আলঝেইমার রোগীর প্রতি যত্নবান হোন

আলঝেইমার হলো ডিমেনশিয়ার একটি রূপ। এটি এক ধরনের মস্তিষ্কের ক্ষয়জনিত রোগ। মনে রাখা দরকার, এতে আক্রান্ত রোগী অসংলগ্ন আচরণ করলেও এটি মানসিক রোগ নয়। এ রোগে মস্তিষ্কের কোষগুলো ধীরে ধীরে ক্ষয় হয় বা মারা যায়। সাধারণত ৬৫ বছর বা তার বেশি বয়সীদের আলঝেইমার হতে দেখা যায়। আবার কখনও কখনও অপেক্ষাকৃত কম বয়সীদের মধ্যেও এ সমস্যা দেখা যায়। আলঝেইমার রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা প্রথমে বিভ্রান্ত হন এবং অনেক কিছু ভুলে যেতে শুরু করেন। ক্রমে এটি বাড়তে থাকে; দিন দিন অবস্থা আরও খারাপ হয়।

কারণ: আলঝেইমার রোগের সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ এখনও অজানা। তবে ধারণা করা হয়, আক্রান্ত ব্যক্তিদের মস্তিষ্কে অ্যামিলয়েড বিটা নামক একধরনের প্রোটিন উৎপন্ন হয়, যা পরবর্তী সময়ে মস্তিষ্কের ভেতর রক্তকণিকায় দলা পাকিয়ে অ্যামিলয়েড চাপড়া গঠন করে। এই অ্যামিলয়েড চাপড়াই মূলত মস্তিষ্কের কোষ বা সেলের মৃত্যুর জন্য দায়ী।

লক্ষণ: আলঝেইমারের অন্যতম লক্ষণ হলো কোনো কিছু মনে রাখতে না পারা বা চিনতে না পারা। মনের ভাব প্রকাশ করতে গিয়ে সঠিক শব্দ খুঁজে না পাওয়া। একই প্রশ্ন বারবার জিজ্ঞেস করা কিংবা একই কথা বহুবার বলা। নিজের প্রয়োজনীয় জিনিস কোথায় রাখা হয়েছে, তা ভুলে যাওয়া বা এক স্থানে রেখে অন্যত্র খোঁজা। পরিচিতদের নাম ভুলে যাওয়া এবং পরিচিত স্থান চিনতে না পারা। এ ছাড়া সামাজিকভাবে নিজেকে গুটিয়ে ফেলা, অস্বস্তি, ঘুমের সমস্যা, আক্রমণাত্মক হওয়া, বিভ্রান্তি, কিছু চুরি হয়ে গেছে বলে ধারণা করা ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দেয়।

চিকিৎসা: আলঝেইমার রোগ নিরাময়ের কোনো উপায় এখনও নেই। তবে চিকিৎসকেরা নির্দিষ্ট কিছু ওষুধ ও পরামর্শ দিয়ে থাকেন, যাতে আচরণগত সমস্যাগুলো কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আনা যায়। এর মাধ্যমে আক্রান্ত ব্যক্তির জীবনমান উন্নত করা সম্ভব। রোগীর প্রতি সহানুভূতিশীল আচরণ করতে হবে এবং যত্ন নিতে হবে। কারণ, তারা নিজেদের যত্ন নিতেও ভুলে যান। কোনোভাবেই তাদের প্রতি অবহেলা করা যাবে না।

অধ্যাপক ডা. হারাধন দেবনাথ

নিউরোসার্জারি বিভাগ, বিএসএমএমইউ

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০