নিজস্ব প্রতিবেদক:‘জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২’-এর চূড়ান্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশে বর্তমান জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৯৮ লাখ ২৮ হাজার ৯১১ জন। প্রাথমিক প্রতিবেদনে এ সংখ্যা ছিল ১৬ কোটি ৫১ লাখ ৫৮ হাজার ৬১৬ জন। ‘শুমারি-পরবর্তী যাচাই’ পিইসিতে (পোস্ট ইনিউমারেশন চেক) জনসংখ্যার পরিমাণ বেশি পাওয়া গেছে। পিইসিতে প্রাপ্ত ২ দশমিক ৭৫ শতাংশ বর্ধিত সংখ্যা যোগ হয়েছে প্রাথমিক প্রতিবেদনে প্রাপ্ত সংখ্যার সঙ্গে।
গতকাল রোববার রাজধানীর এনইসি সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। এ সময় ‘জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২’-এর প্রকল্প পরিচালক দিলদার হোসেন শুমারিতে গণনা করে পাওয়া এবং পিইসির মাধ্যমে সমন্বয় করা মোট জনসংখ্যার তুলনামূলক চিত্র উপস্থাপন করেন।
পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন। আরও উপস্থিত ছিলেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ড. শাহনাজ আরেফিন এবং বিআইডিএসের মহাপরিচালক ড. বিনায়ক সেন। পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো ও বিআইডিএসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এবং ডেভেলপমেন্ট জার্নালিস্ট ফোরাম বাংলাদেশের (ডিজেএফবি) সাংবাদিকরা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সারাদেশে মোট ৪৬ লাখ ৭০ হাজার ২৯৫ জন বেশি পাওয়া গেছে। সমন্বয় করা মোট জনসংখ্যা এখন ১৬ কোটি ৯৮ লাখ ২৮ হাজার ৯১১ জন। চূড়ান্ত হিসাব অনুযায়ী মোট জনসংখ্যার ৬৮ দশমিক ৩৪ শতাংশ পল্লিতে (গ্রামে) এবং ৩১ দশমিক ৬৬ শতাংশ শহরে বাস করে।
গত বছরের ১৫ থেকে ২১ জুন বিবিএস দেশের প্রথম ডিজিটাল জনশুমারি ও গৃহগণনা পরিচালনা করে। শুমারি শেষ হওয়ার মাত্র এক মাসের মধ্যে গত বছরের ২৭ জুলাই প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। পরিসংখ্যানিক পদ্ধতি ও আন্তর্জাতিক প্রটোকল অনুযায়ী শুমারি শেষের পর গণনাকালে সৃষ্ট কাভারেজ ও কনটেন্টের (ভুল) নিরূপণের জন্য বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান ২০২২-এর অক্টোবরে স্বাধীন ও স্বতন্ত্র ‘শুমারি-পরবর্তী যাচাই’ পিইসি জরিপ পরিচালনা করে।
বিভাগভিত্তিক জনসংখ্যা পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, ঢাকা বিভাগের গণনাকৃত জনসংখ্যা ছিল চার কোটি ৪২ লাখ ১৫ হাজার ১০৭ জন; সমন্বয়কৃত জনসংখ্যা হলো চার কোটি ৫৬ লাখ ৪৩ হাজার ৯১৫ জন, যা মোট সমন্বয়কৃত জনসংখ্যার ২৬ দশমিক ৮৮ শতাংশ। সবচেয়ে কম জনসংখ্যা বরিশাল বিভাগে, মোট সমন্বয়কৃত জনসংখ্যার ৫ দশমিক ৪৯ শতাংশ বা ৯৩ লাখ ২৫ হাজার ৮১৮ জন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, চট্টগ্রামে তিন কোটি ৪১ লাখ ৭৮ হাজার ৫৮১ জন, খুলনায় এক কোটি ৭৮ লাখ ১৩ হাজার ৯৫৭ জন, ময়মনসিংহে এক কোটি ২৬ লাখ ৩৭ হাজার ৫২৪ জন, রাজশাহী বিভাগে দুই কোটি সাত লাখ ৯৪ হাজার জন বসবাস করেন। রংপুরে এক কোটি ৮০ লাখ ও সিলেট বিভাগে এক কোটি ১৪ লাখ ১৫ হাজার ২১ জন বসবাস করেন।
প্রাথমিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশে পুরুষের সংখ্যা ছিল আট কোটি ১৭ লাখ ১২ হাজার ৮২৪ জন, নারীর সংখ্যা ছিল আট কোটি ৩৩ লাখ ৪৭ হাজার ২০৬ জন এবং হিজড়ার সংখ্যা ছিল ১২ হাজার ৬২৯ জন। তবে চূড়ান্ত হিসেবে সমন্বয়কৃত পুরুষের সংখ্যা আট কোটি ৪০ লাখ ৭৭ হাজার ২০৩ জন; নারীর সংখ্যা আট কোটি ৫৬ লাখ ৫৩ হাজার ১২০ জন।
বিবিএসের প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, হিজড়া জনসংখ্যা খুব কম হওয়ায় তার এনইসি হিসাব করা সম্ভব হয়নি। এছাড়া জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২-এ ১৭ হাজার ৫০৭টি থানার ৮৫ হাজার ৯৫৭ জনের আংশিক তথ্য পাওয়া গেছে, যাদের লিঙ্গসহ অন্যান্য ব্যক্তিগত তথ্য পাওয়া যায়নি। এজন্য তাদের ব্যালেন্স পপুলেশন বলা হচ্ছে।