নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের পুঁজিবাজারে সূচক কমার মধ্য দিয়ে গতকাল বুধবারের লেনদেন শেষ হয়েছে। তবে সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে লেনদেন আগের দিনের তুলনায় বেড়েছে। এদিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিটদর অপরিবর্তিত ছিল। গতকাল আইটি খাতে বিনিয়োগকারীদের মুনাফা সংগ্রহের চাপ বেশি ছিল। ফলে খাতটি লেনদেনের শীর্ষে থাকলেও শেয়ারদর কমেছে। এর আগের একাধিক কার্যদিবসে খাতটিতে লেনদেন বেশি হওয়ার সঙ্গে শেয়ারদর বেড়েছিল। যে কারণে গতকাল লেনদেনের শীর্ষে থাকার পরও শেয়ারদর কমার বিষয়টিকে মুনাফা সংগ্রহ বলছেন সংশ্লিষ্টরা।
এছাড়া এদিন বিনিয়োগকারীদের বেশি আগ্রহ ছিল বিমা খাতের শেয়ারে। এতে খাতটির শেয়ারদর সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। এরপর দর বৃদ্ধির তালিকায় ছিল সিরামিক, ট্যানারি, ব্যাংক খাতের শেয়ার। গতকাল তিন খাতের শেয়ার ছাড়া বাকি সব খাতের শেয়ারদর কমেছে।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গতকাল বিমা খাতের শেয়ারদর বেড়েছে শূন্য দশমিক ৭০ শতাংশ। এদিন খাতটিতে মোট ৫৬টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে। লেনদেন হওয়া শেয়ারের মধ্যে ২৮টির দর বেড়েছে এবং ২১টি কোম্পানির শেয়ারদর কমেছে। এরপরের অবস্থানে থাকা সিরামিক, ট্যানারি এবং ব্যাংক খাতের শেয়ারদর বেড়েছে শূন্য দশমিক ৩০ শতাংশ। সিরামিক খাতে মোট ৫টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে। লেনদেন হওয়া শেয়ারের মধ্যে ১টির দর বেড়েছে এবং ২টির কমেছে ও ২টি শেয়ারের দর অপরিবর্তিত ছিল। ট্যানারি খাতে লেনদেন হওয়া ৬টি কোম্পানির মধ্যে ১টি দর বেড়েছে এবং ৪টির দর কমেছে। ব্যাংক খাতে লেনদেন হওয়া ৩৪টি কোম্পানির মধ্যে ৪টির দর বেড়েছে এবং ৩টির দর কমেছে ও বাকি কোম্পানির শেয়ারদর অপরিবর্তিত ছিল। এছাড়া টেলিকমিউনিকেশন, মিউচুয়াল ফান্ড এবং বিবিধ খাতে শেয়ারদর বৃদ্ধির বা কমার কোনো পরিবর্তন হয়নি।
এদিকে গতকাল বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ কম থাকায় ভ্রমণ খাতে শেয়ারদর সবচেয়ে বেশি কমেছে। খাতটিতে শেয়ারদর কমেছে ৩ দশমিক ৮০ শতাংশ। এর পরের স্থানে থাকা সেবা ও আবাসন খাতে ৩ দশমিক ৭০ শতাংশ শেয়ারদর কমেছে। ৩ দশমিক ২০ শতাংশ শেয়ারদর কমে তৃতীয় স্থানে ছিল কাগজ ও মুদ্রণ খাত। এদিন লেনদেনে শীর্ষে থাকা আইটি খাতের শেয়ারদর কমেছে ১ দশমিক ৮০ শতাংশ।
অপরদিকে গতকাল লেনদেনের দিক থেকে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে আইটি খাতে। খাতটিতে গতকাল ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৭ দশমিক ১০ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। এরপর দ্বিতীয় স্থানে থাকা জীবন বিমা খাতে ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৩ দশমকি ৪০ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। তৃতীয় স্থানে থাকা ওষুধ ও রসায়ন খাতে ডিএসইর মোট লেনদেনের ১২ দশমিক ৮০ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। ১০ দশমিক ৯০ শতাংশ লেনদেন হওয়া বিবিধ খাত রয়েছে চতুর্থ স্থানে।
ডিএসইতে গতকাল ৯৩৪ কোটি ২৯ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে, যা আগের কার্যদিবস থেকে ৩৩ কোটি ৮১ লাখ টাকা বেশি। এর আগেরদিন লেনদেন হয়েছিল ৯০০ কোটি ৪৮ লাখ টাকার।
এদিন ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৪ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৬২৫৮ পয়েন্টে। ডিএসইর অপর সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক ৪ পয়েন্ট এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৫ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১৩৬৭ পয়েন্টে এবং ২২১০ পয়েন্টে। ডিএসইতে ৩৬৮টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ারদর বেড়েছে ৪৯টির বা ১৩ দশমিক ৩২ শতাংশের, কমেছে ১৩৮টির বা ৩৭ দশমিক ৫০ শতাংশের এবং ১৮১টির বা ৪৯ দশমিক ১৮ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিটদর অপরিবর্তিত রয়েছে।
অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৪৫ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৮৪৮৪ পয়েন্টে। সিএসইতে ২২১টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৪২টির দর বেড়েছে, কমেছে ৮২টির এবং ৯৭টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। সিএসইতে ১৭ কোটি ৯০ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।