নিজস্ব প্রতিবেদক: আগামী ৬ নভেম্বর সারাদেশে একযোগে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু হবে এবং ১৩ ডিসেম্বর এই পরীক্ষা শেষ হবে। বুধবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভা শেষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, এবার সারাদেশে ৯টি শিক্ষাবোর্ডের অধীনে ১২ লাখ তিন হাজার ৪০৭ পরীক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে ছয় লাখ ২২ হাজার ৭৯৬ ছাত্র এবং পাঁচ লাখ ৮০ হাজার ৬১১ ছাত্রী। দুই হাজার ৬৪৯টি পরীক্ষা কেন্দ্রে দেশের বিভিন্ন স্থানের ৯ হাজার ১৮১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এ পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় ২০২২ সালের সংশোধিত ও পুনর্বিন্যাসকৃত সিলেবাসে দুটি আবশ্যিক, তিনটি নৈর্বাচনিক বিষয়ে এবং চতুর্থ বিষয়ে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এ বছর পরীক্ষার নম্বর ও সময় কমিয়ে আনা হয়েছে। এছাড়া পরীক্ষা শেষে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ফলাফল প্রকাশিত হবে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, মাদরাসা বোর্ড ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের (এইচএসসি/আলিম/এইচএসসি (বিএম/বিএমটি)/ এইচএসসি ভোকেশনাল) /ডিপ্লোমা-ইন-কমার্স পরীক্ষা) পরীক্ষা ৬ নভেম্বর শুরু হয়ে ১৩ ডিসেম্বর শেষ হবে। ব্যবহারিক পরীক্ষা ১৫ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার শুরু হয়ে ২২ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার শেষ হবে। পুনর্বিন্যাস করা পাঠ্যসূচি অনুযায়ী চলতি বছরের এইচএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এবার এইচএসসিতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি পরীক্ষা না নিয়ে সেক্ষেত্রে সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে নম্বর দেয়া হবে।
এতে আরও জানানো হয়, দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী, সেরিব্রাল পালসিজনিত প্রতিবন্ধী এবং যাদের হাত নেই, এমন প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থী স্ক্রাইব (শ্রুতি লেখক) সঙ্গে নিয়ে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে। এ ধরনের পরীক্ষার্থীদের এবং শ্রবণ প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীদের জন্য অতিরিক্ত ২০ মিনিট সময় বাড়ানো হয়েছে।
তিনি বলেন, বিজ্ঞান বিভাগের পরীক্ষার্থীদের এমসিকিউ ২৫টির মধ্যে ১৫টির উত্তর দিতে হবে, সময় ২০ মিনিট। তত্ত্বীয় পরীক্ষায় আটটি প্রশ্নের মধ্যে তিনটির উত্তর দিতে হবে, সময় এক ঘণ্টা ৪০ মিনিট।
মানবিক ও ব্যবসায় শাখা পরীক্ষার্থীদের এমসিকিউ ৩০টির মধ্যে ১৫টির উত্তর দিতে হবে, সময় ২০ মিনিট। তত্ত্বীয় পরীক্ষায় ১১টি প্রশ্নের মধ্যে চারটির উত্তর দিতে হবে, সময় এক ঘণ্টা ৪০ মিনিট।
প্রতিবছর এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহে এ পরীক্ষা শুরু হয়ে থাকলেও বৈশ্বিক মহামারি কভিড-১৯ এবং বন্যা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে এ বছরে যথাসময়ে এ পরীক্ষা গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি।
তবে ২০২৩ সালের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা সব বিষয়ে পূর্ণ নম্বরে পুনর্বিন্যাস করা সিলেবাসে অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, করোনার কারণে সব বিষয়ে ও পূর্ণ নম্বরে পরীক্ষা নেয়া সম্ভব হয়নি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে আগামী ২০২৩ সাল থেকে সব বিষয়ে পূর্ণ নম্বরে পুনর্বিন্যাস করা সিলেবাসে অনুষ্ঠিত হবে। তিনি জানান, শিক্ষা বোর্ড সিলেবাস পুনর্বিন্যাস করেছে। সেই সিলেবাসে পূর্ণ নম্বরে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
এর আগে, ১৮ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর তপন কুমার সরকার স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আগামী ২০২৩ সালের এসএসসি ও সমমান এবং এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা সব বিষয়ে অনুষ্ঠিত হবে। এতে বলা হয়, ২০২৩ সালের এসএসসি ও সমমান এবং এইচএসসি ও সমসান পরীক্ষা জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) প্রণীত ২০২৩ সালের পুনর্বিন্যাসকৃত পাঠ্যসূচি অনুযায়ী অনুষ্ঠিত হবে।