নিজস্ব প্রতিবেদক: চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের এপ্রিল মাসে দেশে মূল্যস্ফীতি সামান্য কমেছে। এই মাসে দেশে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ২৪ শতাংশ। মার্চে এর হার ছিল ৯ দশমিক ৩৩ শতাংশ। গতকাল বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) প্রকাশিত মূল্যস্ফীতির সর্বশেষ হিসাব থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। গত মাসে খাদ্যে মূল্যস্ফীতি ছিল ৮.৮৪ শতাংশ এবং খাদ্যবহির্ভূত পণ্যে মূল্যস্ফীতি ছিল ৯.৭২ শতাংশ।
এর আগে গত মার্চ মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল ৯.৩৩ শতাংশ। ২০২২ সালের এপ্রিলে দেশে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল ৬ দশমিক ২৯ শতাংশ। এর পর আগস্টে সাম্প্রতিক সময়ে দেশে সবচেয়ে বেশি মূল্যস্ফীতি ছিল। ওই মাসে মূল্যস্ফীতি বেড়ে সর্বোচ্চ ৯ দশমিক ৫২ শতাংশে উঠেছিল।
মূলত বিবিএস এখন মূল্যস্ফীতি হিসাব করছে সনাতন পদ্ধতিতে। তবে সম্প্রতি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) নির্দেশনামতে, এ নিয়মের পরিবর্তন নিয়ে কাজ করছে সংস্থাটি। বর্তমানে তারা ৩০০টি পণ্যের ওজনের ওপর ভিত্তি করে এ হিসাব করছে। নতুন পদ্ধতিতে তারা মূল্যস্ফীতির হিসাব করবে ৭২০টির পণ্যের ওপর ভিত্তি করে।
সরকারি হিসাবে মূল্যস্ফীতি কমলেও বাজারে জিনিসপত্রের দামে কোনো স্বস্তি নেই। বাজারে বিভিন্ন পণ্যের দাম বেড়েই চলেছে বলে ভোক্তারা অভিযোগ করছেন। অনেক পণ্য সরকারের বেঁধে দেওয়া দামে বিক্রি হচ্ছে না। এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে খোলা চিনির সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য কেজিতে ১০৪ টাকা আর প্যাকেটজাত চিনির দাম কেজিতে ১০৯ টাকা বেঁধে দিয়েছিল সরকার। তবে রমজান মাসে ক্রেতাদের ১২০-১২৫ টাকা কেজি দরে চিনি কিনতে হয়েছে। এই সপ্তাহে ঢাকায় প্রতি কেজি খোলা চিনি সর্বোচ্চ ১৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
বিবিএসের সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, দেশে মূল্যস্ফীতির চাপ গ্রামের তুলনায় শহরের মানুষের ওপর বেশি। এপ্রিলে শহরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৬৮
শতাংশ। এই মাসে গ্রামাঞ্চলে মূল্যস্ফীতি ছিল ৮ দশমিক ৯২ শতাংশ। এছাড়া শহরে এপ্রিলে খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি সবচেয়ে বেশি ৯ দশমিক ৯৬ শতাংশ ছিল। আর শহরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ১০ শতাংশ। গ্রামাঞ্চলে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ৮ দশমিক ৭৮ শতাংশ এবং খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৩৩ শতাংশ।
বিবিএস বলছে, মাছ, মাংস, সবজি, মসলা ও তামাকজাতীয় পণ্যের দাম কমায় খাদ্যে মূল্যস্ফীতির হার কমেছে। তবে বাড়িভাড়া, আসবাবপত্র, গৃহস্থালি, চিকিৎসাসেবা, পরিবহন ও শিক্ষা উপকরণের দাম অপরিবর্তিত আছে।
