নিজস্ব প্রতিবেদক: নিলামের কাপড় চোরাচালানে সম্পৃক্ততার অভিযোগে চট্টগ্রাম নগরে এসএ পরিবহন নামে একটি কুরিয়ার সার্ভিসের ৩ কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। তারা হলেনÑএসএ পরিবহনের চট্টগ্রাম অফিসের জেনারেল ম্যানেজার মোরশেদুল আলম চৌধুরী, খাতুনগঞ্জ শাখার ম্যানেজার মাহবুবুর রহমান ও কাজির দেউরি শাখার ম্যানেজার আবদুল করিম বাচ্চু। গত রোববার চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ ড. আজিজ আহমেদ ভুঁইয়ার আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। গতকাল সোমবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও কোতোয়ালি থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোমিনুল হাসান। তিনি বলেন, তিন আসামি উচ্চ আদালত থেকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন নিয়েছিলেন। পরে তারা রোববার জেলা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। আদালত শুনানি শেষে জামিন না মঞ্জুর করে তিনজনকে কারাগারে পাঠান।
কাস্টমস গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার একটি পোশাক কারখানার গোডাউন থেকে একটি চালান পাচার হওয়ার তথ্য পেয়ে মাঠে নামে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। নজরদারিতে তারা দেখতে পায়, একটি কাভার্ডভ্যানে করে কর্ণফুলী উপজেলায় মালামাল লোড হয়ে চালানটি সরাসরি নগরের কাজির দেউরি এসএ পরিবহনের সামনে চলে আসে। গত ২২ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ৯টায় সংস্থাটির কর্মকর্তারা চালানে থাকা মালামাল জব্দ করে। নিলামের মাধ্যমে এসব কাপড় ক্রয় করা হয়েছে বলে কাস্টমস কর্মকর্তাদের কাছে দাবি করেন চালানের মালিক নজরুল ইসলাম। জব্দ তালিকা থেকে জানা যায়, এ চালানে মোট কাপড় রয়েছে ৮ হাজার ৬১২ কেজি। এর বাজারমূল্য আনুমানিক ৫২ লাখ টাকা। নিলাম-সংক্রান্ত কাগজপত্রে দেখা গেছে, ২০২১ সালের ১৫ ডিসেম্বর নিলাম থেকে কাপড় ক্রয় করেন নজরুল ইসলাম। ১০ হাজার ৬৯৪ কেজি ওজনের চালানটি ২০২০ সালের ৬ সেপ্টেম্বর আমদানি করা হয়েছিল। কাপড়গুলো ছিল এক রঙের।
তবে অভিযানে জব্দ হওয়া কাপড়ে ২০২২ সালের সিল পাওয়া যায়। একই সঙ্গে চালানে আট রঙের কাপড় পাওয়া গেছে। এতে প্রমাণিত হয় আটক হওয়া চালান এবং কাগজ উপস্থাপন করা চালান এক নয়। আবার নগরের টেরিবাজার থেকে চালানটি লোড করা হয়েছিল বলে এসএ পরিবহনের কাগজে উল্লেখ করা হয়। তবে সিসিটিভি ফুটেজে বিশ্লেষণ করে দেখা যায়Ñগাড়িটি কর্ণফুলী থেকে লোড হয়ে চট্টগ্রামে পৌঁছায়। ৫৫ হাজার টাকা
বুকিং দিয়ে চালানটি নারায়ণগঞ্জে পাঠানোর কথা ছিল। যদিও ১৫ থেকে ১৬ হাজার টাকা ভাড়া দিয়ে সরাসরি কাভার্ডভ্যানে সহজে নারায়ণগঞ্জে পণ্য পৌঁছানো যায়। এ থেকে বোঝা যায়, এটি চোরাই মালামাল।
কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক উত্তম চাকমা বলেন, ওই ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা দায়ের হয়। রোববার জেলা জজ আদালতে মামলাটির ধার্য তারিখ ছিল। এদিন এসএ পরিবহনের ৩ কর্মকর্তা আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।