সাইফুল আলম: পাট দিয়ে তৈরি ব্যাগের প্রচলন কমে যাওয়ায় বেড়ে চলেছে পলিথিনের ব্যবহার। ফলে হুমকির মুখে পড়ছে চট্টগ্রাম ও কলকাতা শহর দুটি। এ দুই শহরের ৭০ থেকে ৮০ ভাগ ব্যাগই পলিথিনের। প্লাস্টিক ব্যাগের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় কার্বন-ডাই-অক্সাইড ও কার্বন-মনোক্সাইট সৃষ্টি হয়ে পরিবেশ দূষণ হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত দশম আন্তর্জাতিক গবেষণা কনফারেন্সে চট্টগ্রামের ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটির (ইডিইউ) অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষিকা অনন্যা নন্দীর গবেষণায় উঠে এসেছে এমন তথ্য। তার সহযোগী হিসেবে ছিলেন কলকাতার ইআইআইএলএম ইনস্টিটিউটের আরও দুই গবেষক-শিক্ষিকা ড. শর্মিষ্ঠা দাস ও জয়ন্ত সাহা।
অনন্যা নন্দী বলেন, সম্প্রতি আমেরিকার গবেষণামূলক প্রতিষ্ঠান ‘কমন গ্রাউন্ড রিসার্চ নেটওয়ার্ক’ দুইদিনব্যাপী এ আন্তর্জাতিক কনফারেন্সের আয়োজন করে। এতে বাংলাদেশ ছাড়াও জাপান, কানাডা, রাশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, ভারত ও শ্রীলঙ্কাসহ অন্তত ২০টি দেশ অংশ নেয়।
অনন্যা ও তার দলের গবেষণার বিষয় ছিল ‘পরিবেশ দূষণ রোধে পলিথিনের কার্যকরী ব্যবস্থাপনা: মনোভাব, দায়বদ্ধতা ও সততা-কলকাতা ও চট্টগ্রামের তুলনামূলক বিশ্লেষণ’। গবেষণায় দেখানো হয়েছে, হোয়াইট পলিউশন বা প্লাস্টিক পলিথিনের ব্যাগ উৎপাদন, বিতরণ ও ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে দুই জায়গাতেই। গবেষণায় আরও বলা হয়, চট্টগ্রামে মানুষের মধ্যে সচেতনতা কম। তবে আশার কথা, ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়েই পরিবেশগতভাবে পলিথিনের নিরাপদ বিকল্প ব্যবহারে আগ্রহী। এমন একটি সমাধান বের করতে হবে যেন দূষণ নিয়ন্ত্রণে থাকে অন্যদিকে ক্রেতা-বিক্রেতার আর্থিক স্বার্থও রক্ষা পায় এমনই বলা হয়েছে তাদের গবেষণাপত্রে। এতে আরও বলা হয়েছে, কাগজ ও পাটের ব্যাগের দাম পলিথিনের চেয়ে বেশি হওয়ায় অনেকে কিনতে চান না। অথচ মাটির নানা স্তরে জমা হয়ে পলিথিন পানির প্রবাহে বাধার সৃষ্টি করে।
অনন্যা নন্দী বলেন, ‘চট্টগ্রামে পলিথিনের ব্যবহার বাড়ছে। কনফারেন্সে আমরা পলিথিনের ব্যবহার কমিয়ে টেকসই উন্নয়ন বাস্তবায়নের বিষয়ে জোরালো পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছি।’
বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, প্রতি মাসে বাংলাদেশে গড়ে ২৫ থেকে ৩০ কোটি পলিথিন ব্যাগ ব্যবহৃত হয়। চট্টগ্রাম শহরে প্রবল বর্ষণে নর্দমা ও ড্রেনে পানি জমে থাকার পেছনে পলিথিন অন্যতম কারণ বলে জানিয়েছেন পরিবেশ আন্দোলনকারীরা।
চট্টগ্রাম
Add Comment