শাকিল আহমেদ, নোয়াখালী:নোয়াখালী সিভিল সার্জন অফিসের প্রধান সহকারী আবু তাহেরের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম আর দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে, বিভিন্ন হাসপাতাল মালিকদের জিম্মি করে টাকা আদায় আর জনবল নিয়োগ দেয়ার নামে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন লাখ লাখ টাকা।
জানা যায়, নোয়াখালী সিভিল সার্জন অফিস থেকে ২০২১ সালের ১০ নভেম্বর তাকে বদলি করা হয় বেগমগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। কিন্তু সেখানে গিয়ে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেন তিনি। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ওষুধের দোকান দেয়ার নামে ১৭ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠে তার বিরুদ্ধে। এ ছাড়া অফিসে অনুপস্থিত থাকতেন প্রায় প্রতিদিন। যে কারণে নোয়াখালী সিভিল সার্জন অফিস থেকে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ে তার অননুমোদিত হাজিরা খাতা পাঠানো হয়।
এমন বিভিন্ন অভিযোগ থাকার পরও স্থানীয় আবদুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজে তার বদলির আদেশ হলেও কোনো এক অদৃশ্য কারণে তাকে আবারও নোয়াখালী সিভিল সার্জন অফিসের প্রধান সহকারী হিসেবে বদলি করা হয়। এতে করে ফুঁসে উঠেছে সেবাপ্রার্থী সাধারণ মানুষ এবং অফিসে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সবার একই প্রশ্ন, তার খুঁটির জোর কোথায়? শুধু তাই নয়, গত বছর তার বদলি ঠেকাতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহেদ মালেক এবং স্থানীয় সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরীর স্বাক্ষর জাল করার অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে সেসময় স্থানীয় সংসদ সদস্যের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এই স্বাক্ষর তার নয় বলে জানান।
এ বিষয়ে স্থানীয় গণমাধ্যম সেসময় তার দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এরপর চট্টগ্রাম বিভাগীয় মহাপরিচালকের কার্যালয় থেকে তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কিন্তু সেই তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন আজো আলোর মুখ দেখেনি।
জেলার স্বাস্থ্য খাতে জনবল নিয়োগে অর্থের লেনদেন ও প্রতারণার অভিযোগ অনেক আগে থেকেই রয়েছে আবু তাহেরের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি এ বিষয়ে তার অবৈধ অর্থ লেনদেনের কথপোকথনের একটি ভাইরাল হওয়া কল রেকর্ড হাতে আসে। সেখানে আবু তাহের এক যুবককে আউটসোর্সিংয়ে নিয়োগের বিনিময়ে তাকে অর্থ সংগ্রহ করে দেয়ার অনুরোধ জানান। এ কথপোকথনের মাধ্যমে অবৈধ অর্থ লেনদেনের মাধ্যমে আউটসোর্সিংয়ে নিয়োগের বিষয়টি স্পষ্ট প্রকাশ পায়।
নোয়াখালী জেলা সিভিল সার্জন ডা. মাসুম ইফতেখার জানান এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা করা হবে।