নিজস্ব প্রতিবেদক: চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরে নতুন করে আরও পাঁচ পণ্য রফতানিতে ভর্তুকি বা নগদ সহায়তা দেবে সরকার। পণ্যগুলো হলো সফটওয়্যার, আইটিইএস (ইনফরমেশন টেকনোলজি ইনাবেল্ড সার্ভিস) ও হার্ডওয়্যার, সিনথেটিক ও ফেব্রিকসের মিশ্রণে তৈরি পাদুকা, অ্যাকটিভ ফার্মাসিউটিক্যালস ইনগ্রেডিয়েন্টস (এপিআই), অ্যাকুমুলেটর ব্যাটারি (এইচএস কোড-৮৫০৭.১০ ও ৮৫০৭.২) ও নারিকেল ছোবড়ার আঁশ দ্বারা উৎপন্ন পণ্য।
গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগের প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানা গেছে। বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনে নিয়োজিত সব অনুমোদিত ডিলারের কাছে পাঠানো সার্কুলারে বলা হয়েছে, দেশের রফতানি বাণিজ্যকে উৎসাহিত করতে সরকার চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বেশ কয়েকটি পণ্য রফতানি খাতে রফতানি ভর্তুকি দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে, যা ২০১৭ সালের ১ জুন থেকে ২০১৮ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত বহাল থাকবে।
প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে, চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরে সফটওয়্যার, আইটিইএস ও হার্ডওয়্যার রফতানির বিপরীতে ১০ শতাংশ নগদ সহায়তা পাওয়া যাবে, সিনথেটিক ও ফেব্রিকসের মিশ্রণে তৈরি পাদুকা রফতানিতে ১৫ শতাংশ, এপিআই রফতানির বিপরীতে ২০ শতাংশ, অ্যাকুমুলেটর ব্যাটারি রফতানিতে ১৫ শতাংশ ও নারিকেল ছোবড়ার আঁশ দ্বারা উৎপন্ন পণ্য রফতানিতে ২০ শতাংশ ভর্তুকি পাবেন রফতানিকারকরা। এ-বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি হওয়ার পর থেকে নগদ সহায়তা গ্রহণ করতে পারবেন রফতানিকারকরা।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, এর আগে ২২ পণ্য রফতানিতে ভর্তুকি বা নগদ সহায়তা দিয়ে আসছে সরকার। নতুন করে পাঁচ পণ্য যুক্ত হওয়ায় এ সংখ্যা এখন ২৭। ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জন্য রফতানিমুখী এসব পণ্যের রফতানি ভর্তুকি বা নগদ সহায়তার হার নির্ধারণ করা হয়েছে। রফতানিমুখী দেশি বস্ত্র খাতে শুল্ক বন্ড ও ডিউটি ড্র ব্যাকের পরিবর্তে চার শতাংশ নগদ সহায়তা পাবে, বস্ত্র খাতের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের অতিরিক্ত সুবিধা (প্রচলিত নিয়মের) চার শতাংশ, নতুন বাজার সম্প্রসারণে (আমেরিকা, কানাডা ও ইইউ ব্যতীত) তিন শতাংশ সহায়তা, ইউরো অঞ্চলে বস্ত্র খাতের রফতানিকারকদের জন্য বিদ্যমান চার শতাংশের সঙ্গে আরও দুই শতাংশ সহায়তা পাবে, হোগলা, খড়, আখের ছোবড়া প্রভৃতি দিয়ে হাতের তৈরি পণ্য রফতানি খাতে ২০ শতাংশ নগদ সহায়তা মিলবে, কৃষিপণ্য (শাকসবজি, ফলমূল) ও প্রক্রিয়াজাত কৃষিপণ্য রফতানি খাতে ২০ শতাংশ ভর্তুকি মিলবে, গরু-মহিষের নাড়িভুঁড়ি, শিং ও রগ (হাড় ব্যতীত) রফতানিতে ১০, হালকা প্রকৌশলপণ্য রফতানির বিপরীতে ১৫, হালাল মাংস রফতানিতে ২০, হিমায়িত চিংড়ি রফতানিতে (ক্যাটাগরি অনুযায়ী) সাত থেকে ১০ শতাংশ পর্যন্ত এবং হিমায়িত অন্যান্য মাছ রফতানিতে দুই থেকে পাঁচ শতাংশ পর্যন্ত ভর্তুকি মিলবে। চামড়াজাত দ্রব্যাদি রফতানিতে ১৫, সাভারে চামড়া শিল্পনগরীতে স্থানান্তরিত শিল্পপ্রতিষ্ঠান হতে ক্রাস্ট ও ফিনিশড লেদার রফতানির বিপরীতে ১০, জাহাজ রফতানিতে ১০, আলু রফতানিতে ২০, পেট বোতল-ফ্লেক্স রফতানির বিপরীতে ১০, ফার্নিচার রফতানিতে ১৫, শস্য ও শাকসবজির বীজ রফতানিতে ২০, পাটকাঠি থেকে উৎপাদিত কার্বন রফতানিতে ২০, প্লাস্টিকদ্রব্য রফতানিতে ১০, দেশে উৎপাদিত কাগজ ও কাগজজাতীয় দ্রব্য রফতানিতে ১০, আগর ও আতর রফতানিতে ২০ এবং পাটজাত দ্রব্যাদি রফতানিতে ক্যাটাগরি অনুযায়ী পাঁচ থেকে ২০ শতাংশ হারে রফতানি ভর্তুকি পাবেন রফতানিকারকরা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রজ্ঞাপনে আরও জানানো হয়েছে, হালকা প্রকৌশলপণ্য রফতানির বিপরীতে রফতানি ভর্তুকি দেওয়ার ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশের অধিক মূল্য সংযোজনের শর্তের পরিবর্তে ৪০ শতাংশের বেশি মূল্য সংযোজনের শর্ত প্রযোজ্য হবে। এছাড়া চামড়াজাত দ্রব্যাদি রফতানির বিপরীতে সিলিং সীমা পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে। চামড়াজাত দ্রব্যের মধ্যে ব্যাগের ক্ষেত্রে ৪৫ মার্কিন ডলার, বুট ও পাদুকা ৩৫, স্যান্ডেল ২০, মানিব্যাগ ৩০, ভ্যানিটি ব্যাগ ৩৫ ও বেল্ট ২৫ ডলার। উল্লেখ্য, এইচএস কোড বা পণ্যের বর্ণনায় একই ধরনের পণ্যের ক্ষেত্রে পণ্যটি কোন সিলিংয়ের আওতাভুক্ত, তা শনাক্ত করা সম্ভব না হলে নিম্ন সিলিংসীমার ভিত্তিতে নগদ সহায়তা হিসাবায়ন করতে হবে।
Add Comment