প্রতিনিধি, নোয়াখালী : ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের মধ্যে জন্ম নেয়া জান্নাতুল ফেরদৌস সিত্রাংয়ের বাড়িতে গেলেন নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক (ডিসি) দেওয়ান মাহবুবুর রহমান। এ সময় তিনি খাদ্য ও নগদ অর্থ পরিবারের হাতে তুলে দেন। পাশাপাশি সে যতদিন বেঁচে থাকবে তার খোঁজখবর নেবেন বলেও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। গতকাল সকালে হাতিয়ার হরণী ইউনিয়নের চতলারখাল এলাকায় শিশুর বাড়িতে পৌঁছান তিনি। ডিসিকে পাশে পেয়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়ে জান্নাতুল ফেরদৌসের পরিবার ও আশপাশের মানুষ।
জান্নাতুল ফেরদৌস সিত্রাংয়ের মা ফারজানা আক্তার বলেন, জেলা প্রশাসক স্যার আমাদের বাড়িতে আসবেন তা স্বপ্নেও ভাবিনি। আমার মেয়ের পাশে দাঁড়িয়েছেন। নগদ টাকা ও খাদ্য দিয়েছেন। আমরা সবাই স্যারের কাছে কৃতজ্ঞ।
সিত্রাংয়ের দাদি নুর জাহান বলেন, ডিসি স্যার এ গরিবের বাড়িতে পা দিয়েছেন। আমরা এতেই খুশি। আমাদের খাবার দিয়েছেন এবং নগদ টাকা দিয়েছেন। এছাড়া ইউএনও স্যারসহ চেয়ারম্যান ছিলেন। সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার ভাষা আমাদের নেই।
হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সেলিম হোসেন বলেন, একজন সংগ্রামী মা ফারজানা আক্তার। তিনি যে কঠিন দুর্যোগের সময়ে সাহসী ভূমিকা রেখেছেন তা অকল্পনীয়। সেই জন্য জেলা প্রশাসকসহ আমরা এ কন্যাসন্তানকে দেখতে এসেছি।
জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বলেন, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে যখন জোয়ারে ঘর ডুবে যায়। এ সংগ্রামী নারী তখন চৌকিতে আশ্রয় নেয়। সে সময় নেটওয়ার্কসহ সব যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল। তার স্বামীও এলাকায় নেই। ঘরে কোনো পুরুষ চৌকিতেই সাধারণভাবে ধাত্রীর সহযোগিতায় কন্যাশিশু প্রসব করেন। ঘূর্ণিঝড়ের নাম অনুযায়ী শিশুটির নাম করণ করেন সিত্রাং।
তিনি আরও বলেন, সিত্রাংয়ের দায়িত্ব আমি নিলাম। তার জন্য আমি নতুন জামা মিষ্টিসহ উপহার এনেছি। এছাড়া নগদ টাকা তার মায়ের হাতে তুলে দিয়েছি। ইউএনও ও স্থানীয় চেয়ারম্যানকে দায়িত্ব দিয়েছি। যেকোনো সমস্যা হলে আমাকে জানাতে বলেছি। মুজিববর্ষের ঘর দেয়া হবে উল্লেখ করে দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বলেন, যেহেতু পরিবারটি বেড়িবাঁধের কাছে থাকে। নদীগর্ভে তাদের ভিটে চলে গেছে। তাই তাদের মুজিববর্ষের ঘর উপহার দেবো।
প্রসঙ্গত, গত রোববার নোয়াখালীতে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত চলাকালে নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার হরণী ইউনিয়নের বয়ারচর এলাকার মো. শরিফ উদ্দিনের স্ত্রী ফারজানা আক্তার কন্যাশিশু প্রসব করেন। পরক্ষণেই শিশুটির নাম রাখা হয় জান্নাতুল ফেরদৌস সিত্রাং।