ফরিদপুরে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ আজ

প্রতিনিধি, ফরিদপুর : ফরিদপুরে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশের জন্য সম্পূর্ন প্রস্তুত কোমরপুর আব্দুল আজিজ ইনষ্টিটিউশন মাঠ। ইতোমধ্যেই বিশাল আকারে মঞ্চ তৈরীর কাজ সম্পন্ন হয়েছে। সমাবেশস্থল মাঠসহ ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের গোয়ালন্দ মোড় থেকে ভাঙা রাস্তার মোড়সহ প্রায় ১০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে সড়কে শোভা পাচ্ছে বিএনপি নেতাদের ছবি সম্বলিত ব্যানার, ফেস্টুন আর প্লাকার্ড। কেন্দ্রীয় নেতাদের শুভেচ্ছা জানিয়ে বেশ কয়েকটি স্থানে স্থাপন করা হয়েছে তোরন। মাঠ ও মাঠের বাইরে লাগানো হয়েছে শতাধিক মাইক। আলোকসজ্জ্বা করা হয়েছে মাঠজুড়ে।

বিএনপির এ সমাবেশকে ঘিরে গত কয়েকদিন ধরে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতা-কর্মীদের মাঝে উত্তপ্ত অবস্থা বিরাজ করলেও বড় ধরনের কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি অদ্যবদি। বিভিন্ন স্থানের সমাবেশের আগে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেবার ঘটনায় বিএনপির নেতা-কর্মীরা আগেই প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলেন। তারা সমাবেশের তিনদিন আগে থেকেই ফরিদপুরে আসতে থাকেন। বুধবার রাত থেকেই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বিএনপির নেতা-কর্মীরা বাস-ট্রাকে করে আসতে থাকে। বৃহত্তর ফরিদপুর জেলায় দুইদিনের পরিবহন ধর্মঘট চলায় শুক্রবার সকাল থেকে বিএনপির নেতা-কর্মীরা ইজিবাইক, মোটর সাইকেল, বাই সাইকেলযোগে এবং অনেককেই পায়ে হেঁটে সমাবেশে আসতে দেখা গেছে।

বিভিন্ন স্থান থেকে আসা বিএনপির নেতা-কর্মীরা অভিযোগ করে বলেন, পথে পথে তাদের বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে। পুলিশ যানবাহন আটকে দিয়েছে। অনেকে একসাথে থাকলে তাদের ফরিদপুরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কর্মীরা বিভিন্ন স্থানে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বাধা দিয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন নেতাকর্মীরা।

শুক্রবার দুপুরের পর থেকে রাজবাড়ী, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, পাবনাসহ বিভিন্ন এলাকার নেতা-কর্মীরা ট্রেনে চড়ে সমাবেশ স্থলে আসেন। এ রিপোর্ট লেখার আগ পর্যন্ত সমাবেশস্থলে লোকে লোকারন্য হয়ে পড়ে।

আজকের সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকবেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি শুক্রবার সন্ধায় ফরিদপুরে পৌছেন। প্রধান বক্তা হিসেবে থাকবেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। এছাড়া বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত থাকবেন।

গন-সমাবেশের সমন্বয়ক ও কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস প্রেসিডেন্ট ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, সরকারের পায়ের তলায় মাটি নেই। তারা দমন পীড়ন করে ক্ষমতা আকড়ে ধরে রাখতে চায়। কিন্তু বাংলার মানুষ জেগে উঠেছে। তারা আর কোন সুযোগ দেবেনা এই সরকারকে। অবিলম্বে এ সরকারকে পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে বাধ্য করা হবে।

ফরিদপুর বিভাগীয় গন-সমাবেশের প্রধান সমন্বয়ক ও ফরিদপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ ইসলাম রিংকু বলেন, গন-সমাবেশের জন্য আমরা ফরিদপুর শহরে অবস্থিত রাজেন্দ্র কলেজ মাঠসহ চারটি স্থান চেয়েছিলাম। কিন্তু প্রশাসন শহর থেকে ৬ কিলোমিটার দুরে কোমরপুর স্কুলে মাঠে সমাবেশের অনুমতি দেয়। আমরা তাও মেনে নিয়েছি। কিন্তু প্রশাসন এবং সরকারী দলের নেতারা সমাবেশ বানচাল করতে এখনো সোচ্চার ভূমিকা পালন করছে। সরকারের ইন্ধনে সকল প্রকার যানবাহন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ চেকপোষ্ট বসিয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীদের হয়রানী করছে। একসাথে বেশী সংখ্যক লোক দেখলেই তারা ফরিদপুরে ঢুকতে দিচ্ছেনা। তারপরও সমাবেশে হাজার হাজার মানুষ এসে উপস্থিত হচ্ছে।

জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ন সম্পাদক চৌধুরী নায়াব ইউসুফ জানান, সমাবেশে আসার পথে বিএনপির নেতা-কর্মীদের পথে পথে বাধার সৃষ্টি করা হয়েছে। গনপরিবহন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সমাবেশে যাতে লোকজন আসতে না পারে সেজন্য সব ধরনের কৌশলই প্রয়োগ করছে স্থানীয় প্রশাসন। তিনি বলেন, কোন ধরনের কৌশল খাটিয়ে বিএনপির সমাবেশ বানচাল করা যাবেনা।

বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ও কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল বলেন, সরকারের সময় শেষ হয়ে এসেছে। এ জালিম সরকারকে আর মানুষ ক্ষমতায় দেখতে চায়না। আগামী ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশের মধ্যদিয়ে এ সরকারকে লালকার্ড দেখাবে জনগন।

এদিকে, বিএনপির গন-সমাবেশকে কেন্দ্র করে ফরিদপুরসহ বৃহত্তর ফরিদপুরের ৫টি জেলায় পরিবহন ধর্মঘট শুরু হয়েছে। ফলে চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েছে সাধারণ মানুষ।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০