তুহিন ইসলাম, মেহেরপুর: বসন্তের আগমনে ঘ্রাণ ছড়াচ্ছে আমের মুকুল। শীতের শেষে বসন্তের শুরুতে মেহেরপুরের প্রকৃতি যেন সেজেছে তার অপরূপ সৌন্দর্যে। চারদিকে ফুলে ফুলে যেমন ভরে যাচ্ছে, আমের মুকুলও ছড়াচ্ছে ঘ্রাণ। শহর থেকে গ্রাম বিভিন্ন স্থানে বিপুল পরিমাণে আমের মুকুলের সমারোহ ঘটছে। মুকুলের ভারে গাছের ডালপালা নুয়ে পড়ছে।
জেলার ছোট-বড় গাছগুলোয় মুকুল আসতে শুরু করছে। আমের মুকুল যে পরিমাণে আসছে, অনেকে মনে করছেন এবার আমের ফলন বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, মেহেরপুর শহরের কালাচাঁদপুর, শেখপাড়া নতুন পাড়া, ফতেপুর, উজলপুরসহ বিভিন্ন স্থানে আমের বাগান মুকুলে ছেয়ে গেছে।
হলুদ বর্ণের মুকুল সূর্যের সোনালি আলোয় যেন অপরূপ রং ছড়াচ্ছে। মুকুলের সমারোহ দেখে বাগান মালিকদের মধ্যে বইছে আনন্দ। অনেকে মুকুল রক্ষা করার জন্য কৃষি অফিসে গিয়ে কর্মকর্তাদের পরামর্শ নিচ্ছেন। আবার কেউ কেউ গাছের যতেœ মনোযোগী হচ্ছেন।
আমের মুকুল আসছে, তাই এখন মৌমাছির গুঞ্জন বেড়েছে। মুকুলের মিষ্টি ঘ্রাণ যেন জাদুর মতো কাছে টানছে। গাছের প্রতিটি শাখা-প্রশাখা ভ্রমোরের ব্যঞ্জনা। আমবাগানি আব্দুল বারি বলেন, আমার সাত বিঘা আমের বাগান রয়েছে। বর্তমানে আবওহায়া অনুকূলে। সপ্তাহ খানেক আগে থেকে বাগানের আমগাছে মুকুল আসা শুরু করেছে। মুকুল আসার পর থেকে গাছের প্রাথমিক পরিচর্যা শুরু করি। এখন আমরা গাছে নিয়মিত ছত্রাকনাশক স্প্রে করছি। আশা করি, এ বছর আমের ভালো ফলন পাব।
আরেক আম বাগানের মালিক রবি বিশ্বাস বলেন, এখন আমরা গাছের পরিচর্যা করতে ব্যস্ত। নিয়মিত কীটনাশক স্প্রে করছি। গত বছরের তুলনায় চলতি বছর ফলন ভালো হবে বলে আশা করছি।
বাগানি সাইফুল ইসলাম বলেন, এ বছর আমের মুকুল তুলনামূলকভাবে বেশি হয়েছে। আমরা আশা করছি, গত বছরের তুলনায় এবার আবহাওয়া ভালো থাকলে ফলন বেশি হবে। মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ শংকর কুমার মজুমদার বলেন, মুকুলের যথাযথ পরিচর্যা না করলে মুকুল ঝরে পড়ে আমের ফলন ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। আমগাছে ফুল আসার ১৫ দিন আগে পর্যাপ্ত সেচ দিতে হবে। ফুল ফোটার সময় মেঘলা ও কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়া থাকলে বিভিন্ন রোগের আক্রমণ হতে পারে। এখন চাষিদের আমরা নিয়মিতভাবে ছত্রাকনাশক স্প্রে করতে পরামর্শ দিচ্ছে। এ ব্যাপারে কৃষকদের সতর্ক করার পাশাপাশি বিভিন্ন পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। আশা করি, এ বছর আমের ফলন ভালো হবে।