধার করা বস্তাবন্দি লাশটি রহিমা বেগমের কি না, সে বিষয়ে নিশ্চিত হতে ফুলপুরে যান তার চার মেয়ে।

ফরিদপুরের বোয়ালমারী থানার ওসি মো. আবদুল ওহাব জানান, খুলনা মহানগর পুলিশের এডিসি আবদুর রহমানের নেতৃত্বে একটি দল বোয়ালমারী সদর ইউনিয়নের সৈয়দপুর গ্রামের কুদ্দুস মোল্লার বাড়ি থেকে রহিমা বেগমকে উদ্ধার করে। দলটি রাতেই খুলনা পৌঁছেছে।

আব্দুর রহমান জানান, সম্প্রতি পারিবারিক নানা বিষয় নিয়ে রহিমার সঙ্গে স্বামীর কলহ চলছিল। এ নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আত্মগোপন করেন রহিমা। নিখোঁজের পর কয়েকবার স্থান পরিবর্তন করেছেন। এজন্য তার লোকেশন শনাক্ত করতে বেগ পেতে হয়েছে আমাদের। গত ১৭ সেপ্টেম্বর কুদ্দুস মোল্লার বাড়িতে যান। এরপর থেকে সেখানে ছিলেন তিনি।

আব্দুর রহমান বলেন, পুরো বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এরপর আদালতে তোলা হবে। কারণ, তাকে উদ্ধারের বিষয়ে আদালতের নির্দেশনা আছে। নিখোঁজের মামলাটি তদন্ত করছে পিবিআই। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

দৌলতপুর থানার ওসি নজরুল ইসলাম জানান, কুদ্দুস মোল্লা সোনালী জুট মিলে চাকরিরত অবস্থায় রহিমা খাতুনের মহেশ্বরপাশার বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। এর আগে রহিমা বেগমের সন্ধান চেয়ে ১ সেপ্টেম্বর খুলনায় সংবাদ সম্মেলন করেন তার বাড়ির লোকজন। রহিমার সঙ্গে জমিজমা নিয়ে স্থানীয় বিল্লাল হোসেন ও হেলালের সঙ্গে তাদের মামলা চলছে বলেও সে সময় জানানো হয়েছিল।

ওসি নজরুল জানান, গত ২৭ অগাস্ট রাত সাড়ে ১০টার দিকে পানি আনতে বাসা থেকে নিচে নেমে আর বাসায় ফেরেননি রহিমা। সম্ভাব্য সব স্থানে খুঁজেও তার সন্ধান না পেয়ে বাড়ির লোকজন থানায় জিডি করেন।

পরে কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে রহিমার মেয়ে আদুরি আক্তার অপহরণের মামলা করেন। আদালত ১৪ সেপ্টেম্বর মামলাটি পিবিআইতে পাঠানোর আদেশ দেন।

এরপর ১৭ সেপ্টেম্বর নথিপত্র বুঝে নেয় পুলিশের ওই ইউনিট। রহিমা নিখোঁজের ঘটনায় তার স্বামী হেলাল হাওলাদারসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তারও করেছে পুলিশ।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০