দুর্নীতি নয়, উন্নতি চাই অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি চাই

ইয়াছিন আরাফাত: দেশজুড়ে শিক্ষিত ও ধনবান মানুষ ভরপুর থাকা সত্ত্বেও এখনও দেশের মানুষের দুঃখ-কষ্ট মোছেনি। দুঃখ-কষ্টের চাপ মুছে, সমৃদ্ধময় বাংলাদেশ গড়তে মানুষের মাঝে ন্যায়-নীতিবান, সৎ দক্ষ, যোগ্য জনগোষ্ঠীর বেশ প্রয়োজন। তাহলে পরিবারে, সমাজে এবং রাষ্ট্রে উন্নতি অগ্রগতি প্রতিষ্ঠিত হবে। ফলে মানুষের জীবন সুখ ও সমৃদ্ধ হবে। মানুষের অভাব অনটন দূরীভূত হবে, অসহায় মানুষের সংখ্যা দিন দিন কমতে থাকবে। কিন্তু অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে, দেশে শিক্ষিত, সার্টিফিকেটধারী ব্যক্তিদের সংখ্যা বেশি থাকা সত্ত্বেও কোথাও দুর্নীতি পুরোপুরি নির্মূল হয়নি। বরং সব সময়ই দেশের কোনো না-কোনো সেক্টরে, মন্ত্রণালয়ে কিংবা ব্যক্তি বিশেষের  বিরুদ্ধে  দুর্নীতির কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার শোরগোলও শোনা যায়। যার দরুন দেশের অর্থনীতি বরাবরই চরম বিধস্ততার শিকার হয়ে যাচ্ছে। যার খেসারত টানতে হয় দেশের অসহায় খেটে-খাওয়া মানুষকে। এদের কারও কারও মুখে তখন জোটে না ঠিকমতো তিনবেলা খাবার-পানিও। আর অন্যদিকে তখন দেশের বিত্তবান লোকেরা বিলাসবহুল, আলিশান জীবন অতিবাহিত করে। দেশে তাদের বাড়ি-গাড়ি, ব্যাংক-ব্যাংলান্স স্থাপনের পাশাপাশি বিশ্বের নামিদামি দেশেও তাদের একাধিক বাড়ি-গাড়ির ও খোঁজ পাওয়া যায়। বিশেষ করে দেশের বড় বড় ব্যাংককে দেউলিয়া করে, সুইজারল্যান্ডের সুইস ব্যাংকে টাকা জমানোর প্রমাণও আজ দিবালোকের মতো স্পষ্ট।

সম্প্রতি বাংলাদেশের অর্থনীতি, রাজনীতি, সমাজনীতি সব ক্ষেত্রে দুর্নীতি এক মহাবিপর্যয়কর পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। রাষ্ট্র ব্যবস্থায় দুর্নীতির অবস্থান এতই শক্তিশালী যে, দেশের অসহায় খেটে-খাওয়া, সাধারণ মানুষ দুর্নীতির আকাশচুম্বী অবস্থান দেখেও তারা একে তাদের স্রষ্টা-প্রদত্ত তকদির বা ভাগ্য বলে মেনে নিয়েছে। এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, দুর্নীতি দমন কমিশনে প্রায় ৩০ হাজার মামলা ঝুলে আছে শুধু দুর্নীতিকে কেন্দ্র করে। গত ৩৬ বছরের ইতিহাসে বাংলাদেশ পরপর ৫ বার বিশ্ববাসীর নজর কেড়েছে দুর্নীতির জন্য। দুর্নীতির এমন বেপরোয়া লাগাম যেন কোনোভাবেই টেনে ধরা সম্ভব হচ্ছে না। এ বছর বিশ্বের সবচেয়ে বেশি দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় বাংলাদেশের এক ধাপ এগিয়ে ১২তম অবস্থান থেকে ১৩তম অবস্থানে এসেছে। অবশ্য দুর্নীতির এই সূচকে বা স্কোরের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের কোনো অগ্রগতি হয়নি। ১০০-এর মধ্যে বাংলাদেশের স্কোর ২৬, গতবারও একই ছিল। চার বছর ধরেই একই স্কোর রয়েছে। আর বিশ্বের কম দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় আগের বছর বাংলাদেশ ১৪৮তম দেশ হলেও এই বছর হয়েছে ১৪৭। এই তালিকায় সবার শীর্ষে রয়েছে দক্ষিণ সুদান। এরপরেই রয়েছে সিরিয়া, সোমালিয়া ও ভেনেজুয়েলা।

দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের নিচে রয়েছে শুধু আফগানিস্তান। বাংলাদেশের মতো একই অবস্থানে রয়েছে মাদাগাস্কার ও মোজাম্বিক।

অন্যদিকে বিশ্বের সবচেয়ে কম দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ড।

জানুয়ারি ২০২২ সালের সপ্তাহের শেষ মঙ্গলবারে প্রকাশিত বার্লিনভিত্তিক দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল (টিআই) পরিচালিত ‘দুর্নীতির ধারণা সূচক ২০২১’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মতে, বাংলাদেশে অবৈধ আয়ের পরিমাণ মোট জাতীয় আয়ের শতকরা ৩০-৪০ ভাগ। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, বাংলাদেশে গত ৪২ বছরে যত হাজার কোটি টাকা বৈদেশিক সাহায্য এসেছে তার মাত্র ২৫ ভাগ উন্নয়নের কাজে ব্যবহার হয়েছে। অবশিষ্ট ৭৫ ভাগই দুর্নীতিবাজ শাসক ও আমলাদের পকেটে গেছে, যা বাংলাদেশের জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তিকে বিশ্বের সামনে ধূলিসাৎ করে দিয়েছে।

রাজনৈতিক, প্রশাসনিক, অর্থনৈতিক, বিভিন্ন প্রকল্প, সরকারি বেসরকারি, সেবা খাত, ধর্মীয় ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ভূমি জরিপ ও ভূমি প্রশাসন, বাণিজ্য সব ক্ষেত্রে দুর্নীতির অশুভ ছোবলে পড়েছে বাংলাদেশ।

সমৃদ্ধি অর্জনে করণীয়

দুর্নীতিবাজদের দমন করা: মূর্খ ব্যক্তিদের তুলনায় দেশে শিক্ষিত ব্যক্তিরাই এ দুর্নীতির সঙ্গে ওতপ্রোতোভাবেই জড়িত। শিক্ষিতরা তাদের কলমের খোঁচা দিয়ে ছিনিয়ে নিয়ে যায় হাজার হাজার কোটি টাকা। রাতারাতি তারা আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়ে

ওঠে। তাই দেশের ভাবমূর্তি অক্ষুণœœ রাখতে অতি দ্রুত তাদের ছাঁটাই করে তদস্থলে নীতি-নৈতিকতাসম্পন্ন আদর্শ দেশপ্রেমিক, দক্ষতা, যোগ্যতা নাগরিকদের অগ্রাধিকার দেয়া প্রয়োজন। এক্ষেত্রে  দুর্নীতি করা অর্থকড়ি ফিরিয়ে আনার শতভাগ প্রচেষ্টাও চালানো এবং কোনো প্রকার রাজনৈতিক পরিচয় না খোঁজে অভিযুক্তদের যথাযোগ্য জবাবদিহির আওতায় নিয়ে এসে উপযুক্ত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা, ভবিষ্যতে কেউই যেন এরকম দুঃসাহস পুনরায় দেখাতে না পারে, সে ব্যাপারেও যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা। যদিও দেশে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ‘দুর্নীতি’র বিরুদ্ধে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে, কিন্তু সাম্প্রতিক তাদের থেকেই কিংবা তাদেরই ছত্রছায়ায় দুর্নীতির জয়যাত্রার ঢাকঢোল শোনা যাচ্ছে, বলে বিভিন্ন প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। উদাহরণস্বরূপÑ ঢাকার একটি ব্যাংক ও অপর একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক পি কে হালদারের বিরুদ্ধে প্রায় সাড়ে ছয় হাজার কোটি টাকা অস্বাভাবিক লেনদেনের অভিযোগ ওঠার পর দীর্ঘদিন ধরেই তিনি পলাতক ছিলেন এবং সম্প্রতি তাকে আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতে আটক করা হয়েছে। দুর্নীতির এমন করালগ্রাসে দেশের অর্থনীতির মেরুদণ্ড যেন বাঁকা হয়ে গিয়েছে।

খ. বেপরোয়া উন্নয়ন বন্ধ করা: দেশে বিভিন্ন প্রকল্পের নামে, বেনামে বাজেট করে দেশের মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে, যা দেশের অর্থনীতিতে এনেছে চরম এক মহাসংকট। কমে গেছে দেশের রিজার্ভ ফান্ডের পরিমাণও। ২০২১ সালের মে থেকে ২০২২ সালের মেÑএই এক বছরে ডলারের বিপরীতে ৩ দশমিক ৩৫ শতাংশ মান হারিয়েছে টাকা। এদিকে রপ্তানি বাড়লেও রেমিট্যান্সে টান পড়েছে। কিন্তু পণ্য আমদানি করতে গিয়ে ডলারের মান বেড়ে যাচ্ছে অনেক। তাতেই প্রতিনিয়ত চাপ পড়ছে রিজার্ভে। এমন পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকারের কোনো সুযোগ সম্ভাবনা নেই বলে ধারণা করছেন অর্থনীতিবিদরা। বরং আগামীতে এই পরিস্থিতি আরও জটিল হবে বলে অনুমান করছে তারা। বৈদেশিক মুদ্রার সংকট কাটাতে আইএমএফ, বিশ্বব্যাংকসহ দাতা সংস্থাগুলোতে ঋণের প্রস্তাবের আলোচনা উঠেছে। এরই মধ্যে বিলম্ব না করে বাংলাদেশ আইএমএফের কাছে ঋণ সহায়তা চেয়েছে। বিশেষ করে সাম্প্রতিক যে উন্নয়নগুলো দেশকে ঋণের মুখে ফেলেছে, তার মধ্যে পদ্মা সেতু, ঢাকা মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেল ইত্যাদি। এসব প্রকল্পে যত টাকা ঋণ করা হয়েছে তা চক্রবৃদ্ধি সুদে পরিশোধ করতে সরকারের কলিজায় পানি শুকিয়ে যাবে বলে ধারণা করছেন অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা। এছাড়া পদ্মার বুকে জাহাজ, ফেরি, ট্রলার, নৌকা চালিয়ে জীবিকা উপার্জন করা ১০ লাখের বেশি মানুষ এখন কর্ম হারিয়ে বেকারত্বে দিনাতিপাত করছে, যা জাতীয় অর্থনীতিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ জন্য উন্নয়নের ক্ষেত্রে আরও বেশি সচেতনতা, স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতার শতভাগ নিশ্চয়ন করা এবং পাশাপাশি অল্প বিনিয়োগে অধিক মুনাফা অর্জন হয় এমন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা। যা দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি আনতে বেশ সহায়তা করবে বলে আশা করি।

গ. কৃষি খাতে বিনিয়োগ বাড়ানো: বাংলাদেশ একটি কৃষি প্রধান দেশ। এদেশের প্রায় ৮০ ভাগ লোকেই কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে। ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে কৃষি এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতে ২৮ হাজার ২৭ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। গত ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ ছিল ১৯ হাজার ৬৩৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ গত অর্থবছরের চেয়ে ৮ হাজার ৩৯৭ কোটি টাকা বরাদ্দ বেড়েছে। কিন্তু সম্প্রতি দেশে বীজ-ধান, পেট্রোল-ডিজেল, জ্বালানি তেল এবং রাসায়নিক সারের দাম বেড়ে যাওয়ায় কৃষকরা  প্রচুর আবাদি জমি আবাদ করা ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছে। হেক্টর প্রতি যত ফসল উৎপাদন হয় তার চেয়ে খরচ কয়েকগুণ বেশি হওয়ায় কৃষকরা কৃষি উৎপাদনের আগ্রহ ক্রমশই হারিয়ে ফেলছে। কৃষি পণ্যের এমন দামে দেশের বাজেটকে বারবার প্রশ্নবিদ্ধ করছে। এছাড়া কৃষক কষ্ট করেও বহু টাকার জোগান দিয়ে চাষাবাদ করে যখন বিক্রি করতে যায়, তখন অধিকাংশ সময়ই আশানুরূপ বাজারমূল্য পায় না। অনেক সময় তাদের ঘাটতির সম্মুখীনও হতে হয়। এক্ষেত্রে খুচরা বিক্রেতা ও মজুতদারি একটি চক্র সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়। নির্দিষ্ট কিছু পণ্য সরকার ভর্তুকি দিয়ে ক্রয় করলেও অধিকাংশ পণ্যেই কৃষকরা তাদের ন্যায্যমূল্য পায় না। আবার অনেক সময় কৃষকের হাতে নিজস্ব বা দেশি পণ্য থাকা সত্ত্বেও আমদানির পরিমাণ বৃদ্ধি করায় দেশি পণ্যের বাজারমূল্য কমে যায়। এতে দেশে খাদ্য সংকট তৈরি হচ্ছে। এক্ষেত্রে সরকারের উচিত কৃষকদের সুদবিহীন ঋণ প্রদান করা এবং তাদের পাশে দাঁড়ানো, এতেই অর্থনীতি সমৃদ্ধি আসবে বলে আশা রাখি।

ঘ. প্রাকৃতিক সম্পদের সংরক্ষণ: বাংলাদেশে খুব বেশি প্রাকৃতিক সম্পদ না থাকলে ও বেশ কিছু সম্পদ রয়েছে যে গুলোর আহরণের অভাবে দেশের জনগোষ্ঠীর চাহিদা পূরণ সম্ভব হচ্ছে না। এগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো খনিজ, বনজ, মৎস্য, ভূমি ও মানব সম্পদ। খনিজ সম্পদের মধ্যে প্রাকৃতিক গ্যাস, তেল, কয়লা প্রভৃতি জ্বালানি চাহিদা পূরণ করে। বর্তমান বাংলাদেশের জনসংখ্যার ৯৩ শতাংশ বিদ্যুতের আওতায় এসেছে। ২০১০ সালে বিদ্যুৎ উৎপাদনে দেশীয় গ্যাসের ওপর নির্ভরশীলতা ছিল প্রায় ৯০ শতাংশ, যা কি না ২০২২ সালে কমে প্রায় ৫০ শতাংশে নেমে এসেছে। এর কারণ হলো দেশে নিজস্ব গ্যাস উৎপাদনের হার কমে গেছে। আর এর ফলে দেশীয় জ্বালানি তথা গ্যাসের পরিবর্তে ব্যবহার বাড়ছে আমদানি করা অতি উচ্চমূল্যের এলএনজির ব্যবহার। প্রতি ইউনিট দেশীয় গ্যাসের মূল্য যেখানে দুই থেকে তিন ডলার, সেখানে প্রতি ইউনিট আমদানি করা গ্যাসের জন্য ব্যয় হয় ১২ ডলার থেকে ৩৫ ডলার পর্যন্ত। এছাড়া আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের উচ্চমূল্যের ফলে আমদানি ব্যয় বৃদ্ধির কারণে রিজার্ভে চাপ তৈরি করছে। এক্ষেত্রে দেশের প্রাকৃতিক সম্পদ  উৎপাদন সংরক্ষণে আরও বেশি তৎপর হওয়া উচিত। তাছাড়া বিদ্যুৎ উৎপাদনের পাশাপাশি দেশের জনগণকে সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহারের প্রতি আরও বেশি উদ্ধুদ্ধ করা, যাতে বিদ্যুৎ সমস্যা লাঘব হয়। অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জন করতে যেমন প্রয়োজন দক্ষ এবং যোগ্য জনগোষ্ঠীর, ঠিক তেমনি প্রয়োজন আদর্শ দেশপ্রেমিকের। যারাই দেশকে ভালোবেসে দেশের সমৃদ্ধির লক্ষ্যে তাদের মেধা-মনন, শ্রম, ভালোবাসা উজাড় করে দেবে, শুধু তাদেরই দায়িত দেয়া উচিত। 

শিক্ষার্থী, আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০