স্মরণীয়-বরণীয়

লোকসংস্কৃতি ও পল্লিসাহিত্য গবেষক, শামসুজ্জামান খানের দ্বিতীয় মৃত্যুবাষিকী আজ। শামসুজ্জামান খান ‘বাংলাদেশের লোকজ সংস্কৃতি গ্রন্থমালা’ শিরোনামে ৬৪ খণ্ডে ৬৪ জেলার লোকজ সংস্কৃতির সংগ্রহশালা সম্পাদনা এবং ১১৪ খণ্ডে বাংলাদেশের ফোকলোর সংগ্রহশালা সম্পাদনা করেন। ২০০৯ সালে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক তিনি একুশে পদকে ভূষিত হন। শামসুজ্জামান খান ১৯৪০ সালের ২৯ ডিসেম্বর মানিকগঞ্জে জš§গ্রহণ করেন। মাত্র দুবছর বয়সে তিনি বাবাকে হারান। মা এবং দাদি তাকে লালন-পালন করেন। শামসুজ্জামান খান ১৯৬৩ সালে অনার্স ও ১৯৬৪ সালে এমএ ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৬৪ সালে তিনি হরগঙ্গা কলেজে বাংলা বিভাগের প্রভাষক ও পরে একই বছর জগন্নাথ কলেজে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন। ১৯৬৮ সাল থেকে ১৯৭৩ সাল পর্যন্ত কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ, ১৯৯৯ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনায় যুক্ত হন। শামসুজ্জামান খান ২০০৯ সালে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক নিযুক্ত হন। তিন দফা তিনি এ দায়িত্ব পালন করেন। তিনি জাতীয় জাদুঘরের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। শামসুজ্জামান খান কিশোরকালে গল্প ও কবিতা রচনার মধ্য দিয়ে লেখালেখি শুরু করেন। ১৯৫৭ সালে তার প্রথম লেখা ভাষা আন্দোলনের শহিদ রফিকের জীবনভিত্তিক একটি গল্প ‘লাল শার্ট’ প্রকাশিত হয় ‘আজাদ’ পত্রিকায়। তার রচিত গ্রন্থের মধ্যে; নানা প্রসঙ্গ, গণসংগীত, দুনিয়া কাঁপানো বিশ্বকাপ, মাটি থেকে মহীরুহ, বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আলাপ ও প্রাসঙ্গিক কথকতা, আধুনিক ফোকলোর চিন্তা, মীর মশাররফ হোসেন: নতুন তথ্য নতুন ভাষ্যে, ফোকলোর চর্চা, বাংলাদেশের উৎসব, বাঙালির বহুত্ববাদী লোকমনীষা, সংস্কৃতি রাজনীতি ও নববাস্তবতা উল্লেখযোগ্য । তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু রচিত অসমাপ্ত আত্মজীবনী, কারাগারের রোজনামচা, আমার দেখা নয়াচীন গ্রন্থ সম্পাদনার দায়িত্ব পালন করেন। শেকড়সন্ধানী গবেষক ছিলেন তিনি। বাংলা নববর্ষ, বাংলা পঞ্জিকা, নববর্ষের ইতিহাস, বাঙালির আত্মপ্রকাশ ও পরিচয়ে শামসুজ্জামান খান নিরন্তর কাজ করেছেন। তিনি মীর মশাররফ হোসেন স্বর্ণপদক,  একুশে পদক ও স্বাধীনতা পুরস্কার ছাড়াও অনেক পুরস্কারে সম্মানিত হয়েছেন। ২০২১ সালের ১৪ এপ্রিল তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

কাজী সালমা সুলতানা

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০