চিকিৎসায় কমিশন বাণিজ্য বন্ধ হোক

বয়সের কারণে মানুষের রোগব্যাধির সৃষ্টি হয়। রোগ ছাড়া পৃথিবীতে মানুষ নেই। নানা প্রকারের রোগের জš§ হয় মানুষের দেহে। এর জন্য পৃথিবীতে চিকিৎসাশাস্ত্র তৈরি হয়েছে। মানবসমাজের রোগব্যাধি ও স্বাস্থ্যগত সমস্যা থেকে মুক্তির জন্য চিকিৎসা বিজ্ঞানের উদ্ভব। এ লক্ষ্যে ওষুধ তৈরি হয়েছে, চিকিৎসক তৈরি হয়েছে। চিকিৎসকের সাহায্যেই মানবসমাজ রোগ থেকে পরিত্রাণ পাচ্ছে।

চিকিৎসাসেবা পেতে তুলনামূলকভাবে অতিরিক্ত অর্থ প্রয়োজন পড়ে। রাষ্ট্রীয় চিকিৎসা সুবিধা অপ্রতুল। তাছাড়া সরকারি হাসপাতালে জটিল দুরারোগ্য রোগীদের যতœসহ চিকিৎসা না পাওয়ার অভিযোগ রয়েছে। মানুষ ঘণ্টার পর ঘণ্টা দীর্ঘ লাইন ধরে সরকারি চিকিৎসা গ্রহণের জন্য ডাক্তারদের দ্বারস্থ হয়। কেউ পায়, কেউ না পেয়ে ফিরে আসে।

তবুও রোগী তার চিকিৎসা পেতে চায়। রোগের নির্ণয় আর চিকিৎসা ছাড়া বেঁচে থাকা সম্ভব নয়।

চিকিৎসার জন্য যেমন প্রচুর অর্থ প্রয়োজন হয়, আবার ভুল চিকিৎসার দৃষ্টান্তও রয়েছে। কথিত আছে, ধনবান রোগী পেলে তার যদি অর্থ খরচ করার ক্ষমতা থাকে, তাহলে ডাক্তারের আনন্দের শেষ নেই। তিনি প্রয়োজনীয়-অপ্রয়োজনীয় টেস্টের তালিকা ধরিয়ে দেন। ৪০-৫০ হাজার টাকা খরচ হয় সেসব পরীক্ষায়। সেখান থেকে বড় অঙ্কের কমিশন  পান ডাক্তার!

পরীক্ষায় পরীক্ষায় রোগীর রোগ আরও বেড়ে যায়। অথচ পরীক্ষার রিপোর্টে দেখা যায়, কোনো রোগই নেই।

মানবকল্যাণ আর সেবা দেয়ার জন্য ডাক্তারি পেশা হওয়া দরকার। রোগীকে ভালোভাবে দেখতে যথাযথভাবে সময় না দেয়া, রোগীর অর্থ থেকে ল্যাবের কাছ থেকে কমিশন খাওয়া, রোগীর সঙ্গে ভালো ব্যাবহার না করা, সরকারি চেম্বার না করে প্রাইভেট চেম্বার করা, বিদেশি হাসপাতালের সঙ্গে চুক্তি করে রোগীদের ভিন দেশে চিকিৎসার জন্য যেতে প্ররোচনা দেয়াসহ আরও অনেক অভিযোগ রয়েছে! এসব আচরণ ও মানসিকতার পরিবর্তন আদৌ কি হবে? সাধারণ মানুষের জন্য স্বাস্থ্যসেবাকে সহজ ও সুলভ করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। ডাক্তারের ফি নির্ধারণ করতে হবে জনগণের আয়ের সঙ্গে সংগতি রেখে। ল্যাবের টেস্ট তালিকা সব ল্যাবে সরকার-নির্ধারিত হতে হবে। চিকিৎসা  মানুষের মৌলিক নাগরিক অধিকার। চিকিৎসার নামে অপচিকিৎসা ও কমিশন বাণিজ্য বন্ধে সরকার কার্যকর ব্যবস্থা নেবে বলেই আমাদের প্রত্যাশা।

মাহমুদুল হক আনসারী

মুক্ত লেখক, চট্টগ্রাম

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০