বাঁশের সাঁকোতে পারাপার দুই উপজেলার মানুষের

অলিউর রহমান মেরাজ, নবাবগঞ্জ (দিনাজপুর) : দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ ও রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র সেতুটির নির্মাণকাজ চার বছরেও শেষ হয়নি। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন দুই উপজেলার মানুষ। করতোয়া নদীর জয়ন্তীপুর ঘাটে সেতুটির নির্মাণকাজ অসম্পূর্ণ থাকায় ভোগান্তি কমাতে নিজেরাই চাঁদা তুলে বাঁশের সাঁকো বানিয়ে পারাপার করছে তারা। তবে কর্তৃপক্ষ বলেছে, অল্প দিনের মধ্যেই নির্মাণকাজ শেষ হলেই আলোর মুখ দেখবে সেতুটি। বর্তমানে আবার কাজ শুরু করেছে নির্মাণাধীন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

করোনার কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর আবার পুরোদমে নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার করতোয়া নদীতে জয়ন্তীপুর ঘাটে নির্মাণাধীন সেতু। সেতুটি নির্মিত হলে রংপুরসহ নবাবগঞ্জ হয়ে দিনাজপুর ও হিলি স্থলবন্দরসহ জয়পুরহাটে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন হবে। দেশে করোনা দেখা দেয়ায় যথাসময়ে সেতুটি নির্মাণ করে জনসাধারণের ব্যবহার সম্ভব হয়নি। তবে আবার কাজ শুরু হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন পীরগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মো. নুরুল ইসলাম।

রংপুরের পীরগঞ্জে জয়ন্তীপুর ঘাটে প্রধানমন্ত্রীর ২০১৩ সালের প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন কাজ ২০১৯ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি পীরগঞ্জ আসনের সংসদ সদস্য স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সেতুটি নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

রংপুর জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার প্রত্যন্ত পল্লি টুকুরিয়া ইউনিয়নের গোপিনাথপুর সড়কের জয়ন্তীপুর ঘাটে করতোয়া নদীর ওপর সেতু নির্মাণ চলছে। পল্লি সড়কে গুরুত্বপূর্ণ সেতু নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় এ সেতুটি নির্মাণ করা হচ্ছে।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এলজিইডি বাস্তবায়নকারী সংস্থা হিসেবে এ কাজের তদারকি করছে। এতে ৩০ কোটি ৩১ লাখ ১৪ হাজার ৭৭০ টাকা চুক্তিমূল্যে ২৯ কোটি ৪৮ লাখ ৯৪ হাজার ২০৩ প্রাক্কলিক মূল্য ধরা হয়েছে। চলতি বছর প্রকৌশল প্রযুক্তি লিমিটেড (পিপিএল) কাশেম কনস্ট্রাকশন (কিউসি) জয়েন্ট ভেঞ্চার (জেভি) ৫২ সাত্তার ম্যানশন পঞ্চহালি, চট্টগ্রাম ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন।

উপজেলা প্রকৌশলী মজিবর রহমান জানান, জয়ন্তীপুর ঘাট-গোপিনাথপুর সড়কে ১৫০০ মিটার চেইনেজে জয়ন্তীপুর ঘাটে করতোয়া নদীর ওপরে ২৯৪ মিটার দৈর্ঘ্য ৯.৮ মিটার প্রস্থে ফুটপাতসহ এ সেতুর নির্মাণকাজ চলছে। এতে ৮০টি পাইল, ৭টি স্প্যান, ৬টি পিলার ও ২টি এবাটমেন্ট রয়েছে। এছাড়া রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলা সীমানায় ৩৮৭ মিটার ও দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলা সীমানায় ৪৫০ মিটার সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হবে। দ্রুত সেতুটি নির্মাণে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ করে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে ৫৮টি পাইল, ৩টি পিলারের বেজ ঢালাই সম্পন্ন হয়েছে।

টুকুরিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মন্ডল জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর তরফমৌজা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠের জনসভায় জয়ন্তীপুর ঘাটে ব্রিজ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন। এ সেতু নির্মাণের ফলে দিনাজপুরের দাউদপুর, নবাবগঞ্জ, বিরামপুর ও রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার জনসাধারণের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণসহ দুর্ভোগ-ভোগান্তি থেকে মুক্তি পাবে। পাশাপাশি যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নতি ঘটবে। এলাকার কৃষকদের কৃষিজাতপণ্য সহজে পরিবহনের ফলে নিকটতম হাটবাজারে বিক্রিতে ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত হবে।

নবাবগঞ্জ উপজেলার মজিদনগর কারিগরি স্কুলের সুপার মো. মিজানুর রহমান জানান, এ সেতু নির্মাণ হলে ওই পীরগঞ্জ-নবাবগঞ্জের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে আত্মীয়তা ও ব্যবসায়িক কাজের পরিপূরক হিসেবে ঘাট পারাপারে কষ্ট লাঘব হবে এবং দুই উপজেলার যোগাযোগ উন্নয়ন হবে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০