নবীনদের পদচারণায় মুখরিত মতিহারের সবুজ চত্বর

প্রতিনিধি, রাবি : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) এসেছে নবীন শিক্ষার্থীরা। ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথমবর্ষের শিক্ষার্থীদের নবীন বরণ আজ। তাদের পদচারণায় মুখরিত মতিহারের সবুজ গালিচা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন জায়গায় মঙ্গলবার (১ নভেম্বর) সকাল থেকেই রঙিন বেশে নবীনদের আনাগোনা ছিল চোখে পড়ার মতো। সকাল ১০ টায় বিভিন্ন অনুষদ ও বিভাগের সামনে তাদের সঙ্গে অভিভাবকদেরও দেখা যায়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নবীনদের সংখ্যাও বাড়তে থাকে।

বুকভরা আশা আর হাজারো স্বপ্ন নিয়ে আসা এই নবীন শিক্ষার্থীদের বরণ করে নিতে প্রতিদিনের চেয়ে একটু অন্যরকম সাজ-গোজ করে এসেছিলো প্রবীণরাও। এ যেন অন্য রকম এক উৎসব!

ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা যায়, নতুনদের আগমনে নতুন রুপ ধারণ করেছে মতিহার চত্ত্বর। শহীদ মিনার, টুকিটাকি চত্ত্বর, আম চত্ত্বর, পরিবহণ মার্কেট, ইবলিশ চত্ত্বরসহ বিভিন্ন জায়গায় নতুন-পুরোনো শিক্ষার্থীদের জম্পেশ আড্ডা ছিলো লক্ষণীয়। তবে পুরাতনদের ছাপিয়ে ক্যাম্পাসে নতুনদের আগমন ছিলো চোখে পড়ার মতো।

মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবার থেকে উঠে আসা বেশিরভাগ শিক্ষার্থী নিজের সঙ্গে পরিবারের ভাগ্য বদলের স্বপ্ন নিয়ে এসেছেন দেবদারু ঘেরা মতিহার চত্ত্বরে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার চত্ত্বরে বন্ধুদের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার সময় এমনটাই জানাচ্ছিলেন পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের নবাগত শিক্ষার্থী আফজাল হোসেন আকাশ।

কৃষক বাবার বড় সন্তান লালমনিরহাটের হাতিবান্ধা থেকে আসা মারুফ হোসেন বলেন, ‘জীবনে কখনও বাড়ির বাইরে থেকে পড়াশোনা করি নি। এই প্রথম বাবা-মাকে ছেড়ে এসেছি। খুব কষ্ট হচ্ছিল এখনে আসার দিন। তবে এত সুন্দর ক্যাম্পাস দেখে সব কষ্ট উধাও হয়ে গেছে।’

তিনি বলেন, ‘আমার বাবা কৃষক। নিজস্ব জমি-জমাও তেমন নেই। অনেক কষ্টে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত এসেছি। বাবার কষ্টের মূল্য দিতে চাই। ভালো করে পড়াশোনা করে একজন আদর্শ শিক্ষক হতে চাই।’

বরণ অনুষ্ঠান শেষে সবাই যখন একাডেমিক ভবন থেকে বেরিয়ে আসে তখনই আনন্দের মাত্রা আরও বেড়ে যায়। সবার হাতে হাতে ফুল, একে অপরের সঙ্গে পরিচিত হচ্ছেন, চোখে-মুখে নতুন উদ্যোম। অনেকে আবার বসে পড়েছে আনন্দ আড্ডায়। প্রবীণদের কেউ কেউ আবার গান ধরেছে মনের আনন্দে। ক্যাম্পাসের পুরোটা সময়েই চলেছে এক আনন্দঘন পরিবেশে।

মনোবিজ্ঞান বিভাগের নবীন শিক্ষার্থী আল সামিন ইয়াসির বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম দিন আমার জন্য একটি বহু প্রতিক্ষীত দিন। বরাবরই রাবি ক্যাম্পাস আমার কাছে স্বপ্নের মতো। ক্যাম্পাসে এসে র‌্যাগিং নিয়ে একটু ভয়ে ছিলাম। তবে এসবের কোনো কিছু দেখিনি। পেয়েছি বড়দের উষ্ণ অর্ভ্যথনা। শিক্ষকরা অত্যন্ত বন্ধুত্ব পরায়ণ।

র‌্যাগিংমুক্ত, সৌহার্দ ও সম্প্রীতি পরিবেশে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হবে এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড.আসাবুল হক। তিনি বলেন, নবীন শিক্ষার্থীদের স্মৃতির পাতায় অন্যন্য স্থান করে নেবে আজকের এই দিনটি। তাদের পাশে সবসময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টদের প্রত্যাশা সকল সমস্যা কাটিয়ে উচ্ছ্বাসে দিন কাটবে এই নবীনদের।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০