প্রতিনিধি, গাজীপুর: গাজীপুরে শোক মিছিলকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় জেলা বিএনপির সভাপতি ও সম্পাদকসহ ৫৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। এই মামলার ১৫ আসামিকে গ্রেপ্তার করে গতকাল মঙ্গলবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছেন পুলিশ।
সোমবার দিবাগত রাতে গাজীপুর সদর থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আল-আমিন বাদী হয়ে ৫৪ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন। এর আগে বিকালে গাজীপুর শহরের রাজবাড়ী সড়কে জেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে পুলিশ ও বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে চার পুলিশ সদস্যসহ ৩৫ জন আহত হয়েছেন।
গাজীপুর সদর থানা পুলিশের ওসি মো. জিয়াউল ইসলাম বলেন, সোমবার বিকালে সড়ক অবরোধ করে মিছিল করতে নিষেধ করলে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা পুলিশের ওপর চড়াও হন। একপর্যায়ে তারা বিক্ষিপ্তভাবে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে এবং লাঠিসোটা দিয়ে হামলা চালায়। এতে মহানগর পুলিশের এসআই উৎপল, কনস্টেবল কামরুল ইসলাম, মনির হোসেন ও মো. সাব্বির হোসেন আহত হন। পরে পরিস্থিতি নিযন্ত্রণ করতে মৃদু লাঠিচার্জ, কয়েক রাউন্ড টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট ছোড়া হয়।
তিনি আরও জানান, পুলিশি কাজে বাধা ও হামলার অভিযোগে গাজীপুর সদর থানার উপ-পরিদর্শক আল আমিন বাদী হয়ে জেলা বিএনপির সভাপতি এ কে এম ফজুলল হক মিলন, সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল হান্নান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাজী সাইয়েদুল ইসলাম বাবুলসহ ৫৪ জন বিএনপি নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত অনেককে আসামি করে মামলা করেন। এ পর্যন্ত পুলিশ অভিযান চালিয়ে ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের মঙ্গলবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান অব্যাহত আছে। সংঘর্ষে আহত হন পুলিশের সদস্যদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
গাজীপুর জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী সাইয়েদুল আলম বাবুল বলেন, সোমবার বিকালে পূর্বঘোষিত শোকসভা শেষে শান্তিপূর্ণ শোক মিছিল বের করেন নেতাকর্মীরা। মিছিলটি ভাওয়াল রাজবাড়ী সড়ক প্রদক্ষিণ করার সময় বাধা দেয় পুলিশ। একপর্যায়ে সেখানে বিক্ষোভ করেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। এ সময় আমাদের নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ এলোপাতাড়ি রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে। এতে আমাদের প্রায় ৩৫ জন নেতাকর্মী আহত হন। আহত নেতাকর্মীদের মধ্যে রয়েছেন কালীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সদস্য জাকির হোসেন, কালিয়াকৈর উপজেলা যুবদল নেতা শাহ প্রমুখ। তাদের উদ্ধার করে গাজীপুরের বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে।