নিজস্ব প্রতিবেদক: উড়োজাহাজ নির্মাণ সংস্থা এয়ারবাসের উড়োজাহাজ কিনছে বাংলাদেশের দুই এয়ারলাইন। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস ১০টি এবং ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনস দুটি উড়োজাহাজ কেনার ঘোষণা দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের মার্কেট নিয়ে নড়েচড়ে বসেছে যুক্তরাষ্ট্রের উড়োজাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িং। প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে সংবাদ সম্মেলন করে আগামী দশকে বাংলাদেশে বিমান ভ্রমণ দ্বিগুণ হওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছে তারা। একইসঙ্গে ইঙ্গিত দিচ্ছে, ছোট বহরে একইসঙ্গে বোয়িং ও এয়ারবাসের উড়োজাহাজ থাকলে পরিচালনব্যয় বাড়বে অনেক বেশি।
গতকাল বুধবার রাজধানীর একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলন করে বোয়িং। বলেন, কোনো এয়ারলাইনের বহর যদি ছোট হয় এবং সেখানে একাধিক নির্মাতার উড়োজাহাজ থাকে, তবে পরিচালন ব্যয় বাড়বে। দুই ধরনের উড়োজাহাজের জন্য আলাদা আলাদাভাবে পাইলট ও প্রকৌশলীর প্রয়োজন হবে। পাইলট ও প্রকৌশলীদের প্রশিক্ষণ খাতে ব্যয় বৃদ্ধি পাবে। উড়োজাহাজ মেরামতের জন্য আলাদা আলাদাভাবে স্পেয়ার পার্টসের প্রয়োজন হবে। কিন্তু একই প্রতিষ্ঠানের উড়োজাহাজ হলে একই প্রকৌশল পুরো বহরের রক্ষণাবেক্ষণ করতে সক্ষম হবে। একই পাইলট দিয়ে সব ধরনের উড়োজাহাজ পরিচালনায় সক্ষম হবে।
বিমানের নাম উল্লেখ না করলেও উদাহরণ দিয়ে বোয়িংয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (বিপণন) বলেন, কোনো এয়ারলাইনের বহরে ১০টি বোয়িং ৭৮৭ উড়োজাহাজ থাকলে যা খরচ হবে, বহরে পাঁচটি বোয়িং ৭৮৭ এবং পাঁচটি এয়ারবাস এ৩৫০ থাকলে খরচ আকাশচুম্বী হয়ে যাবে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশি টাকায় এয়ারলাইনসের ৬৪০ কোটি টাকা অতিরিক্ত ব্যয় হবে।
বোয়িংয়ের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০৩২ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের বার্ষিক জিডিপি পাঁচ শতাংশের বেশি হারে বাড়বে; যা বৈশ্বিক জিডিপি প্রবিদ্ধির গড়ের দ্বিগুণেরও বেশি। পাশাপাশি বিমান ভ্রমণের বার্ষিক বৃদ্ধির হার হবে প্রায় সাড়ে আট শতাংশ।
ডেভিড শাল্ট বলেন, ‘গত বছর থেকে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা শিথিল করায় বাংলাদেশে সক্ষমতা বছরে ১১ শতাংশ বেড়েছে। মধ্যপ্রাচ্য এবং ভারতে আঞ্চলিক ট্রাফিক বিবেচনায় আগামী ১০ বছরে বাংলাদেশের বিমান ভ্রমণ দ্বিগুণ হবে। দক্ষিণ এশিয়ায় আমরা দারুণ সুযোগ দেখতে পাচ্ছি। ৭৩৭ উড়োজাহাজ মতো সিঙ্গেল-আইল বিমানগুলো দক্ষিণ এশিয়ার ভবিষ্যৎ বিমান বহরের প্রায় ৯০ শতাংশ ব্যবস্থা করবে। যেখানে এই অঞ্চলের বিমান বহরের
১০ শতাংশ গঠিত হবে ৭৮৭-এর মতো প্রশস্ত বিমানের মাধ্যমে। এই দুটি বিমানের মডেলই বর্তমানে বিমান বাংলাদেশ এবং ইউএস বাংলায় আছে।’
বোয়িং কি বাংলাদেশের মার্কেট হারাচ্ছে? এমন প্রশ্নের উত্তরে বোয়িং রিজিওনাল ডিরেক্টর, কমিউনিকেশন (নর্থ ইস্ট এশিয়া কমার্শিয়াল এয়ারপ্লেন বিভাগের) কেভিন ইও বলেন, বাংলাদেশের এভিয়েশন সেক্টর অপার সম্ভাবনায় রয়েছে। আমরা দীর্ঘদিন ধরে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস ও ইউএস বাংলা এয়ারলাইনসের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক রেখে কাজ করছি। এছাড়া আমরা দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের বিমানবন্দরের ক্যাটেগরি আপগ্রেডেশনে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছি।