সাইফুল আলম, চট্টগ্রাম: নৌপথে জ্বালানি তেল পরিবহনে পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা অয়েলের মালিকানাধীন কোস্টাল, বে ক্রসিং, শ্যালো প্রভৃতি অয়েল ট্যাংকার রয়েছে ১৬৪টি। এর মধ্যে সিঙ্গেল হাল সিঙ্গেল বটম ৭৩টি, ডাবল হাল ডাবল বটম রয়েছে ৬৩ এবং সিঙ্গেল হাল ডাবল বটম রয়েছে ২৮টি অয়েল ট্যানজার রয়েছে। নৌ-দুর্ঘটনায় তেল যাতে নদীতে না পড়ে সেই জন্য সাড়ে পাঁচ বছর আগে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা দেয় আগামী জানুয়ারি থেকে জ্বালানি তেল পরিবহন ট্যাংকারগুলো যেন সিঙ্গেল হাল সিঙ্গেল বটম জাহাজগুলো ডাবল হাল ডাবল বটমে রয়েছে অথবা সিঙ্গেল হাল ডাবল বটমে রূপান্তরিত করার। কিন্তু তিন তেল বিপণন সংস্থার অবহেলায় তেল পরিবহন বহর থেকে ৭৩টি ট্যাংকার বাদ পড়বে। আর ৯১টি ট্যাংকার দিয়ে চাহিদার ৫০ শতাংশ তেল পরিবহন করা যাবে না। এতে উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলায় তেল সংকটের আশঙ্কা করছে বিপিসি।
বিপিসি সূত্রে জানা যায়, দেশের জ্বালানি তেলের চাহিদা পূরণে বিপিসি বছরের প্রায় ৭০ লাখ মেট্রিক টন জ্বালানি বিদেশ থেকে আমদানির মাধ্যমে সরবরাহ করে। এসব জ্বালানি তেল বিপিসি সহযোগী কোম্পানির মাধ্যমে দেশব্যাপী বিপণন করে। কিন্তু নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের ৬ এপ্রিল ২০১৭ সালে পরিপত্র অনুসারে চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ফার্নেস অয়েল এবং রিফাইন্ড জ্বালানি পরিবাহীতে সিঙ্গেল হাল সিঙ্গেল বটম জাহাজগুলো ডাবল হাল ডাবল বটমে রয়েছে অথবা সিঙ্গেল হাল ডাবল বটমে রূপান্তরিত হতে পারবে না। এসব জলযানে জ্বালানি তেল পরিবহন করতে পারবে না। এ নির্দেশনা কার্যকর হলে ৭৩টি ট্যাংকার তেল পরিবহন থেকে বাদ পড়বে। ফলে বিপিসির ভাসমান তেল মজুত ক্ষমতার প্রায় ৫৮ হাজার ৪০০ মেট্রিক টন পরিবহন কমবে। অবশিষ্ট ৯১টি ট্যাংকার দিয়ে চাহিদার ৫০ শতাংশ তেল পরিবহন করা যাবে না।
বিসিপির কয়েকজন কর্মকর্তা বলেন, সড়কপথে তেল পাঠাতে হলে প্রায় ৫০০ লরি দরকার হবে। এতে সড়কের ওপর চাপ বাড়বে। যানজটসহ অনেক সময়ের অপচয় হবে। সময়মতো তেল না পেলে কৃষকের ভোগান্তি বাড়বে। জেলেরা মাছ ধরতে পারবে না। সবমিলিয়ে তেল সংকট সৃষ্টি হবে।
একজন কর্মকর্তা বলেন, পাঁচ বছর সময়ে পেয়েও পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা অয়েল কোম্পানি তেল পরিবহনে সিঙ্গেল হাল সিঙ্গেল বটম জাহাজগুলো ডাবল হাল ডাবল বটম অথবা সিঙ্গেল হাল ডাবল বটমে রূপান্তরিত করতে পারেনি। অথচ তিন তেল বিপণন কোম্পানির হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যাংকে অলস পড়ে আছে। তারা কি শুধু মুনাফা করে যাবে? তাদের এ খাতে বিনিয়োগ করা উচিত।
এ বিষয়ে মেঘনা পেট্রোলিয়ামের এমডি মো. মাসুদুর রহমান শেয়ার বিজকে বলেন, আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত আমাদের জাহাজগুলো পরিচালনা করি। এরপর আমরা পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত নেব। তবে বাঘাবাড়ি অঞ্চলে সিঙ্গেল হাল সিঙ্গেল বটম জাহাজগুলোতে ৮০০ মেট্রিক টন তেল পরিবহন করা যায়। অপরদিকে ডাবল হাল ডাবল বটমের জাহাজে মাত্র ৩০০ টন তেল পরিবহন করা যাবে। ফলে তেল পরিবহনে অতিরিক্ত জাহাজের দরকার হবে। আমাদের এ বিষয়ে বিশেষ পরিকল্পনা আছে।
এ বিষয়ে জানতে বিপিসি চেয়ারম্যান এ বি এম আজাদের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি রিসিভ করেননি।