নিজস্ব প্রতিবেদক: উচ্চ ভ্যাট ট্যাক্স প্রদানসহ দেশের অর্থনীতিতে শতভাগ মূল্য সংযোজন হলেও বাংলাদেশের প্রধান ১০টি খাতের মধ্যে তালিকায় নেই পর্যটন খাত বলে হতাশা ব্যক্ত করেন খাতসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। সম্ভাবনাময় এ খাতের বিকাশে নীতিসহায়তা বাড়ানোর পাশাপাশি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডিংয়ে সরকারের সহায়তা চান তারা। গতকাল মঙ্গলবার সকালে এফবিসিসিআই কার্যালয়ে আয়োজিত হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট অ্যান্ড গেস্ট হাউস ডেভেলপমেন্ট বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির দ্বিতীয় সভায় ব্যবসায়ীরা বলেন, বাংলাদেশে পর্যটনশিল্পের উন্নয়ন হয়েছে। তবে আশেপাশের দেশগুলোর তুলনায় অনেক পিছিয়ে বাংলাদেশের পর্যটনশিল্প। ভ্যাট ট্যাক্স কমানোসহ সরকারি নীতিসহায়তা বাড়ানোর মাধ্যমে পর্যটন খাত দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানে থাকবে বলে মনে করেন ব্যবসায়ীরা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে এফবিসিসিআইর সহসভাপতি মো. আমিন হেলালী বলেন, বাংলাদেশে পর্যটনশিল্পের অনেক প্রসার হয়েছে। উন্নত দেশগুলোর মতো আধুনিক প্রযুক্তি ও যন্ত্রপাতি ব্যবহার হচ্ছে এখন এদেশে। জটিলতা থেকে ধীরে ধীরে বের হচ্ছি আমরা। তবে এ খাতের প্রসারে ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজের আরও বেশি উন্নয়নসহ আমদানিতে নজর দিতে হবে। উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হওয়ার পথে পর্যটন খাতে কমপ্লায়ান্স নিশ্চিতকরণসহ সুবিধাদি বাড়ানোর ব্যাপারে ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। এছাড়া সেভেন সিস্টার্স অঞ্চলের পর্যটকদের সঙ্গে বাংলাদেশের পর্যটন ব্যবসায়ীদের যোগাযোগ সহজ করা গেলে জাতীয় অর্থনীতিতে আরও বেশি অবদান রাখা যাবে বলে মনে করেন মো. আমিন হেলালী।
সহসভাপতি এমএ মোমেন পর্যটন খাতের দেশি ও আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডিংয়ে আগামী বছরের মার্চ মাসে এফবিসিসিআইর ৫০ বছরপূর্তি উপলক্ষে অনুষ্ঠিতব্য বাংলাদেশ বিজনেস সামিটকে অন্যতম প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ব্যবহার করা যাবে বলে পরামর্শ দেন।
এফবিসিসিআইর সহসভাপতি ও কমিটির ডিরেক্টর ইনচার্জ মো. আমিনুল হক শামীম জানান, বিশ্বে প্রতিবছর প্রায় ১১০ কোটি মানুষ বিভিন্ন দেশে ভ্রমণ করে। বাংলাদেশি পর্যটকরা অনেক বেশি অর্থ খরচ করে বিদেশ ভ্রমণ করলেও বিদেশি পর্যটকদের এদেশে ভ্রমণ অনেক কম। পর্যটন খাতের প্রসারে সংশ্লিষ্ট পরিবহন, জাহাজ প্রভৃতি আমদানিকে ভ্যাট ট্যাক্সমুক্ত তালিকায় সংযুক্ত করার আহ্বান জানান তিনি। এছাড়া বাংলাদেশের পর্যটনশিল্পের ব্র্যান্ডিংয়ে দূতাবাসগুলোয় পর্যটন বই রাখা যেতে পারে বলে পরামর্শ দেন তিনি।
সভায় সভাপতিত্ব করেন কমিটির চেয়ারম্যান ও ট্যুরিজম রিসোর্ট ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি খবির উদ্দিন আহমেদ।
বৈঠকে আরও বক্তব্য দেন এফবিসিসিআইর পরিচালক এমজিআর নাসির মজুমদার, হাফেজ হারুন, আবু হোসেন ভুঁইয়া (রানু), আক্কাস মাহমুদ, মহাসচিব মোহাম্মদ মাহফুজুল হক, কমিটির কো-চেয়ারম্যান খন্দকার রুহুল আমিন, এইচএম আমিনুল ইসলাম ভূঁইয়া, ইরফান আহমেদ, জালাল উদ্দিন টিপু প্রমুখ।
লাইসেন্স বা ছাড়পত্র সহজীকরণ, যোগাযোগ ব্যবস্থার আরও বেশি উন্নয়ন, দেশের সব পর্যটনকে লাইসেন্সের আওতায় আনা এবং ট্যুরিস্ট গাইডদের প্রশিক্ষণে সরকারি তহবিলের ব্যবস্থার দাবি জানান বক্তারা।