শান্তি, রহমত ও বরকত নিয়ে রোজার মাস আমাদের একেবারে নিকটবর্তী। এটি মুসলমানদের অন্যতম বড় ধর্মীয় উৎসব ও ইবাদত। প্রতি বছরই এ সময়টায় দেখা যায়, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের আগাম প্রস্তুতি সরূপ দোকানে কিংবা বাজারে উপচেপড়া ভিড়। এ সুযোগে অসাধু ব্যবসায়ীরা বাজারে যথেষ্ট পণ্যের বাজারজাত থাকলেও কৃত্রিম সংকট তৈরি করে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বৃদ্ধি করে দেয়। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পাওয়ার ভয়ে রমজান মাসসহ ঈদের পণ্য কিনতেও সর্বসাধারণের মাঝে প্রতিযোগিতা করতে দেখা যায়। অর্থনীতি বিশ্লেষকদের মতে, মানুষের এ সময়ে উচ্চ চাহিদা বৃদ্ধি হওয়া আর সে অনুযায়ী পণ্য সরবরাহ না করার কারণে অস্বাভাবিকভাবেই উচ্চমূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। রোজা আসা আর নিত্য পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি হওয়া এ যেন এক মিতালীর বন্ধনের ন্যায় রূপ ধারণ করেছে।
এভাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধিতে খারাপভাবে শিকার হচ্ছে মধ্যবিত্ত থেকে শুরু করে নি¤œ আয়ের মানুষ। দিনমজুরি এবং খেটে খাওয়া মানুষের জীবনযাত্রায় নাভিশ্বাস ফেলতে হচ্ছে তাদের। অথচ রোজার আগমনে জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে খাবারের পরিপূর্ণ চাহিদা ও সেবা নিশ্চিতকরণে দেশের এ লাজুক অবস্থার চিত্র একেবারেই উল্টো হওয়ার কথা ছিল। প্রতি বছর এ একই অবস্থার চিত্র কেন আমাদের দেখতে হয়? বৈশ্বিক মহামারির কারণে অনেকে তাদের কর্মসংস্থান হারিয়েছে। ডলারের দাম বৃদ্ধি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের চাহিদা অনেক বেড়ে গেছে। দেখা যায়, অসাধু ব্যবসায়ী কুচক্রমহল আর তাদের উচ্চমূল্যের আশায় পণ্য সরবরাহ বন্ধ করে দেয়াই এ অবস্থার জন্য দায়ী। তাই অসৎ ও মুনাফালোভী ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে পারলে তাদের এ সমস্যা থেকে যথাসম্ভব উত্তরণ সম্ভব। যদি পণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে যথাযথ মনিটরিং ও পর্যবেক্ষণ করা যায় তাহলে অসাধু ব্যবসায়ীরা আর সাহস করবে না। বাজারের স্বাভাবিক দাম ধরে রাখতে প্রশাসনের পাশাপাশি জনসচেতনতাও সমানভাবে জরুরি। দেশের যত অর্থনৈতিক জোন আছে সেগুলোর গতিশীলতা ত্বরান্বিত করতে হবে। দেশে শিক্ষিত বেকারদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে। নি¤œ আয়ের মানুষজনের বহুমাত্রিক সমস্যা নিরসনে সবাইকে উদ্যোগী ও সচেতন হতে হবে। তাহলেই মানুষের জীবনযাত্রা সহজ ও তার মানোন্নয়নে দেশকে আরও এগিয়ে নেয়া সহজ হবে।
মিসবাহুল ইসলাম
শিক্ষার্থী
দারুল হেদায়া ইসলামিক ইনস্টিটিউট, বারিধারা, ঢাকা