সুকুক: জাতীয় অর্থনীতিতে নতুন সম্ভাবনা

 ড. মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা: ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা। মানবজীবনের সব দিক ইসলামে আলোচিত হয়। এসব দিকের একটি অন্যতম দিক হলো মানুষের জীবনের অর্থনৈতিক কার্যাবলি। ইসলামি অর্থনীতি সামাজিক কল্যাণ, বৈজ্ঞানিক এবং ভারসাম্যপূর্ণ অর্থনীতি। ইসলামি অর্থনীতি পুঁজিবাদী বা সমাজবাদী যেকোনো অর্থব্যবস্থার তুলনায় বাস্তবমুখী, প্রগতিশীল এবং মানবতার জন্য কল্যাণকর। এই অর্থনীতি ইসলামি আদর্শ, জীবন দর্শন ও সভ্যতা-সংস্কৃতির সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। ইসলামি অর্থনৈতিক কার্যাবলি কীভাবে পরিচালিত হবে, তার দিকনির্দেশনা আল কুরআন ও সুন্নাহতে লিপিবদ্ধ রয়েছে। ব্যবহারিক জীবনে সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে অর্থনৈতিক কার্মকাণ্ডের ধরনও পরিবর্তন হয়। পরিবর্তিত অর্থব্যবস্থা কীভাবে কোরআন ও সুন্নাহর আলোকে পরিচালিত হবে, তা ইজমা ও কিয়াসের মাধ্যমে সমাধান পাওয়া যায়। আধুনিক ইসলামিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান তারই ফসল। ইসলামিক ব্যাংকিং ও অন্যান্য ইসলামিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শরিয়াহভিত্তিক আমানত গ্রহণ, বিনিয়োগ প্রদান ও আর্থিক সেবা প্রদানের বিভিন্ন প্রদ্ধতি রয়েছে। একটি দেশের দীর্ঘমেয়াদি অব কাঠাকমো উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক উন্নতি সাধনের জন্য সুকুক বন্ড একটি অন্যতম প্রধান তহবিল সংগ্রহের উপকরণ।

বাংলাদেশ মিশ্র অর্থনীতির দেশ। এদেশের অর্থনীতির প্রায় ৭০ শতাংশ পরিচালিত হয় প্রচলিত পদ্ধতি অনুসরণ করে আর বাকি প্রায় ৩০ শতাংশ পরিচালিত হয় কোরআন ও সুন্নাহ্র দ্বারা পরিচালিত ইসলামিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান দ্বারা। জাতীয় অর্থনীতিতে ইসলামিক প্রতিষ্ঠানগুলো যাতে ভূমিকা রাখতে পারে সেই জন্যই নতুন নতুন শরীয়াহ্ভিত্তিক পণ্য উদ্ভাবিত হচ্ছে।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ১৯৯০ সাল থেকে তাদের অবকাঠামো ও দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়নের জন্য সুকুক বন্ডকে প্রধান হাতিয়ার হিসেবে প্রয়োগ করা শুরু করেছে। বাংলাদেশ সরকার প্রথম সরকারিভাবে সুকুকের মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ শুরু করে ২০২০ সালের ২৮ ডিসেম্বর। এখন পর্যন্ত সরকারি খাতে ১৮ হাজার কোটি টাকা ও বেসরকারি খাতে ৩ হাজার কোটি টাকার  (মোট ২১ হাজার কোটি টাকা) সুকুক বন্ড ইস্যু করে তহবিল সংগ্রহ করেছে।

সুকুকের পরিচিতি: সুকুক আরবি শব্দ, যার অর্থ হচ্ছে সিলমোহর লাগিয়ে কাউকে অধিকার ও দায়িত্ব দেয়ার আইনি দলিল। যাকে বাংলায় বিনিয়োগ সার্টিফিকেট বা নোট বলে। প্রায়োগিক অর্থে সুকুক হলো সুদবিহীন বন্ড। ইসলামিক শরিয়াহভিত্তিক বন্ড যা ‘সুকুক’ নামে পরিচিত, এটি সুদভিত্তিক বিনিয়োগ ব্যবস্থার বিকল্প হিসেবে নতুন সম্ভাবনাময় বিনিয়োগ ব্যবস্থার সুযোগ সৃষ্টি করেছে। সুকুক এমন একটি বিনিয়োগ সনদ, যেখানে সম্পদের ওপর সুকুক হোল্ডারের মালিকানা নিশ্চয়তা প্রতিষ্ঠিত হয় এবং সম্পদ বা প্রকল্প থেকে আহরিত লভ্যাংশের ভাগিদার হয়।

বাহরাইনভিত্তিক ইসলামি অর্থনীতির গবেষণা এবং স্ট্যান্ডার্ড প্রণয়নকারী সংস্থা অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড অডিটিং অর্গানাইজেশন ফর ইসলামিক ব্যাংকস (AAOIFI) এর গর্ভনেন্স স্ট্যান্ডার্ড (ঝে-১২, ২০১৯) এ সুকুক সম্পর্কে বলা হয়েছে, Sukuk (plural of Sak) are Certificates of equal value representing undivided shares in the ownership of tangible assets, usufructs and services or (in the ownership of) the assets of particular projects or special investement activitiy (AAOIFI)। অর্থাৎ সুকুক সমমূল্যের এমন সম্পদ, যা কোনো বিদ্যমান নির্দিষ্ট সম্পত্তি অথবা সম্পদের উপস্বত্ব অথবা সেবা অথবা নির্দিষ্ট কোনো প্রকল্প বা বিশেষ বিনিয়োগ কার্যক্রমের অধিভুক্ত সম্পত্তির অভিন্ন অংশের প্রতিনিধিত্ব করে। সুকুক সম্পর্কে AAOIF শরিয়াহ্ স্ট্যান্ডার্ড হলো-১৭ (ঝঝ-১৭)।

মালয়েশিয়াভিত্তিক আন্তর্জাতিক ইসলামি অর্থনীতি বিয়ষক স্ট্যার্ন্ডাড প্রণয়নকারী প্রতিষ্ঠান ‘ইসলামিক ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস বোর্ড’ (IFSB-৭, ২০০৯) এর  মতে, , Sukuk (plural of Sakk), frequently referred to as ÒIslamic BondsÓ, are certificates with each Sakk representing a proportional undivided right in tangible assets, or a pool of predominantly tangible assets, or a business venture (such as a Mudarabah). These assets may be in a specific project or investment activity in accordance with Shariah rules and principles.

বাংলাদেশ সিকিউরিটি একচেঞ্জ কমিশনের সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, Sukuk means a certificate of equal value which evidences the undivided shares in the ownership of the tangible assets, usufructs and services or (in the ownership of) the assets of particular projects or special investment under the shariah compliant investment contracdt.

সুকুকের মূলনীতি হলো যে এর ধারক একটি সম্পত্তির অবিভক্ত মালিকানার অধিকারী এবং তিনি ওই সম্পদ থেকে অর্জিত আয়ের আনুপাতিক দাবিদার। সুকুক হলো প্রথাগত ব্যাংকিং চ্যানেল ছাড়াই একটি দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের উৎস।

সুকুকের ক্রমবিকাশ: সুকুকের ইতিহাস ইসলামের ইতিহাসের সঙ্গে জড়ানো। সুকুকের উৎপত্তি ৭ম খ্রিষ্টাব্দে সিরিয়ার দামেস্কে। আধুনিক সুকুকের প্রথম সূচনা হয় ১৯৭৮ সালে জর্ডানে “সকুকুল মুকারাযা/মুদারাবা” দিয়ে। পরে ১৯৮৪ সালে তুরস্কে ‘মুশারাকা সুকুক’ প্রতিষ্ঠিত হয়, যা তার্কিশ রেভিনিউ শেয়ারিং সার্টিফিকেট নামেও পরিচিত ছিল। সৌদি আরবের জেদ্দায় অবস্থিত “দি ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ফিকহ একাডেমি” ১৯৮৮ সালে একটি বিবৃতি জারি করে সুকুক বাজারের উন্নয়নের ভিত্তি স্থাপন করে। বিবৃতিট হলো  Any combination of assets or the usufruct of such assets can be represented in the form of written financial instruments which can be sold at a market price provided that the combination of the groups of assets represented by the sukuk consist of a majority of tangible assets অর্থাৎ সম্পদের যেকোনো সমন্বয় (অথবা এই ধরনের সম্পদের) লিখিত আর্থিক ইন্সট্রুমেন্টস হতে পারে, যা বাজারমূল্যে বিক্রি করা যেতে পারে যদি স্পর্শ সম্পদের সমন্বয়ে গঠিত হয়। এই বিবৃতি ইসলামিক আর্থিক বাজারের জন্য একটি মাইলফলক ছিল। যার ফলশ্রুতিতে আন্তর্জাতিকভাবে সুকুকের বাজার সম্প্রসারিত হয়।

১৯৯০ সালে প্রচলিত বন্ডের বিকল্প হিসেবে প্রথম মালয়েশিয়ায় সর্বপ্রথম করপোরেট সুকুক ইস্যু করে। মালয়েশিয়া বিশ্বের মোট সুকুকের প্রায় ৬৭ শতাংশ ইস্যুকারী হিসেবে ‘শেল এমডিএস এসডিএন বিএইচডি’ কর্তৃক ১২৫ মিলিয়ন মালয়েশিয়ান বিঙ্গিতে ‘বাই বিথামান আজিল’ সুকুক জারি করা হয়। ২০০১ সালে বাহরাইন সরকার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণের প্রয়োজনীয় অর্থ সংগ্রহে ইজারাভিক্তিক সুকুক বাজারে ছাড়ে। ২০০৩ সালে কাতার ৭০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের সুকুক ইস্যু করে। ২০০৪ সালে ইসলামি উন্নয়ন ব্যাংক (আইডিবি) ‘সুকুক আল-ইস্তিসনা’ নামে ৪০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের সুকুক ইস্যু করে। একই বছর দুবাই ইসলামি ব্যাংক ৭৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের সুকুক ইস্যু করে। ২০০৫ সালে ইন্দোনেশীয় সরকার ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের সুকুক ইস্যু করে। ২০০৬ সালে আমেরিকার ইস্ট ক্যামেরন পার্টনার্স প্রায় ১৬৬  মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের মুশারাকা সুকুক ইস্যু করে। ২০০৯ সালে সিঙ্গাপুর সরকার প্রথম সার্বভৌম সুকুক চালু করে। ২০১১ সালে রাশিয়ার তাতারিস্তানের রাজধানী কাজানে সুকুক ইস্যু করা হয়। ২০১৪ সালে যুক্তরাজ্যে সুকুক ইস্যু করা হয়। একই বছর হংকংয়ে ইজারা সুকুক চালু হয়। মুসলিম দেশেগুলোর বাইরে অনেক উন্নত অমুসলিম দেশেও তাদের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য সুকুকের জনপ্রিয়তা লাভ করেছে।

সুকুকের কাঠামো: শরীয়াহ্ নীতিমালার আলোকে অর্থায়ন ও ব্যবহারের বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী সুকুক বিভিন্ন কাঠামোর হতে পারে। যথা: (১) ইক্যুইটিভিত্তিক সুকুক (মুশারাকা-Joint-venture, মুদারাবা-Partnership ও ওয়াকালাহ্), (২) ইজারাভিত্তিক সুকুক (নির্দিষ্ট প্রকল্পভিত্তিক), (৩) বিক্রয়ভিত্তিক সুকুক (মুরাবাহা, ইসতিসনা ও সালাম) এবং (৪) এজেন্সিভিত্তিক সুকুক (ওকালা সুকুক)। এছাড়াও একাধিক পদ্ধতির সুকুক নিয়ে মিশ্র সুকুকও গঠন করা হয়, যা হাইব্রিড সুকুক নামে পরিচিত। আন্তর্জাতিকভাবে ইজারাভিত্তিক সুকুক মৌলিকভাবে তিন প্রকার হয়ে থাকে। যথা- (১) Certificate of ownership in leased asset, (2) Certificate of ownership of usufruct. বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক ইস্যুকৃত ইজারা সুকুক মূলত jZ Certificate of ownership in leased asset-এর অন্তর্ভুক্ত।

অন্তর্নিহিত সম্পদের (Underlying Assets) মালিকানার ভিত্তিতে সুকুক দুই প্রকার। যথা: অ্যাসেট ব্যাকড (Asset back) ও অ্যাসেট বেজড(Asset based) সুকুক। যখন স্পেশাল পারপাস ভেহিকলের (ঝচঠ) কাছে অন্তর্নিহিত সম্পদের মালিকানা হস্তান্তর করে সুকুক ইস্যু করা হয় তখন তাকে অ্যাসেট ব্যাকড(Asset back) সুকুক বলে। অপরদিকে যখন এসপিভির কাছে অন্তর্নিহিত সম্পদের মালিকানার পরিবর্তে অন্তর্নিহিত সম্পদ থেকে আহরিত আয়ের মালিকানা হস্তান্তর করে সুকুক ইস্যু করা হয় তখন তাকে অ্যাসেট বেজড (Asset based)   সুকুক বলে।

সুকুকের প্রবৃদ্ধি: বিশ্বব্যাপী ২০১৪-২০১৯ সময়কালে সুকুকের বার্ষিক প্রবৃদ্ধির হার প্রায় ৮ শতাংশ। আইএফএসবি ইন্ডাস্ট্রিয়াল স্ট্যাবিলিটি রিপোর্ট, ২০২২ অনুযায়ী ২০২১ সালে বিশ্বে মোট সুকুক ছিল ৭৭৫ দশমিক ৭০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যার প্রবৃদ্ধি হলো ১২ দশমিক ৫ শতাংশ। ২০২১ সালে বৈশ্বিক ইসলামি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মোট আর্থিক স¤‹দ ছিল ৩ হাজার ৫৮ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার, যার মধ্যে সুকুকের হিস্যা ছিল ২৫ দশমিক ৪ শতাংশ।

বাংলাদেশে সুকুক ইস্যু: একবিংশ শতাব্দীতে বৈশ্বিক ইসলামি আর্থিক কাঠামোর প্রবৃদ্ধি ও আর্থিক ব্যবস্থাপনায় সুকুকের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। মুসলিম দেশগুলো ছাড়াও বিশ্বের উন্নত দেশগুলো যখন সুকুকের সুফল পেতে শুরু করে। তখন আন্তর্জাতিক আর্থিক সংস্থাগুলো বাংলাদেশকে সুকুক ইস্যুর ব্যাপারে পরামর্শ দিতে থাকে। তারই অংশ হিসেবে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক এডিবির শর্ত ছিল ২০১৭ সালের মধ্যে বিএসইসিকে ‘সুকুক বন্ড’ নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে। সেই শর্তের আলোকে বাংলাদেশের তারল্য ব্যবস্থাপনা, বাজেট ঘাটতি ও অবকাঠামো উন্নয়নের টেকসই বিকল্প হিসেবে সুকুক ইস্যু করার সিদ্ধান্ত নেয়। অর্থ মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, শরিয়াহ্ভিত্তিক নিরাপদ বিনিয়োগ ইন্সট্রুমেন্টে ইসলামিক ব্যাংকিং ব্যবস্থার বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টির জন্য সরকারের পক্ষ থেকে শরিয়াহভিত্তিক বন্ড ইস্যু, ওই খাতের তারল্যকে সরকারের উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে অর্থায়নের উৎস হিসেবে ব্যবহার, সরকারি ঋণের পোর্টফোলিও সম্প্রসারণের মাধ্যমে ঝুঁকি হ্রাস এবং ব্যয় সাশ্রয়ের লক্ষ্যে সরকার ইসলামি বন্ড ‘সুকুক’ ইস্যু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বাংলাদেশ সরকার ২৯ মে, ২০১৯ সালে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির মাধ্যমে সুকুক বিষয়ে সর্বপ্রথম গেজেট প্রকাশ করে। পরে অর্থ মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন আকারে ২০২০ সালের ৮ অক্টোবর শরিয়াহ্ভিত্তিক বিনিয়োগ চুক্তির আওতায় সরকার কর্তৃক সুকুক ইস্যু ও ব্যবস্থাপনা সম্পর্কিত গাইড লাইন জারি করে। ওই গাইডলাইনের অনুচ্ছেদ ৪ অনুযায়ী সরকার কর্তৃক বাংলাদেশ ব্যাংককে স্পেশাল পারপাস ভেহিকল (এসপিভি) এবং ট্রাস্টি হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। ওই গাইডলাইন অনুসরণপূর্বক স্পেশাল পারপাস ভেহিকল (এমপিভি) হিসেবে ডেট ম্যানেজমেন্ট ডিপার্টমেন্টের ‘ইসলামিক সিকিউরিটিজ সেকশন’ ইতোমধ্যে তিনটি সুকুক ইস্যু করেছে। দেশের চলমান অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে ইসলামি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো অংশগ্রহণ বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে যেসব সুকুক ইস্যু করা হয় এবং অনুমতি প্রদান করা হয়, তা নি¤েœ উল্লেখ করা হলো।

প্রথম ধাপ: ‘সারাদেশে নিরাপদ পানি সরবরাহ প্রকল্প’

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ‘সারাদেশে নিরাপদ পানি সরবরাহ প্রকল্প’-এর সম্পদের বিপরীতে বাংলাদেশ ব্যাংক ৪ হাজার কোটি টাকা করে দুই দফায় মোট ৮ হাজার কোটি টাকার সুকুক ইস্যুর সিদ্ধান্ত নেয়। সুকুক প্রসপেক্টাস অনুযায়ী ‘বাংলাদেশ গভর্নমেন্ট ইনভেস্টমেন্ট সুকুক’ এর অবকাঠামো হলো ইজারা ভিত্তিক, যা প্রকৃত অর্থে ইজারা অ্যান্ড লিজ ব্যাক। ২৮ ডিসেম্বর,  ২০২০ সালে অকশনের প্রথম ধাপে ৪ হাজার কোটি টাকার সুকুক ইস্যু করা হয়। পরে ১০ জুন, ২০২১ সালে দ্বিতীয় ধাপের অকশন/নিলামের মাধ্যমে বাকি ৪ হাজার কোটি টাকার সুকুক ইস্যু করা হয়।

দ্বিতীয় ধাপ: সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় উন্নয়ন প্রকল্প

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় উন্নয়ন প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের ব্যয় মেটাতে সুকুক বন্ড ইস্যু করে ৫ হাজার কোটি টাকা তোলা হয় ২৯ ডিসেম্বর, ২০২১। যে প্রকল্পের জন্য টাকা তোলা হয়েছে, তার নাম ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চাহিদামাফিক উন্নয়ন প্রকল্প’ বাস্তববায়ন করছে শিক্ষা অধিদপ্তর। পাঁচ হাজার কোটি টাকা অভিহিত মূল্যের ইজারা সুকুক ইস্যুর বিপরীতি বিনিয়োগকারীরা মোট ২৩ হাজার ৩০৪ কোটি ২৬ লাখ টাকার বিড জমা পড়ে।

তৃতীয় ধাপ: পল্লি অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প-৩:

১৯ এপ্রিল ২০২২ সালে সরকার শরিয়াহভিত্তিক ইসলামি সুকুক বন্ড ছেড়ে ‘অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গুরুত্বপূর্ণ পল্লি অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প-৩ এর নির্মাণ ও উন্নয়ন’ এর জন্য পাঁচ হাজার কোটি টাকা তুলেছে সরকার। এবার ৫ হাজার কোটি টাকার অভিহিত মূল্যের ইজারা সুকুকের বিপরীতে ১২ হাজার ৩০৬ কোটি টাকার আবেদন জমা পড়ে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, সরকারের এই সুকুক কার্যক্রম দেশের পল্লি অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে গ্রামীণ জীবনযাত্রার সার্বিক মানোন্নয়নে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।

বেসরকারি খাতে সুকুক ইস্যু

বেক্সিমকো গ্রুপ: সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি খাত প্রথম সুকুক ইস্যু করে তহবিল সংগ্রহ শুরু করেছে দেশের অন্যতম প্রধান ব্যবসায়িক গ্রুপ বেক্সিমকো। ১৩ জানুয়ারি ২০২১ শেয়ারবাজারে শরিয়াহ্ভিত্তিক বন্ড ‘বেক্সিমকো গ্রিন সুকুক আল-ইসতিসনা’ আইপিও এবং প্রাইভেট প্লেসমেন্ট প্রক্রিয়ায় ইস্যু করে মোট ৩ হাজার কোটি টাকা সংগ্রহ করেছে বেক্সিমকো গ্রুপ। সুকুকটির অভিহিত মূল্য ১০০ টাকা।

বঙ্গ বিল্ডিং ম্যাটেরিয়াল: ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২ আরএফএল গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান বঙ্গ বিল্ডিং ম্যাটেরিয়াল লিমিটেড কর্তৃক প্রস্তাবিত ৩০০ কোটি টাকার সিকিউরড, নন-কনভার্টিবল ও ফুল্লি রিডিম্যাবল অ্যাসেট ব্যাকড সুকুকের প্রস্তাব করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। শুধু ব্যাংকগুলো ওই সুুকুকে বিনিয়োগ করতে পারবে। এই সুকুকের প্রতি ইউনিটের অভিহিত মূল্য ৫ হাজার টাকা। ওই সুকুকটি অল্টারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ডে তালিকাভুক্ত হবে।

ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি):

এক হাজার কোটি টাকার ‘আইসিবি ফার্স্ট মুদারাবা সুকুক’ বন্ড ইস্যুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুঁজিবাজার তালিকাভুক্ত আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের কোম্পানি আইসিবি। সুকুকটি হবে ১০ বছর মেয়াদি যার অভিহিত মূল্য হলো এক হাজার টাকা। বন্ডটিতে ১০০ ইউনিটের লটের জন্য এক লাখ টাকা এবং ৫ ইউনিটের লটের জন্য ৫ হাজার টাকা বিনিয়োগ করা যাবে।

দেশবন্ধু পলিমার লিমিটেড: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রকৌশল খাতের কোম্পানি দেশবন্ধু পলিমার লিমিটেড সুকুকের মাধ্যমে ৫০০ কোটি টাকা উত্তোলনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এছাড়া অনেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠান দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্পের অর্থের উৎস হিসেবে সুকুক ইস্যুর কথা ভাবছে।

অর্থনীতিতে সুকুকের ভূমিকা: দেশের চলমান বিকশিত আর্থিক কাঠামো ও আর্থসামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে সুকুক বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে সুকুক যেসব খাতে ভূমিকা রাখতে পারে তা হলোÑ

এক. অবকাঠামো উন্নয়ন: অবকাঠামো নির্মাণ ও উন্নয়নমূলক প্রকল্প বাস্তবায়নে দীর্ঘমেয়াদি অর্থসংস্থানের উৎস হিসেবে সুকুক ভূমিকা পালন করতে পারে। ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল উল্লেখ করেন, সুকুকের মাধ্যমে শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলোর জন্য সরকারি উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের সুযোগ তৈরি হয়েছে; দুই. মুদ্রানীতি: ইসলামি শরিয়াহভিত্তিক অর্থনীতি বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে মুদ্রানীতির হাতিয়ার হতে পারে; তিন. বাজেট ঘাটতি: সরকারের বাজেট ঘাটতি অর্থায়নে সুকুক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে; চার. মূলধন কাঠামো গঠন: দীর্ঘমেয়াদি মূলধন কাঠামো গড়ে তুলতে সুকুকের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য; পাঁচ.  জনকল্যাণমূলক প্রকল্প: সরকারি, সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভিন্ন এনজিওগুলো সমাজকল্যাণমূলক প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ‘সামাজিক সুকুক’ ইস্যু করতে পারে; ছয়. বৈদেশিক বিনিয়োগ: বৈদেশিক ঋণের ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে সুকুক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে; সাত. তারল্য নিয়ন্ত্রণ: অতিরিক্ত তারল্য ব্যবস্থাপনার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক দীর্ঘদিন ধরে ইসলামিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য স্বল্পমেয়াদি ইসলামি বিনিয়োগ বন্ড ব্যবহার করে আসছে। এখন তারল্য নিয়ন্ত্রণে সুকুক ভূমিকা পালন করতে পারে; আট. ব্যয় হ্রাস: অর্থ বিভাগের মতে, ঘাটতি অর্থায়ন সুকুকের মাধ্যমে করা হলে সরকারের সুদের ব্যয়ও হ্রাস পাবে; নয়. বৈদেশিক বিনিয়োগ বৃদ্ধি: বাংলাদেশের পুঁজি বাজারে সুকুক পণ্যের যাত্রা শুরু হওয়ায় বিনিয়োগকারীদের বিকল্প বিনিয়োগের জায়গা তৈরি হয়েছে। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর বিনিয়োগকারীরা ইতোমধ্যে যোগাযোগ শুরু করেছে। এর মধ্যে মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর এবং দুবাইয়ের অনেক বিনিয়োগকারী রয়েছে। তারা সুকুকের মাধ্যমে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে চায়; দশ. মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন: বাংলাদেশ সরকার বেশকিছু মেগা প্রকল্প হাতে নিয়েছে এবং কিছু পাইপলাইনেও রয়েছে। এগুলো বাস্তবায়নের জন্য সরকারের পক্ষে একা সম্ভব হচ্ছে না, যার ফলে সুকুক ইস্যুর মাধ্যমে এসব মেগা প্রকল্পের অর্থায়ন করা সম্ভব; এগারো. শেয়ারবাজারের স্থিতিশীলতা: বাংলাদেশের শেয়ারবাজার উচ্চ অস্থিরতা, তারল্য সংকট এবং কম স্থিতিস্থাপকতার মতো নানান সমস্যায় জর্জরিত। যার ফলে বিনিয়োগকারীরা শেয়ারবাজারের প্রতি তাদের আস্থার সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে সুকুক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে; বারো. ব্যাংক খাতের ওপর নির্ভরতা হ্রাস: আমাদের দেশের বেসরকারি খাত তাদের বড় বড় প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের জন্য ব্যাংক খাতের ওপর অত্যধিক পরিমাণ নির্ভরশীল। সুনির্দিষ্ট প্রকল্পের অধীন সুকুক ইস্যু করে এই নির্ভরশীলতা কমানো অনেকাংশে সম্ভব। অতএব সুকুক ব্যাংক খাতের বোঝা কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে; তেরো. এসএলআর সংরক্ষণ: বাংলাদেশের ব্যাংকিং ইন্ডাস্ট্রিজের ২৫ শতাংশের ওপরে ইসলামি ব্যাংকিংয়ের অবদান রয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিকট বিধিবদ্ধ তারল্য (এসএলআর) সংরক্ষণের অন্য কোনো শরিয়াহ সম্মত প্রডাক্ট নেই বিধায় ইসলামিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো সুকুকের মাধ্যমে সংরক্ষণ করতে পারে, চৌদ্দ. জিডিপি প্রবৃদ্ধি: বাংলাদেশের জিডিপিতে প্রচলিত বন্ডের অবদান প্রায় ১২ শতাংশের মতো। অথচ ভারত ও পাকিস্তানের জিডিপিতে বন্ডের অবদান যথাক্রমে ৩৫ ও ৩১ শতাংশ। সুতরাং জিডিপির প্রবৃদ্ধি বাড়াতে সুকুক প্রধান ভূমিকা রাখতে পারে; পনেরো. পরিবেশ সংরক্ষণ: সৌর, বায়ু, জল প্রভৃতির মতো নবায়নযোগ্য শক্তি প্রকল্পে বিনিয়োগের উদ্দেশে ‘গ্রিন সুকুক’ উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে পারে।

সুকুক সম্পূর্ণ সুদমুক্ত ও সম্পদভিত্তিক একটি ইসলামি বন্ড, যা টেকসই আর্থিক কাঠামো গড়তে ভূমিকা রাখে। বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ৯০ শতাংশের অধিক মুসলমান। ফলে এ দেশে ইসলামিক বন্ডের অনেক চাহিদা রয়েছে। এ চাহিদাকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশের বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করা সম্ভব। সরকার সাধারণত বাজেট ব্যয় নির্বাহে রাজস্ব আহরণ ট্রেজারি বিল-বন্ড ইস্যু, ব্যাংক ঋণ ও সঞ্চয়পত্রের ওপর নির্ভর করে। নিন্ম মধ্যম আয়ের দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত করার লক্ষ্যে কাক্সিক্ষত জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে হলে বন্ড বাজারকে আরও শক্তিশালী করা দরকার। সুকুক ইস্যুর মাধ্যমে সংগৃহীত অর্থ দিয়ে বড় বড় সেতু, মেট্রো রেল ও রেললাইন সম্প্রসারণসহ বহু প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ করা সম্ভব বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা। সঞ্চয়পত্র ও ব্যাংকঋণের ওপর নির্ভরতা কমাতে ‘বাংলাদেশ সরকার বিনিয়োগ বন্ড’ নামে ইসলামি বন্ড সুকুক ছেড়েছে। যেহেতু ইসলামিক আর্থিক সম্পদগুলো শরিয়াহ আইন দ্বারা পরিচালিত হয়, তাই এটি ২০০৮ সালের বিশ্বমন্দার সময় গবেষক ও নীতিনির্ধারকদের কাছ থেকে প্রচুর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল। যার ফলে ইসলামিক ফিন্যান্স খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

sউপসংহার: বাংলাদেশে ৬১টি ব্যাংকের মধ্যে মাত্র ১০টি ইসলামি ব্যাংক ও প্রায় ৪০টি প্রচলিত ব্যাংক ইসলামি উইন্ডো অথরা শাখা ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রায় ৩০ শতাংশ সম্পদ নিয়ে আশ্চর্যজনক সাফল্য দেখাতে সক্ষম হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে অনুকূল নীতি প্রণয়ন এবং ইসলামি ব্যাংকগুলোর যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণে সুযোগ সৃষ্টি হলে সুকুক বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। দেশকে এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে সুকুকের মতো আন্তর্জাতিকভাবে গৃহীত প্রডাক্টকে গুরুত্ব দিতে হবে। বর্তমানে দেশে বড় বড় প্রকল্প এবং অবকাঠামো তৈরি হচেছ। এ প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে বৈদেশিক সাহায্যনির্ভরতা হ্রাস করার জন্যও সুকুক ইস্যু তাৎপর্যপূর্ণ। বাংলাদেশের সুকুককে আকর্ষণীয় করার জন্য এর বাস্তবভিত্তিক সুবিধাগুলো বিনিয়োগকারীদের সামনে তুলে ধরতে হবে। তবে সুকুককে জনপ্রিয় করতে হলে বেশকিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে, যেমন আইনগত কাঠামো সংশোধন, কর আইনের সংশোধন, রেজিস্ট্রেশন আইনের পরিবর্তন, শরিয়াহ বিশেষজ্ঞ এবং সুকুক পরিচালনার জন্য দক্ষ জনশক্তি তৈরিকরণ প্রভৃতি। সুকুক বন্ড সম্পর্কে সরকারি, বেসরকারি, প্রাতিষ্ঠানিক ও সামাজিক পর্যায়ে জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। আমাদের প্রত্যাশা যে, সুকুক বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও দীর্ঘমেয়াদি অর্থের উৎস এবং বিনিয়োগের কার্যকর বিকল্প অর্থায়ন হিসেবে আর্থিক কাঠামো শক্তিশালী করতে ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে ভূমিকা রাখবে। বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের জন্য ৪ হাজার কোটি টাকার সুকুকের জন্য ১৫ হাজার ৩৫০ কোটি টাকা আবেদন। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য সুকুক অকশনে ৫ হাজার কোটি টাকার জন্য ২৩ হাজার কোটি টাকার আবেদন। পল্লি অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের সুকুক অকশনে ৫ হাজার কোটি টাকার জন্য ১২ হাজার ৩০০ কোটি টাকার আবেদন। এতেই প্রমাণ হয় বাংলাদেশে যদি সুনির্দিষ্ট প্রকল্পের অধীনে সুকুক ইস্যু করা হয়, তাহলে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়ন হিসেবে সুকুক অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করতে পারবে, ইনশাআল্লাহ।

কর্মকর্তা

গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড

শরিয়াহ সেক্রেটারিয়েট

drmdgulammustafa@gmail.com

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০