শেয়ার বিজ ডেস্ক: প্রচণ্ড ঠাণ্ডা সঙ্গে বাতাস, কখনও আবার বৃষ্টিÑএমন প্রতিকূল আবহাওয়ায় তুরস্ক-সিরিয়ায় গত সোমবার ঘটে যাওয়া ভূমিকম্পে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে। ধবংসস্তূপ থেকে গত চার দিনে অনেককে জীবিত বের করে আনা গেলেও সময় বাড়ার সঙ্গে তা ক্ষীণ হয়ে আসছে। বেশিরভাগই উদ্ধার হচ্ছে মৃতদেহ। গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত তুরস্ক ও সিরিয়ায় প্রাণহানি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২১ হাজার ৫১ জনে। এর মধ্যে জাতিসংঘ সতর্ক করেছে, দুর্যোগের পূর্ণ মাত্রা এখনও অস্পষ্ট। খবর: বিবিসি, আলজাজিরা।
৭.৮ মাত্রার শক্তিশালী কম্পনের ১০০ ঘণ্টা পার হয়েছে। প্রাণের সন্ধানে ধ্বংসস্তূপে তল্লাশি চলছে উদ্ধারকারীদের। বৈরী আবহাওয়া আর খাবার বা পানি ছাড়া ধ্বংসস্তূপে এতক্ষণ টিকে থাকা প্রায় অসম্ভব। তুর্কি প্রেসিডেন্ট এ ভূমিকম্পকে ‘শতাব্দীর বিপর্যয়’ বলে অভিহিত করেছেন। উদ্ধার তৎপরতায় কিছুটা ধীরগতির কথা নিজে স্বীকার করে নিয়েছেন প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে তিনি বলেন, বিপর্যয়কর ভূমিকম্প তাৎক্ষণিকভাবে সামাল দেয়া অসম্ভব ছিল।
এরই মধ্যে অনেক দেশ থেকে আসছে ত্রাণ ও উদ্ধারকারী দল। দেশটির মৌলিক অবকাঠামো পুনর্নিমাণ ও ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় তুরস্ককে তাৎক্ষণিকভাবে ১৭৮ কোটি ডলার সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বিশ্বব্যাংক।
এদিকে জাতিসংঘের প্রধান আন্তোনিও গুতেরেস সতর্ক করে বলেন, বিপর্যয়ের সম্পূর্ণ মাত্রা এখনও আমাদের চোখের সামনে উšে§াচিত হচ্ছে, বিশেষ করে সিরিয়ায় দীর্ঘস্থায়ী গৃহযুদ্ধ দেশটিকে ধ্বংস করেছে, সেখানেও ভূমিকম্পের তাণ্ডব লেগেছে। গত বৃহস্পতিবার সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে প্রথম মানবিক সহায়তা ঢুকেছে। বিদ্রোহী অধ্যুষিত ইদলিবের বাব আল-হাওয়া ক্রসিং দিয়ে জাতিসংঘের সহায়তা পৌঁছায়।
১৯৯৯ সালে তুরস্কের উত্তরপশ্চিমাঞ্চলে ভয়াবহ ভূমিকম্পের আঘাতে ১৭ হাজার মানুষ মারা গিয়েছিলেন। এবারের ভূমিকম্প আগের পরিসংখ্যাকেও এরই মধ্যে ছাপিয়ে গেছে। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) বলেছে, সোমবার তুরস্কে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পের পর অন্তত ১০০টি আফটার শক হয়েছে।
এদিকে সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের আলেপ্পোর জিনদায়ার্স শহরে ভয়াবহ ভূমিকম্পে ধ্বংসস্তূপে জন্ম নেয়া মেয়েশিশুটির নাম রাখা হয়েছে ‘আয়া’। তার জন্য একটি ঘরও বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। সোমবার স্মরণকালের ভয়াবহ ভূমিকম্পে শিশুটি তার মা-সহ তিন ভাইবোনকে হারিয়েছে।
আত্মীয়রা যখন শিশুটিকে উদ্ধার করে তখনও মায়ের সঙ্গে নাড়ির বন্ধন ছিল। ভূমিকম্পে মায়ের মৃত্যু হয়। কান্নার শব্দ পেয়ে শিশুটিকে ওই অবস্থাতেই দ্রুত হাসপাতালে নেয়া হয়। এরই মধ্যে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছে নবজাতক শিশুটি।