ভালো শেয়ারে আস্থা রাখুন

প্রতি রবি থেকে বৃহস্পতিবার পুঁজিবাজারের বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে এনটিভি ‘মার্কেট ওয়াচ’ অনুষ্ঠানটি সম্প্রচার করে। বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ বিবেচনায় তার গুরুত্বপূর্ণ অংশ নিয়ে শেয়ার বিজের নিয়মিত আয়োজন ‘এনটিভি মার্কেট ওয়াচ’ পাঠকের সামনে তুলে ধরা হলো:

পুঁজিবাজার বিনিয়োগের অন্যতম স্থান। বিশেষ করে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের জন্য এটি আদর্শ বাজার। পুঁজিবাজারে দ্রুত বিনিয়োগ করা যায়, আবার প্রয়োজনে তা তুলে নেওয়া যায়। এখানে ভালো শেয়ার ধরে রাখলে অবশ্যই মুনাফা হবে। সেক্ষেত্রে আপনাকে ধৈর্য ধরতে হবে। মৌলভিত্তিসম্পন্ন যেকোনো শেয়ারে বিনিয়োগ করুন না কেন, তা থেকে মুনাফা পাওয়া যাবে। তবে বেশি ছোটাছুটি করলে কোনো লাভ হবে না বরং ক্ষতি হবে। গতকাল এনটিভির মার্কেট ওয়াচে এ বিষয়ে আলোকপাত করা হয়। হাসিব হাসানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আলোচক ছিলেন শেলটেক সিকিউরিটিজের সিইও মো. মঈনউদ্দিন ও পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞ এমএস সেকিল চৌধুরী।

মো. মঈনউদ্দিন বলেন, ব্যাংক খাতের শেয়ারের চাহিদা বাড়ছে। এ চাহিদার কারণে দামও বাড়ছে। অর্ধবার্ষিক প্রতিবেদনে এ খাতের বেশ কিছু কোম্পানির আয় বেড়েছে। আবার কয়েকটি ব্যাংকের আয় কমেছে। মজার বিষয় হলো, ব্যাংক খাতের সব কোম্পানির দর বাড়ছে। তিনি বলেন, যখন একটি ব্যাংকের আয় বাড়ে, ক্রেডিট বাড়ে তখন শেয়ারের দর বাড়ে। ব্র্যাক ব্যাংকের গত কয়েক বছরে আয় বেড়েছে, তাই ব্যাংকটির দরও বেড়েছে তিনগুণ।

মো. মঈনউদ্দিন বলেন, যখন একটি শেয়ারের দর স্থির থাকে, ভলিউম কম থাকে। তখন কিন্তু সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ওই শেয়ারের প্রতি নজর দেন না। যখন ওই শেয়ারের দর বাড়তে থাকে, তখন তারা শেয়ারটি পর্যবেক্ষণ করেন। দর বেড়ে আবার পড়ে যায় নাকি সেটি দেখে। যখন বাড়তে বাড়তে ২০ টাকার শেয়ার ৪০ টাকা হয়, তখন সবাই হুমড়ি খেয়ে পড়ে। যখন ভলিউম বাড়ে, তখন প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা বিক্রি করে বেরিয়ে যায়। তখন দাম আবার দুই-তিন টাকা কমে যায়। এ সময় সাধারণ বিনিয়োগকারীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। বিশেষ করে যারা লোন করে শেয়ারে বিনিয়োগ করেছেন, তারা বিক্রি করে দেন।  সেল প্রেশারে দর আরও কমে আসে। তখন আবারও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা কেনা শুরু করেন। দাম আবার বাড়তে থাকে।

খাতভিত্তিক বিনিয়োগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, একটি খাতে যখন শেয়ারের দর বাড়তে থাকে, তখন ওই খাতের সব কোম্পানির দর বাড়তে থাকে। তখন অন্য সব খাতে মন্দা থাকে। তখন বিনিয়োগকারীরা তার নিজের খাতের ওপর ভরসা রাখতে পারেন না। লোকসানে শেয়ার বিক্রি করে তেজি খাতে চলে আসেন। সবাই এটি করার কারণে দাম অনেক বেড়ে যায়। আর তখন অনেকেই মুনাফা নিয়ে বেরিয়ে যান। তখন দর পড়ে যায়। তখন কেনা ও বেচা উভয় খাতেই লোকসানে পড়েন বিনিয়োগকারী।

সেকিল চৌধুরী বলেন, পুঁজিবাজারের বাস্তবতায় বিনিয়োগের বড় জায়গা ব্যাংক। ব্যাংক খাত অনেক বেশি স্বচ্ছ। তাই এ খাতের ওপর বিনিয়োগকারীদের আস্থা একটু বেশি। এজন্য এ খাতে বিনিয়োগ আসছে। তিনি বলেন, বিনিয়োগ আসছে। এটাকে উৎসাহী করতে হবে। বিনিয়োগ ঠেকানো যাবে না। তবে বিনিয়োগকারীরা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেটি খেয়াল রাখতে হবে। বিনিয়োগকারীদের সতর্ক করতে হবে। তাদের সচেতন করতে হবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের সবচেয়ে ভালো জায়গা পুঁজিবাজার। এখানে অল্প বিনিয়োগ করে মুনাফা পাওয়া যায়। কিন্তু অন্য কোনো খাতে সেটি কঠিন। তিনি বলেন, প্রবাসীরাও এ সুযোগ নিতে পারে। একজন প্রবাসী যে একটি হোটেল, পাওয়ার প্লান্ট অথবা এয়ারপোর্টে বিনিয়োগ করতে পারছেন না। তিনি কিন্তু অনায়াসে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করতে পারেন। প্রবাসীরা একসময় আবাসন খাতে বিনিয়োগ করতেন। এখন আর সেটা লোভনীয় নেই। এখন তারা পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে পারেন। তবে বিষয়টি তাদের বোঝাতে হবে।

 

শ্রুতি লিখন: রাহাতুল ইসলাম

 

Add Comment

Click here to post a comment

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০