কুষ্টিয়ায় ফুলের চারা বিক্রি বেড়েছে

কুদরতে খোদা সবুজ, কুষ্টিয়া: কুষ্টিয়ায় নার্সারিগুলোতে শীতকালীন ফুলের চারা বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নার্সারিগুলাতে ফুলের চারার বিক্রি বেড়েছে। ফলে শীতকালীন এসব ফুলের চারা পাইকারি ও খুচরা বিক্রি করে লাভের মুখ দেখছেন নার্সারি ব্যবসায়ীরা।

জেলার কয়েকটি নার্সারি ঘুরে দেখা যায়, নার্সারিগুলোতে শীতকালীন বিভিন্ন ফুলের চারা বিক্রি করা হচ্ছে। এর মধ্যে গোলাপ, ডালিয়া, চন্দ্রমল্লিকা, কসমস, সিলভিয়া, ক্যালন্ডুলা, পাপিয়া, সূর্যমুখী, জারবরা, গ্ল্যাডিওলাস, পান চাটিয়া, দেশি গাঁদা, রক্ত গাঁদা, হলুদ লাল মিশানো জাম্বা গাঁদা, বড় ইনকা গাঁদা, ছাট চায়না গাঁদা, টগর, জারবারা, পিটুনিয়া, গেজনিয়া, ভারবিনা প্রভতি।

মিরপুর জিয়া সড়কসংলগ্ন নার্সারি ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম বলেন, এবার শীত মৌসুমে আড়াই বিঘা জমিতে প্রায় ৩০ প্রজাতির শীতকালীন বিভিন্ন ফুলের চারা বিক্রি করা হয়েছে। এর মধ্যে হাইব্রিড জাতের গাঁদা, রক্ত গাঁদা, কুইন সুপার গাঁদা, বারমাসি গাঁদা, গোলাপ, ডালিয়া, চদ্রমল্লিকা, কসমস, সিলভিয়া, ক্যালন্ডুলা, পাপিয়া, সূর্যমুখী, জারবরা, গ্ল্যাডিওলাস, পানচাটিয়া, টগর ফুলের চারা বিক্রি করা হচ্ছে।

এছাড়া হাইব্রিড জাতের ডালিয়া খুচরা ৪০ টাকা, চন্দ্রমল্লিকা ৩০ টাকা, ক্যালন্ডুলা হাইবিক্রেট ২০ টাকা, দেশি ক্যালেন্ডুলা ১০, জিনিয়া ২০ টাকা, ফ্লাস ১০০ টাকা, গ্যাজোনিয়া ৪০ টাকা, ডাইনথাজ ২০, রঙ্গন ৫০ টাকা, দোপাটী ১০, স্টার ২০, পাপিয়া ২০, সিলভিয়া ২০, ফায়ার বল ১০০, অপূর্বিয়া ৫০ টাকা, পানচাটিয়া ৫০ টাকা, রক্তজবা ১০ টাকা, চায়না টগর ২০ টাকা, কসমস ১০ টাকা করে বিক্রি করা হচ্ছে।

হাইব্রিড গোলাপের মধ্যে তাজমহল গোলাপ খুচরা ১০০ টাকা, রানী  গোলাপ ৫০ টাকা, বিশ্ব সুন্দরী গোলাপ ১০০ টাকা, ইরানি গোলাপ ৫০ টাকা, কাঁচা হলুদ, ঘিয়া, সাদা, জরিনা গোলাপ প্রকারভেদে একশ টাকা করে বিক্রি করা হচ্ছে। এছাড়া দেশি জাতের গোলাপ ২০ টাকা দরে খুচরা বিক্রি করা হচ্ছে।

নার্সারির মালিক কবির বলন, শীতকালীন এসব ফুলের চারা ও বিজ যশোর গদখালী, ঝুমঝুমপুর, বাসুদবপুর। বগুড়ার মহেস্তান গড়, বরিশাল থেকে সংগ্রহ করা হয়।

তিনি আরও বলেন, বছরের অন্যান্য সময় ফুলের চারা তেমন বিক্রি হয় না। তবে শীত মৌসুমে ফুলের চারা বিক্রি হয় বেশি। অক্টোবর থেকেই ফুলের চারার জন্য জায়গা প্রস্তুত শুরু হয়। এরপর চার মাস শীতকালীন ফুল বিক্রি হয়।

মিরপুর জিয়া সড়ক অবস্থিত এস আর গার্ডেনের মালিক এ রহমান জানান, শীতকালীন ফুলের চারা ও বিজ বাইরে থেকে সংগ্রহ করতে হয়। এরপর সেগুলো নার্সারিতে রোপণের পর পাইকারি ও খুচরা বিক্রি করা হয়।

তিনি আরও জানান, প্রায় চার মাস শীতকালীন ফুলের চারা বেচাবিক্রি হয়। এ বছর ফুলের চারার বেশ চাহিদা রয়েছে। প্রতিদিন আমার নার্সারিত চারজন শ্রমিক কাজ করে। ফুলের চারা বিক্রি করতে কষ্ট করতে হয় না। নার্সারিতে এসে ব্যাপারীরা ফুলের চারা কিনে নিয়ে যায়। আবার খুচরাও বিক্রি করা হয়।

নার্সারিতে কর্মরত শ্রমিক টুটুল মিয়া জানান, নার্সারিতে সারা বছরই কাজ করি। প্রতিদিন গাছের জায়গা প্রস্তুত, চারা তোলা, গাছের চারা লাগানো থেকে শুরু করে সব কাজ করতে হয়। এখান থেকে যা আয় হয় তা দিয়েই সংসারের খরচ মেটায়।

ফুলের চারা খুচরা বিক্রতা সাগর আহমেদ জানান, আমরা নার্সারি থেকে পাইকারি ফুলের চারা সংগ্রহ করে বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করি। বিক্রি ভালো হলে লাভ বেশি হয়। বিক্রি খারাপ হলে লাভ কমে যায়। তবে প্রতিদিন ফুলের চারা বিক্রি কর দুইশ থেকে পাঁচশ টাকা পর্যন্ত লাভ থাকে।

তিনি আরও জানান, সবকিছুর দাম বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ফুলের চারার দামও বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে আগের তুলনায় লাভ অনেক কমে গেছে। এখন আর বেশি দামে মানুষ ফুলের চারা কিনতে চাই না।

নার্সারিতে ফুলের চারা কিনতে আসা স্থানীয় স্কুল শিক্ষক আবুল কাশেম বলেন, স্কুলের আঙ্গিনায় শীতকালীন বিভিন্ন প্রজাতির ফুলগাছের চারা রোপণ করেছি। এতে স্কুলের সুন্দর্য বৃদ্ধি পাচ্ছে।

জেলা নার্সারি মালিক সমিতির সেক্রেটারি আশরাফুল গণি সান্টুু বলেন, কুষ্টিয়া জেলায় প্রায় ৪১টি নার্সারি রয়েছ। এসব নার্সারিতে বিভিন্ন ফুল, কাঠ ও ফলের চারা উৎপাদন করা হয়। তবে নার্সারি মালিকরা তেমন কোনো সরকারি সুযোগ-সুবিধা পায় না।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, কুষ্টিয়ায় অনেক বেসরকারি নার্সারি রয়েছে। তবে সেগুলা কৃষি বিভাগের আওতার বাইরে। জেলার একটি সরকারি নার্সারি রয়েছে। সেখানে বিভিন্ন জাতের চারা উৎপাদন করা হয়।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০