নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রামে বিএনপির জনসমাবেশে উত্তাল জনস্রোত ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, বুধবার বন্দর নগরী চট্টগ্রামে বিএনপির উদ্যোগে জনসভা হবে। জনসভায় থাকবেন বিএনপির মহাসচিবসহ কেন্দ্রীয় নেতারা। জনসভা কেন্দ্র করে উৎসবের নগরীতে পরিণত হয়েছে চট্টগ্রাম। শুধু চট্টগ্রামের নেতাকর্মীরাই নয়, সাধারণ জনগণও প্রস্তুতি নিয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি।
রিজভী বলেন, চট্টগ্রাম যখন উৎসবমুখর তখনই ফ্যাসিবাদের অনুসারী আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পুলিশ, র?্যাব চেষ্টা করছে সমাবেশে যাতে লোক কম হয়। তারা চট্টগ্রাম মহানগর উত্তর-দক্ষিণ এবং বিভিন্ন জেলার নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়েও হুমকি দিচ্ছে, যাতে তারা সমাবেশে অংশগ্রহণ না করে। তাদের পরিবারের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করছে। কিন্তু আগেও জনগণের যে উত্তাল স্রোত, হুমকি দিয়ে, পুলিশ দিয়ে আটকাতে পারেনি। এবারও পারবে না। বাস মালিক, শ্রমিকদের বেশি করে যাত্রী নিতে নিষেধ করুক না কেন, সবকিছু উপেক্ষা করে জনসমাবেশে ব্যাপক হারে মানুষের উপস্থিতি হবে।
জনসভা জনস্বার্থের জনসভা উল্লেখ করে রিজভী বলেন, জনগণের দাবির জনসভায় কোনো বাধা দেবেন না। সেখানে যে ধরনের ঘটনার কথা
শুনছি এ রকম কোনো পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে তার সম্পূর্ণ দায় আপনাদের বহন করতে হবে।
জানমালের ক্ষতি হলে প্রতিহত করবে আওয়ামী লীগ: এদিকে চট্টগ্রামে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশের নামে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে জনগণের জানমালের ক্ষতি করলে তা প্রতিহত করা হবে বলে হুশিয়ারি দিয়েছেন চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগ নেতারা। গতকাল চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এমন ঘোষণা দেন নেতারা।
সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেন, রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করা সব দলের গণতান্ত্রিক অধিকার। তবে অতীত ইতিহাস পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, আন্দোলনের নামে মিছিল-মিটিং সমাবেশের নামে বিএনপি-জামায়াত দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করার অপপ্রয়াস চালিয়েছে। গাড়িতে পেট্রোল বোমা মেরে সাধারণ মানুষ হত্যা করেছে। পশুবাহী গাড়িতে আগুন দিয়ে নিরীহ পশু হত্যা করেছে। মানুষের ঘর-বাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে। মানুষের ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষতি সাধন করেছে। এবারও যদি তারা অতীত ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটায় তাহলে জনগণকে একাত্ম করে, জনগণের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ শক্তিতে বলীয়ান হয়ে তা প্রতিহত করা হবে।
দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন বলেন, সম্প্রতি বিএনপি কিছু কর্মসূচি দিয়েছে। ১২ তারিখে চট্টগ্রামে সমাবেশ করবে। আশা করি শান্তিপূর্ণ হবে। আমরা সেদিন পাল্টা কোনো কর্মসূচি রাখিনি। তবে বিগত দিনে দেখেছি তারা কর্মসূচির নামে অরাজকতা, আগুন সন্ত্রাস ও দেশবিরোধী কাজে অংশগ্রহণ করেছে। এ ধরনের কোনো ঘটনা হলে আমরা রুখে দাঁড়াব। এ কর্মসূচি যদি জনগণের বিপক্ষে যায় বা আইনশৃঙ্খলা ব্যাহত করলে তার সমুচিত জবাব দেয়ার জন্য আমরা প্রস্তুত আছি।
সংবাদ সম্মেলনে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, ‘বিএনপি যদি সমাবেশের আড়ালে অন্য কিছু বা নাশকতা করতে চায় তবে আমাদের নেতাকর্মীরা প্রস্তুত থাকবে। দাঁতভাঙা জবাব দেবে। নেতাকর্মীদের সতর্ক অবস্থানে থাকতে বলেছি।’
সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, উত্তর জেলা আওয়ামী সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নঈম উদ্দিন আহমদসহ চট্টগ্রাম উত্তর, দক্ষিণ ও মহানগর আওয়ামী লীগ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।