প্রতিরোধেই প্রতিকার জরায়ুমুখ ক্যানসার

নারীদের যত ধরনের ক্যানসার হয়, জরায়ুমুখ তার অন্যতম। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এটি প্রতিরোধযোগ্য। এ ক্যানসার প্রতিরোধে আছে অত্যন্ত কার্যকর টিকা এবং এটি ক্যানসার-পূর্ব অবস্থায় শনাক্তকরণ ও চিকিৎসা করা সম্ভব।

হিউম্যান পেপিলোমা ভাইরাস এ ক্যানসারের জন্য দায়ী। সাধারণত ৩৫ থেকে ৫৫ বছর বয়সী নারীরা এ রোগে বেশি আক্রান্ত হন।

ঝুঁকিতে যারা: কম বয়সে বিয়ে বা যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হওয়া। কম বয়সে সন্তান ধারণ করা, ঘন ঘন সন্তান প্রসব ও অধিক সন্তান প্রসব; দীর্ঘদিন একনাগাড়ে জš§বিরতিকরণ পিল খাওয়া। বহুগামিতা, ধূমপান। অন্যান্য যৌনবাহিত রোগে বা এইচআইভিতে আক্রান্ত। রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কম এমন নারীরাও ঝুঁকিতে।

লক্ষণ: বেশির ভাগ ক্ষেত্রে প্রাথমিক অবস্থায় উপসর্গ থাকে না। অনেক সময় শরীরে অনেকটা ছড়িয়ে যাওয়ার পর লক্ষণ প্রকাশ পেতে শুরু করে। যেমনÑ যৌনমিলনের পর যোনিপথে রক্তপাত; অনিয়মিত মাসিক, অতিরিক্ত রক্তপাত, দুই মাসিকের মধ্যে রক্তপাত। অতিরিক্ত সাদা স্রাব, দুর্গন্ধযুক্ত স্রাব বা চাল ধোয়া পানির মতো স্রাব অথবা কোনো সময় রক্তমিশ্রিত স্রাব যাওয়া; মেনোপজের পর আবার রক্তপাত। তলপেটে ব্যথা, কোমরে ব্যথা, হাড়ে ব্যথা, কাশি, কাশির সঙ্গে রক্ত যাওয়া  প্রভৃতি উপসর্গও থাকতে পারে।

এ ক্যানসার প্রতিরোধে রয়েছে তিন স্তরের প্রতিরোধব্যবস্থাÑ

প্রাথমিক প্রতিরোধ: টিকাদান। ৯ থেকে ৪৫ বছর বয়সী নারীদের এ টিকা দেয়া যায়। ১৪ বছরের কম বয়সীদের দুই ডোজ টিকায় কার্যকর প্রতিরোধ সম্ভব। ১৫ বা এর বেশি বয়সীদের জন্য রয়েছে তিন ডোজ। পাশাপাশি কম বয়সে মেয়েদের বিয়ে না দেয়া, অধিক সন্তান ধারণ না করা, যৌন ও প্রজননস্বাস্থ্য সচেতনতা, ধূমপান না করা।

দ্বিতীয় স্তরের প্রতিরোধ: ৩০ থেকে ৬৫ বছর পর্যন্ত নারীদের প্রতি তিন বছর পরপর ভায়া টেস্ট করা। জরায়ুমুখের রস নিয়ে কোনো অস্বাভাবিক কোষের উপস্থিতি আছে কি না, তা দেখার জন্য রয়েছে প্যাপ টেস্ট। ২৪ থেকে ৬৫ বছর নারীদের তিন বছর পরপর এটি করা হয়। এছাড়া রয়েছে এইচপিভি ডিএনএ টেস্ট। বর্তমান বিশ্বে এটি সবচেয়ে কার্যকর টেস্ট বলে প্রমাণিত।

তৃতীয় স্তরের প্রতিরোধ: ক্যানসার-পূর্ব অবস্থায় চিকিৎসা করা; যাতে ক্যানসার হওয়া থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।

চিকিৎসা: যারা ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের উপযুক্ত চিকিৎসার মাধ্যমে জটিলতা প্রতিরোধ করা। ক্যানসারের জন্য একটি সমন্বিত চিকিৎসা পদ্ধতির প্রয়োজন। বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসাপদ্ধতি আছে। সার্জারি, রেডিওথেরাপি, কেমোথেরাপি ও টার্গেটেড থেরাপি।

ডা. ফারহানা তারান্নুম খান

গাইনোকোলজিস্ট ও গাইনি অনকোলজিস্ট কনসালট্যান্ট

বিআরবি হাসপাতাল

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০