শেয়ার বিজ ডেস্ক : ‘ফিফা বিশ্বকাপ কাতার ২০২২’ কাতারের অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধি বাড়াবে। বৈশ্বিক এ মহারণ আয়োজনের কারণে এবং দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলায় দেশটি বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে ইতিবাচক সাড়া পাবে। খবর: দ্য পেনিনসুলা কাতার।
কাতার গর্বের সঙ্গে গত রোববার বিশ্বকাপের উদ্বোধন করে। এ জমকালো উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সারাবিশ্বের অতিথিরা যোগ দেন এবং অংশ নেয়া দলগুলোকে স্বাগত জানানো হয়। কাতারের গণমাধ্যম দ্য পেনিনসুলাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে উদ্যোক্তা ও সমাজসেবক এবং এশিয়া ও কাতারের ওয়াকিং ফুটবল ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট ফারহান আল শেইখ আল সায়েদ বলেন, ফিফা বিশ্বকাপ কাতারের অর্থনীতি চাঙা করবে এবং টুর্নামেন্টের আগে ও পরে দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ফিফা বিশ্বকাপ ২০২২-এর এ অনুষ্ঠান বিশ্বকে কাতার সম্পর্কে ইতিবাচক বার্তা দিয়েছে, যদিও আমাদের দেশটি ছোট, তবে আমরা ভীষণ শক্তিশালী ও দূরদর্শী। খেলাধুলা আমাদের জনগণ ও নেতাদের হƒদয়ে রয়েছে। এতে প্রমাণিত হয়, আমরা শুধু ফুটবল খেলায় নয়, সব খেলায়ই নেতৃত্ব দিচ্ছি এবং এই ক্রীড়াপ্রেমী নেতৃত্ব কাতারকে বিশ্বকাপ আয়োজনের সুযোগ করে দিয়েছে।
তিনি যোগ করেন, শুধু কাতারি নয়, প্রবাসী সম্প্রদায়, সমগ্র আরব ও এশিয়া এ অর্জনের জন্য গর্বিত। এজন্য আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি তার বাবাকে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন, কারণ তিনিই কাতারি, আরব ও এশিয়াকে এমন উপহার দিয়েছেন।
সায়েদ আরও বলেন, আয়োজন নিয়ে যাদের মধ্যে নেতিবাচক ধারণা ছিল, তারা কাতারে এসে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করেছেন। কারণ বিশ্বকাপ ভক্তরা আমাদের আতিথেয়তা, পরিবেশ এবং সর্বোচ্চ অবকাঠামো দেখে মুগ্ধ হয়েছেন। বিমানবন্দর থেকে শুরু করে হোটেল এবং অন্যান্য
অবকাঠামো, যা গত বছরে কঠোর পরিশ্রমের ফলে নির্মিত হয়েছে, তা আগত ভক্তরা উপভোগ করছেন।
কাতারের জনগণও আন্তর্জাতিক ফুটবল সম্প্রদায় ও দোহায় আগত ভক্তদের সান্নিধ্যে উপকৃত হচ্ছেন। কাতারি ও প্রবাসীদের কাছেও এ বিশ্বকাপ উপভোগ সৌভাগ্যের বলে জানান সায়েদ।
বিশ্বকাপের ফলে কাতারের পর্যটন খাত ঘুরে দাঁড়িয়েছে। এর আগে বিশ্বকাপের আয়োজক দেশগুলোয় পর্যটনের প্রভাব সম্পর্কে এক গবেষণার ফল উদ্ধৃত করে আল সায়েদ জানিয়েছেন, সচরাচর বিশ্বকাপের আয়োজক সব দেশের পর্যটন খাতে প্রবৃদ্ধি বাড়ে। আমরা এর ব্যতিক্রম নই। কাতারে যেসব দর্শক বা ভক্ত আসতে পারেননি, তাদের আমাদের দেশ নিয়ে তাদের কৌতূহল বাড়বে, তারা দেশটি দেখতে আগ্রহী হবেন এবং অনেকে এখানে বিনিয়োগ করতে চাইবেন। এমনটি দেখা গেছে ব্রাজিল ও রাশিয়ায় অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপের পরেও। এ সময় তিনি কাতারকে বিশ্বের ক্রীড়া রাজধানী হিসেবে আখ্যা দেন।
বিশ্বকাপ ফুটবল আয়োজন সামনে রেখে কাতারে উৎপাদনমুখী কার্যক্রম বেড়েছে। চলতি বছরের মে মাসে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর শেখ বন্দর বিন মোহাম্মদ বিন সৌদ আল থানি জানিয়েছিলেন, দেশের মোট দেশজ উৎপাদনের প্রবৃদ্ধি (জিডিপি) হবে ৩ দশমিক ৫ শতাংশ। বিশ্বকাপ ঘিরে দেশটিতে বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে। নানা খাতে গতিশীলতা দেখা গেছে। এ আয়োজন সফল হলে অবকাশ খাতসহ বিভিন্ন খাতে চাঙা প্রবৃদ্ধি অর্জন করবে দেশটি।
এরই মধ্যে বিশ্ব ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা এক পূর্বাভাসে জানিয়েছে, কাতার বিশ্বকাপ ঘিরে ৬৪০ কোটি ডলার আয় হবে ফিফার। এডিডাস, এজি ও কোকাকোলার মতো আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান কাতারে বিনিয়োগ করেছে। এ আয়োজনের মধ্য দিয়ে কাতারের আয় হবে দুই হাজার ২০০ কোটি ডলারের বেশি।