নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের পুঁজিবাজারে সূচক উত্থানের মধ্য দিয়ে গতকাল রোববারের লেনদেন শেষ হয়েছে। সেই সঙ্গে আগের দিনের তুলনায় টাকার অঙ্কে লেনদেন বেড়ে এক হাজার ১৫০ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। এতে লেনদেন সাত মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ হয়েছে। এদিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিটদর অপরিবর্তিত ছিল। গতকাল সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে সূচক ও লেনদেনের উত্থানে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ ও শেয়ার কেনার চাপ বেশি ছিল বিমা খাতের শেয়ারে। খাতটিতে ভর করেই বাজারে সূচক বেড়েছে বলে জানা গেছে। ফলে কয়েক দিন ধরে খাতটির দাপট বেশি হওয়ায় এ খাতের একাধিক শেয়ারদর ৪০ শতাংশের বেশি বেড়েছে, যা বিনিয়োগকারীদের চোখ রাঙাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বাজারসংশ্লিষ্টরা। অন্যদিকে এদিন বিনিয়োগকারীরা বিমুখ ছিলেন পাট খাতের শেয়ারে। এতে আলোচ্য খাতটিতে শেয়ারদর সবচেয়ে বেশি কমেছে।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গতকাল বিমা খাতের শেয়ারদর বেড়েছে ৫ দশমিক ৭০ শতাংশ। এদিন খাতটিতে মোট ৫৭টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে। লেনদেন হওয়া শেয়ারের মধ্যে ৫০টির দর বেড়েছে, চারটির দর কমেছে এবং বাকি কোম্পানির শেয়ারদর অপরিবর্তিত ছিল। দ্বিতীয় স্থানে ছিল সিমেন্ট খাতের শেয়ার। খাতটিতে দর বেড়েছে ১ দশমিক ৮০ শতাংশ। ১ দশমিক ৬০ শতাংশ শেয়ারদর বেড়ে তৃতীয় স্থানে ছিল ট্যানারি খাত। এছাড়া টেলিকমিউনিকেশন, প্রকৌশলী, ওষুধ ও রসায়ন, সিরামিক এবং জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে শেয়ারদর বৃদ্ধির বা কমার কোনো পরিবর্তন হয়নি।
এদিকে গতকাল বিনিয়োগকারীদের বিক্রির চাপ থাকায় পাট খাতের শেয়ারদর সবচেয়ে বেশি কমেছে। খাতটিতে শেয়ারদর কমেছে দুই শতাংশ। পরের স্থানে থাকা আইটি খাতে শেয়ারদর কমেছে ১ দশমিক ৩০ শতাংশ। এরপর শূন্য দশমিক ৯০ শতাংশ শেয়ারদর কমে তৃতীয় স্থানে ছিল সেবা ও আবাসন খাত।
অপরদিকে গতকাল লেনদেনের দিক থেকে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে বিমা খাতে। খাতটিতে ডিএসইর মোট লেনদেনের ৩৩ দশমিক ৪০ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা প্রকৌশলী খাতে ডিএসইর মোট লেনদেনের ১০ দশমিক ১০ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। তৃতীয় স্থানে থাকা ওষুধ ও রসায়ন খাতে ডিএসইর মোট লেনদেনের ৮ দশমিক ৮০ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। ৭ দশমিক ৪০ শতাংশ লেনদেন হওয়া খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাত রয়েছে চতুর্থ স্থানে।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ডিএসইতে এক হাজার ১৭৪ কোটি ৫৮ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। এই ধরনের লেনদেন গত ১৩৪ কার্যদিবসের মধ্যে সেরা লেনদেন হিসেবে বিবেচ্য হয়েছে। এর আগে গত বছরের ৮ নভেম্বর লেনদেন হয়েছিল এক হাজার ৪৯৪ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। এদিন ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৬১টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দর বেড়েছে ১০২টির এবং কমেছে ৭৭টির। শেয়ার পরিবর্তন হয়নি ১৮২টির। এদিন ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৪ দশমিক ১৫ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৩৩৯ দশমিক ৮৮ পয়েন্টে। এছাড়া ডিএসই-৩০ সূচক ১ দশমিক ১৯ পয়েন্ট এবং ডিএসইএস সূচক দশমিক ২৮ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ১৯৯ দশমিক ৬৯ পয়েন্টে এবং ১ হাজার ৩৭১ দশমিক শূন্য ৬ পয়েন্টে।
অপরদিকে সিএসইতে লেনদেন হয়েছে ১৯ কোটি ২৮ লাখ টাকা শেয়ার। আগের দিন ১৯ কোটি ২৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছিল। এদিন সিএসইতে লেনদেন হওয়া ২৪৭টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটদর বেড়েছে ৮৪টির, কমেছে ৫৭টির এবং পরিবর্তন হয়নি ১০৬টির।
এদিন সিএসইর প্রধান সূচক সিএএসপিআই ৪৭ দশমিক ৩৬ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৬৮৫ দশমিক ৩২ পয়েন্টে। সিএসই-৫০ সূচক ৪ দশমিক ২৪ পয়েন্ট, সিএসসিএক্স ২৫ দশমিক ৬৬ পয়েন্ট এবং সিএসআই সূচক ১ দশমিক ৩৪ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১৩ হাজার ৪১৩ দশমিক ৬৭ পয়েন্টে, ১১ হাজার ১৭৭ দশমিক ১৩ পয়েন্টে এবং ১১ হাজার ১৫১ দশমিক ৪৭ পয়েন্টে এবং ১ হাজার ১৬৯ দশমিক ২৩ পয়েন্টে। এছাড়া সিএসই-৫০ সূচক দশমিক ২৪ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩১৮ দশমিক শূন্য ৬ পয়েন্টে।