প্রতিনিধি, রাজশাহী : আট শর্ত মেনে রাজশাহীতে বিএনপি’র গণসমাবেশ হচ্ছে ৩ ডিসেম্বর। ঠিক এ সময়ে রাজশাহী বিভাগে অনির্দিষ্টকালের জন্য পরিবহন ধর্মঘট শুরু হয়েছে। বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় সমাবেশের আগে নিজেদের ১১ দফা দাবি আদায়ে গত বৃহস্পতিবার সকাল থেকে এ ধর্মঘট শুরু করেছে পরিবহন মালিক সমিতি। ফলে সব জেলার সঙ্গেই রাজশাহীর বাসযোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। পরেরদিন শুক্রবার থেকে মোটরসাইকেল, ভটভটি,থ্রি হুইলার বন্ধ করা হয়। তবে, প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস ও ট্রেনে যোগাযোগ স্বাভাবিক আছে।
সমাবেশ কে কেন্দ্র করে তিন দিন আগে থেকেই বিএনপি নেতাকর্মীরা রাজশাহীতে প্রবেশ করতে শুরু করেছে। ট্রেন থেকে নামার পর নেতাকর্মীরা স্লোগান দিতে দিতে মাদ্রাসা মাঠের উদ্দেশ্যে রওনা হচ্ছেন। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই এমন চিত্র দেখা গেছে রেলওয়ে স্টেশনের। রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় কয়েকগুণ কঠোর নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, প্রতিদিন রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন থেকে আন্তঃনগর, বিরতিহীন, কমিউটার ও মালবাহীসহ ৪০টি ট্রেন চলাচল করে। রাজশাহী থেকে হাজারো যাত্রী পাড়ি দেন দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে। বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশকে ঘিরে নিরাপত্তার চাদরে মোড়ানো হয়েছে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন।
রাজশাহী রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোপাল কুমার জানান, বিএনপির সমাবেশ উপলক্ষে নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়নি। রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন সব সময় নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা থাকে। যখন আমরা মনে করি তখনই নিরাপত্তা জোরদার করি। যাত্রীসাধারণের নিরাপদ ভ্রমণ ও স্টেশন এলাকায় থাকা অপেক্ষমাণ ট্রেনের র্যাকের নিশ্চিদ্র নিরাপত্তায় সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করছে রেলওয়ে পুলিশ।
তিনি আরোও যোগ করেন, স্টেশন প্ল্যাটফর্ম এলাকায় মাদকসেবীদের উৎখাত করা হয়েছে। উচ্চ আদালতের নির্দেশনা মোতাবেক বিনা টিকিটে ভ্রমণকারীদের যাতায়াত নিয়ন্ত্রণসহ যাত্রী ব্যতীত স্টেশন প্ল্যাটফর্মে হকার, ভিক্ষুকসহ ভাসমান লোকের চলাচল নিয়ন্ত্রণেও কঠোর পুলিশ। অপরাধীদের প্রশয়দাতারা পুলিশের ওপর চড়াও হন নানান সময়। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শনিবার বিএনপির সমাবেশ হবে ঐতিহাসিক মাদ্রাসা মাঠে (হাজী মুহম্মদ মুহসীন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ)। এখন সেখানে মঞ্চ এবং মাঠ প্রস্তুতের কাজ চলছে। এ মাঠে এখন অন্য নেতা কর্মীদের প্রবেশের সুযোগ নেই। তাই বুধবার রাত থেকেই দূরদূরান্ত থেকে আসা নেতা কর্মীরা পাশের ঈদগাহ মাঠে অবস্থান করছেন। বিরাট ঈদগাহের প্রায় পুরোটাই তাঁবুতে তাঁবুতে ভরে গেছে। এখনো স্লোগানে স্লোগানে মিছিল নিয়ে একটার পর একটা দল ঢুকছে। শুক্রবার সকাল থেকে বেড়েছে নেতাকর্মীর ঢল।
রেলওয়ে স্টেশনের ব্যবস্থাপক আবদুল করিম বলেন, কাউন্টার এবং অনলাইনে ৪ তারিখ পর্যন্ত ট্রেনের টিকিট ছাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই বিক্রি হয়ে গেছে। সকাল থেকে ট্রেনে যাত্রীর চাপও কিছুটা বেশি দেখা যাচ্ছে। সব রুটে সময়মতো ট্রেন ছেড়ে যাচ্ছে।
রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র রফিকুল আলম বলেন, পুলিশ সবগুলো প্রবেশপথেই চেকপোস্ট পরিচালনা করছে যেন অপ্রীতিকর কোন ঘটনা না ঘটে। তবে নেতা কর্মীদের সমাবেশে আসতে বাধা দেওয়া হচ্ছে এমন অভিযোগ সঠিক নয়। কিন্তু অবৈধ যানবাহন, যেগুলো শহরে ঢোকা বারণ, সেগুলোতে কেউ এলে তো বাধা দেওয়া হবে।