নিজস্ব প্রতিবেদক: পুঁজিবাজার থেকে ৫০ শতাংশ অর্থায়ন করা প্রয়োজন। এখান থেকে বেশি অর্থের জোগান করতে পারলে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারিত হবে। ক্রাইসিসের মধ্যেও আমাদের রপ্তানি বেড়েছে। পুঁজিবাজার ঘুরে দাঁড়াবে, আমরা সেই আশা করি। উন্নয়নের সব ক্ষেত্রেই শিক্ষিত জাতি দরকার। সেই সঙ্গে শিক্ষিত বিনিয়োগকারী প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। একই সঙ্গে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেছেন, আমাদের কিছু ভুলত্রুটি হতেই পারে, যেহেতু আমরা কাজ করার চেষ্টা করছি। চুপ করে আমরা বসে থাকলে আপনারা আমাদের কোনো ভুলই পাবেন না। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চেয়ারম্যান ইউনুসুর রহমান বলেন, আমাদের হতাশা কাটিয়ে উঠতে হবে, খুব শিগগিরই আমরা (পুঁজিবাজার) ভালোর দিকে যাব এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহীম বলেন, আমাদের হতাশ হলে চলবে না, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমরা এগিয়ে চলেছি। আমাদের স্বপ্ন পূরণের মূল লক্ষ্য হবে পুঁজিবাজার। গতকাল অর্থসূচক ক্যাপিটাল মার্কেট এক্সপো-২০২৩-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, দেশ যখন অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে তখন একটি গোষ্ঠী ষড়যন্ত্র করছে। মিথ্যা তথ্য দিয়ে গুজব ছড়াচ্ছে। মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। আর সেই গোষ্ঠীই পুঁজিবাজার নিয়েও বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। তারা মিথ্যা তথ্য দিয়ে পুঁজিবাজারকে পেছনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। আমরা আশা করছি, এ সংকট কাটিয়ে পুঁজিবাজার ঘুরে দাঁড়াবে, বাজার ভালো হবে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, পুঁজিবাজার থেকে ৫০ শতাংশ অর্থায়ন করা প্রয়োজন। এখান থেকে বেশি অর্থের জোগান করতে পারলে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারিত হবে। ক্রাইসিসের মধ্যেও আমাদের রপ্তানি বেড়েছে। পুঁজিবাজার ঘুরে দাঁড়াবে, আমরা সেই আশা করি। উন্নয়নের সব ক্ষেত্রেই শিক্ষিত জাতি দরকার। সেই সঙ্গে শিক্ষিত বিনিয়োগকারী প্রয়োজন।
বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেছেন, সময় ও মানবসম্পদের কারণে পুঁজিবাজারের এত সুপারভিশন করা সম্ভব হয় না। তারপরও আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি ডাবল গতিতে কাজ করার। তারপরও আমাদের কিছু ভুলত্রুটি হতেই পারে, যেহেতু আমরা কাজ করার চেষ্টা করছি। চুপ করে আমরা বসে থাকলে আপনারা আমাদের কোনো ভুলই পাবেন না।
তিনি বলেন, আমাদের পুঁজিবাজার শিক্ষার গুরুত্বটা অনেক বেশি। এই বাজারে বুদ্ধিমান লোক বুদ্ধি খাটিয়ে কেনাবেচা করে। যিনি বুদ্ধি না খাটিয়ে কেনাবেচা করেন তার অর্থ-সম্পদ বুদ্ধিমান লোকের কাছে চলে যাবে।
সুতরাং আমরা বারবার বলছি, পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ শিক্ষার গুরুত্ব অনেক। বিনিয়োগের ওপর আপনার যদি শিক্ষা না থাকে তাহলে সম্পদ ভুল জায়গায় বিনিয়োগ করে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
তিনি বলেন, আমরা নতুন নতুন প্রডাক্ট পুঁজিবাজারে নিয়ে আসছি। এটা বিশ্বের সব পুঁজিবাজারে রয়েছে। সেটার ব্যাপারে আমাদের উদ্যোগকে অনেক সময় বাধা দেয়া হচ্ছে। আমি মনি করি একটি পূর্ণাঙ্গ পুঁজিবাজারের জন্য যা যা প্রয়োজন তা থেকে আমরা অনেক পিছিয়ে আছি। সেটা আমাদের পুঁজিবাজারে আনা দরকার এবং সেটা আমরা আনব। আর কাজ করতে গেলে আমাদের ভুলত্রুটি হোক বা না হোক, সমালোচনা হবেই। তারপরও এর রেজাল্ট আপনারা দুই থেকে তিন বছর পর পাবেন। তখন পুঁজিবাজারে শিক্ষিত বিনিয়োগকারী এলে রেজাল্ট সব থেকে ভালো পাওয়া যাবে।
অনুষ্ঠানে ডিএসই চেয়ারম্যান বলেন, করোনা মহামারি ও ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আমরা কিছুটা ধাক্কা খেয়েছি। তবে পৃথিবীর অন্যান্য দেশের তুলনায় আমরা ক্ষতিগ্রস্ত কম হয়েছি। পুঁজিবাজার ৯০ সাল থেকে ওপরের দিকেই যাচ্ছেÑমাঝে কিছু আপডাউন হয়েছে; তবে এই সময়ের মধ্যে অনেক কাজ হয়েছে, সুতরাং আমাদের হতাশা কাটিয়ে উঠতে হবে, খুব শিগগিরই আমরা ভালোর দিকে যাব বলে তিনি উল্লেখ করেন।
সিএসই চেয়ারম্যান বলেন, পুঁজিবাজার সবসময় উত্থান ও পতনের মধ্য দিয়ে যায়। এটা একটি মার্কেট, সেটা বুঝেই আমাদের বিনিয়োগ করতে হবে। আমাদের হতাশ হলে চলবে না, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমরা এগিয়ে চলেছি। আমাদের স্বপ্ন পূরণের মূল লক্ষ্য হবে পুঁজিবাজার।
অনুষ্ঠানে ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ডিবিএ) প্রেসিডেন্ট রিচার্ড ডি রোজারিও, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য সচিব ও ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ডের (সিএমএসএফ) চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমানের উপস্থিতিতে সভাপতিত্ব করেন অর্থসূচক সম্পাদক ও ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্ট ফোরামের (সিএমজেএফ) সভাপতি জিয়াউর রহমান।