নিজস্ব প্রতিবেদক : বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এ সরকারের বড় দুর্বলতা হচ্ছে তারা নির্বাচিত নয়। আওয়ামী লীগ ইতোমধ্যে জনগণ থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। সে কারণেই তারা সন্ত্রাসের মাধ্যমে, মামলা-মোকদ্দমা করে, রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে, কর্মসূচিগুলোকে পণ্ড করে দিয়ে আবারও ক্ষমতায় ফিরে আসতে চায়।
ক্ষমতাসীনদের হামলায় গুরুতর আহত হয়ে রাজধানীর রামপুরার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নাটোর সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন ব্যাপারীকে গতকাল সোমবার সকালে দেখতে গিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম এসব কথা বলেন।
আবুল হোসেনের ওপর হামলার ঘটনার উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘৮ এপ্রিল নাটোরের নেতাকর্মীরা যখন কর্মসূচিতে যোগ দেয়ার জন্য আসছিলেন, তখন আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ পুলিশের ছত্রচ্ছায়ায় আক্রমণ করে। তাকে (আবুল হোসেন) একা পেয়ে কুপিয়ে হত্যা করার চেষ্টা করে। সত্যি কথা বলতে কি, পুলিশ যদি রক্ষা না করত, সে মারাই যেত। তাদের লক্ষ্যই ছিল তাকে হত্যা করা। এভাবে তারা নাটোরসহ সারাদেশে ভয়াবহ ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে।’
আওয়ামী লীগ সরকার এখন একটা সন্ত্রাসী সরকারে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, একদিকে তারা পুলিশের ছত্রচ্ছায়ায় করে, অন্যদিকে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা মারাত্মক অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে করে। সমস্যা হচ্ছে, আওয়ামী লীগের মন্ত্রীরা-এমপিরা মুখে এক কথা বলেন, কাজ করেন ঠিক উল্টো। রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে এটা করেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা স্পষ্ট করে বলেছি, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান তারা যদি না নিয়ে আসে, পদত্যাগ না করে, তাহলে এ দেশে কোনো নির্বাচন হবে না।’
এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, জার্মান গণমাধ্যম ডয়চে ভেলেতে র?্যাবের বিচারবহির্ভূত হত্যার বিষয়ে নাফিজ আলম নামের এক ভুক্তভোগী সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন। তার ভাই অভিযোগ করেছেন, পুলিশ তাকে তুলে নিয়ে গেছে। জবাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘এ ঘটনা থেকে প্রমাণিত হয়, র?্যাব এই অসাংবিধানিক ঘটনাগুলোর সঙ্গে জড়িত।
এখানে যেই কথা বলছে, তার মুখ বন্ধ করার চেষ্টা করছে। র?্যাব নয়, মূলত এর দায় সরকারের। র?্যাব হচ্ছে রাষ্ট্রের একটি প্রতিষ্ঠান, সরকারে আজ্ঞাবহ। সরকার যেভাবে চাইছে, তারা সেভাবে ব্যবহƒত হচ্ছে। সে জন্যই আমরা সরকারের পদত্যাগসহ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন চেয়েছি এবং এই বিষয়গুলো (বিচারবহির্ভূত অপরাধ) তদন্তের জন্য কমিশন গঠন করার কথা বলছি।’
সিটি নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে কি না, জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘প্রশ্নই উঠতে পারে না। আমরা কোনো ট্র্যাপে যাচ্ছি না। তাদের (সরকার) ট্র্যাপকে উল্টে ফেলে দেব।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের আন্দোলন একটাই, এই আন্দোলন হচ্ছে এই সরকারের অধীন জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে না। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া কোনো নির্বাচন হবে না। আর স্থানীয় সরকারের নির্বাচন তো আমরা অনেক আগেই বাদ দিয়েছি। এবার জনগণ কোনো ফাঁদে পা দেবে না, বিএনপিও কোনো ফাঁদে পা দেবে না।’ এ সময় বিএনপির মহাসচিবের সঙ্গে হাসপাতালে যান দলের সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার ও বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান।