ক্রীড়া প্রতিবেদক: ২০১৫ থেকে ২০১৭ দুবছর সময়টা মোটেও কম নয়। এ সময়টায় টেস্টে দলের বাইরে ছিলেন নাসির হোসেন। কিন্তু ঘরোয়া ক্রিকেটে নিজের দক্ষতার পরিচয়টুকু ঠিকই দিয়েছেন। যা তাকে বারবার দলে ফেরাতে জোর দাবি জানিয়েছে। এই অলরাউন্ডারের ভক্তরাও যতবারই বাংলাদেশ টেস্ট খেলার সুযোগ পেয়েছে, তাকে দলে দেখার আশায়
বুক বেঁধেছেন। তবে একটু দেরিতে হলেও সে আশা পূরণ হতে যাচ্ছে নাসির ও তার ভক্তদের। দেশের মাটিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজে জাতীয় দলে ডাক পেয়েছেন তিনি।
দলে জায়গা পেয়েছেন ঠিকই; তবে তার সামনে চ্যালেঞ্জও রয়েছে। সে চ্যালেঞ্জটা হলো নিজেকে প্রমাণ করার। যতই ঘরোয়া ক্রিকেটে ভালো পারফর্ম করুক না কেন, মূল দলে সেটি করতে না পারলে তো আবারও বাদ পড়তে হতে পারে। তাই সে চ্যালেঞ্জটাকে জয় করতে নিজের সহজাত ব্যাটিংয়ের ওপরই ভরসা নাসির হোসেনের। টেস্টে সাফল্য পেতে সহজাত আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখছেন তিনি। একই সঙ্গে গুরুত্ব দিতে চান সময়ের দাবি আর দলের চাওয়াকেও। নিজের মতো করে খেলেই জায়গা পাকা করতে পারবেন বলে বিশ্বাস এ অফস্পিনিং অলরাউন্ডারের।
দলে জায়গা পেলেও নাসিরকে ব্যাট করতে হতে পারে ৬ অথবা ৭-এ। এ সময় তার পার্টনার হিসেবে একজনের বেশি বিশেষজ্ঞ ব্যাটসম্যানকে পাবেন না। এরপর খেলতে হয় টেলএন্ডারদের নিয়ে। তাই সেখান থেকে কাজটি বেশ কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। সেটি ভালোই জানেন তিনি। তাই সেভাবে নিজেকে তৈরি করেছেন এ টাইগার। নাসির জানিয়েছেন, তিনি সব পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত। গতকাল জাতীয় ক্রিকেট দলের অনুশীলন-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে এসে সে বিষয়েই কথা বললেন তিনি। নাসির বলেন, ‘আমার ধারণা যদি খেলার সুযোগ হয়, তাহলে ৬ কিংবা ৭ নম্বরে খেলবো। এ সময় আরও দু’একজন ব্যাটসম্যান থাকে। বাদবাকি যারা থাকে, তারা টেলএন্ডার। আমার সঙ্গে যখন ব্যাটসম্যান থাকে, তখন চেষ্টা করি ইনিংসটাকে বড় করার। এরপর টেলএন্ডাররা চলে এলে চেষ্টা করি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব স্কোরবোর্ডে কিছু রান যোগ করতে। আমার পরিকল্পনা এটাই থাকবে, আমি এভাবেই চিন্তা করে রেখেছি।’
অস্ট্রেলিয়ার সিরিজটা নাসিরের সামনে বিশাল সুযোগ নিজেকে দলে প্রতিষ্ঠিত করার। তাই নিজের স্বতন্ত্র ব্যাটিংটাই ধরে রেখে সুযোগ কাজে লাগাতে চান তিনি। ‘সবার সহজাত কিছু খেলা থাকে। আমরা সবাই সহজাত ক্রিকেটটাই খেলার চেষ্টা করি। চট্টগ্রামে (প্রস্তুতি ম্যাচে) বলেন, অনুশীলনে সব জায়গাতেই আমি ওভাবেই খেলার চেষ্টা করি।’
সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে নাসির যে শুধু তার ব্যাটিং নিয়েই কথা বলেছেন, তা কিন্তু নয়। সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের যথোপযুক্ত উত্তরের পাশাপাশি তিনি সাংবাদিকদের বিনোদিত করেছেন তার ‘আমুদে’ স্বভাব দিয়ে। পুরো সংবাদ সম্মেলনজুড়ে তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের হাসি-ঠাট্টাতেই মাতিয়ে রেখেছিলেন।
এক সাংবাদিক তাকে প্রশ্ন করেন, ‘দল থেকে বাদ পড়ার সময় আর এখন দলে ফেরার সময় কি কি পরিবর্তন হয়েছে?’ এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘বাদ পড়ার সময় তো আমার গোঁফ ছিল না; আর এখন গোঁফ আছে।’ এমন উত্তরে নাসিরসহ সংবাদ সম্মেলন কক্ষে উপস্থিত সবাই বেশ আনন্দ পান। এছাড়া সম্মেলন কক্ষ ত্যাগের আগে তার সামনে রাখা রেকর্ডিংয়ের জন্য সাংবাদিকদের মোবাইল ফোনগুলো দেখিয়ে ‘মিস্টার ফিনিশার’খ্যাত নাসির বলেন, ‘একটা ভালো মোবাইল ফোনও নাই যে, নিয়া যাব!’
উল্লেখ্য, এর আগে ২০১৫ সালে নাসির জাতীয় দলের সর্বশেষ টেস্টটি খেলেন দেশের মাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে।
Add Comment