দুই মাসে বাণিজ্য ঘাটতি ৪৫৫ কোটি ডলার

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশে রপ্তানি আয়ের তুলনায় আমদানি বেশি হওয়ায় চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই-আগস্ট) ৪৫৫ কোটি ডলার বাণিজ্য ঘাটতি হয়েছে। একই সঙ্গে চলতি হিসাব ও সামগ্রিক লেনদেনেও ঘাটতিতে পড়েছে বাংলাদেশ। গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক লেনদেনের চলতি ভারসাম্যের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, রপ্তানির তুলনায় আমদানি বেশি। বিশ্ববাজারে জ্বালানিসহ সব ধরনের পণ্যের মূল্য ঊর্ধ্বমুখী ও আশানুরূপ রেমিট্যান্স প্রবাহ না থাকায় বহির্বিশ্বের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতিতে পড়ছে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাস (জুলাই-আগস্ট)রপ্তানি হয়েছে ৮১৩ কোটি ডলার, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে বেড়েছে ২৩ দশমিক ৯১ শতাংশ। অন্যদিকে এ সময় আমদানি হয়েছে ১ হাজার ২৬৯  কোটি টাকা। গত বছরের একই সময় থেকে আমদানি বেড়েছে ১৬ দশমিক ৯৬ শতাংশ। ফলে বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৪৫৫ কোটি ডলার, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৬ দশমিক ৩০ শতাংশ। গত অর্থবছরের জুলাই-আগস্ট ঘাটতি ছিল ৪২৮ কোটি ডলার।

এর আগে গেল ২০২১-২২ অর্থবছরের (জুলাই-জুন) দেশে বাণিজ্য ঘাটতি ৩ হাজার ৩২৫ কোটি ডলার, যা ইতিহাসের সর্বোচ্চ। একই সময় বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্যের ঘাটতিও সাড়ে ১৮ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছিল। তার আগে ২০২০-২১ অর্থবছরের এ বাণিজ্য ঘাটতির অঙ্ক ছিল ২ হাজার ৩৭৭ কোটি ডলার।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, জুলাই-আগস্ট সময়ে সেবা খাতের বাণিজ্য ঘাটতিও বেড়েছে। এ সময় সেবা খাতে বাংলাদেশ আয় করেছে ১৫১ কোটি ডলার। অন্যদিকে সেবা খাতে দেশের ব্যয় হয়েছে ২১৯ কোটি ডলার। সেবা খাতের ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৬৮ কোটি ডলার। আগের অর্থবছরের একই সময়ে ঘাটতি ছিল ৪৫ লাখ ডলার।

চলতি হিসাবে ভারসাম্যেও (কারেন্ট অ্যাকাউন্ট ব্যালান্স) ঘাটতিতে পড়েছে দেশ। চলতি অর্থবছরে প্রথম দুই মাস (জুলাই-আগস্ট) এ ঘাটতির (ঋণাত্মক) অঙ্ক দাঁড়িয়েছে ১৫০ কোটি ডলার। আগের অর্থবছরে একই সময়ে ঘাটতি ছিল ১৪১ কোটি ডলার।

চলতি হিসাবে উদ্বৃত্ত থাকার অর্থ হলো নিয়মিত লেনদেনে দেশকে কোনো ঋণ করতে হচ্ছে না। আর ঘাটতি থাকলে সরকারকে ঋণ নিয়ে তা পূরণ করতে হয়। সেই হিসাবে উন্নয়নশীল দেশের চলতি হিসাবে উদ্বৃত্ত থাকা ভালো। কিন্তু দেশে কারেন্ট অ্যাকাউন্ট ব্যালান্স এখন ঋণাত্মক হয়েছে। এছাড়া চলতি বছরের জুলাই-আগস্ট সামগ্রিক লেনদেনে (ওভার অল ব্যালান্সেস) ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৩৬ কোটি ডলার, যা ২০২১-২২ অর্থবছরের একই সময়ে এ সূচকে ২২১ কোটি ডলারের উদ্বৃত্ত ছিল। আলোচ্য সময়ে ৭৮ কোটি ডলার বিনিযোগ করেছে বৈদেশিক উদ্যোক্তারা। গত অর্থবছরের একই সময়ে এর পরিমাণ ছিল ৬০ কোটি ডলার।

প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, নতুন অর্থবছরের প্রথম দুই মাস (জুলাই-আগস্ট) দেশে ৪১৩ কোটি ডলারের সমপরিমাণ রেমিট্যান্স দেশে এসেছে; যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ১২ দশমিক ২৫ শতাংশ বেশি।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০