নিজস্ব প্রতিবেদক:‘নগদ ফাইন্যান্স পিএলসি’ নামের নতুন একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ পোস্ট অফিসের মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস প্রোভাইডার (নগদ) পরিচালনার জন্য কোনো বাধা রইল না। তবে নতুন করে নগদকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে এমএফএস লাইসেন্স নিতে হবে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী ও মুখপাত্র মেজবাউল হক।
তিনি বলেন, গতকাল রোববার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের সভাপতিত্বে বোর্ড সভায় এমন সিদ্ধান্ত হয়েছে। যদিও গত ৩০ জুলাই ‘নগদ ফাইন্যান্স পিএলসি’ নামে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের জন্য নীতিগত অনুমোদন পেয়েছিল।
প্রস্তাবিত কোম্পানিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করবেন সামিট গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান মুহাম্মদ ফরিদ খান। নগদ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুকও প্রস্তাবিত এনবিএফআইয়ের পরিচালক। এছাড়া প্রতিষ্ঠানটিতে আরও ৯ পরিচালক রয়েছেন, যাদের পরিচয় পাওয়া যায়নি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন শীর্ষ ব্যবস্থাপক বলেন, প্রধান শর্ত হচ্ছে বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহ বাড়াতে নগদ ফাইন্যান্সকে তার বিনিয়োগের ৯০ শতাংশের বেশি বিদেশ থেকে আনতে হবে।
ফাইন্যান্স ইনস্টিটিউশন অ্যাক্ট অনুযায়ী একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিশোধিত মূলধন ১০০ কোটি টাকা থাকা প্রয়োজন।
নিয়ম অনুযায়ী, একটি এমএফএস কোম্পানি নিজে থেকে থাকতে পারে না, তবে অন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা সরকারি সত্তার সহায়ক হতে হবে। উদাহরণস্বরূপ, বিকাশ ব্র্যাক ব্যাংকের একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান এবং ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের রকেট।
এ পরিস্থিতিতে যেহেতু নগদ একটি এমএফএস হিসাবে একা কাজ করতে পারে না, তাই এটি একটি নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসাবে কাজ করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে আবেদন করেছে, যার অধীনে এটি তার কার্যক্রমকে বৈধ করার জন্য একটি সহায়ক হিসাবে কাজ করবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক এমন সময়ে একটি নতুন এনবিএফআইয়ের জন্য সম্মতি দিয়েছে, যখন বিদ্যমান অধিকাংশ এনবিএফআই একটি স্যাচুরেটেড মার্কেটে টিকে থাকার জন্য লড়াই করছে। ৩৫টি এনবিএফআইয়ের মধ্যে মাত্র ১০টি সুস্বাস্থ্য নিয়ে চলছে, বাকিগুলো দুর্নীতির কারণে চরম আর্থিক সংকটে রয়েছে। এরকমই একটি এনবিএফআই হলো পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড, যা আমানতকারীদের অর্থ ফেরত দিতে অক্ষমতার কারণে বাতিল হয়ে গেছে।
বাংলাদেশ ডাক বিভাগের মোবাইল ফাইনান্সিয়াল সার্ভিস হিসেবে ‘নগদ’ যাত্রা শুরু করে ২০১৯ সালে। গ্রাহকসংখ্যার বিবেচনায় বর্তমানে ‘নগদ’-এর মার্কেট শেয়ার ৩০ শতাংশ এবং বর্তমানের এর গ্রাহকসংখ্যা চার কোটির বেশি।