পাঠ্যবইয়ে ধূমপানের ক্ষতিকর দিক তুলে ধরুন

নিজস্ব প্রতিবেদক :‘বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস, ২০২৩’ উপলক্ষ্যে তামাকবিরোধী জাতীয় প্ল্যাটফর্ম আয়োজিত একটি সেমিনারে বক্তারা বলেছেন, বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ত্বরান্বিতকরণ এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের ক্ষেত্রে অন্যতম একটি অন্তরায় তামাক। তামাক ব্যবহারের জন্য দেশে তামাকজনিত অসংক্রামক রোগ এবং এর ফলে অপরিণত বয়সে মৃত্যু আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। তামাক সেবনজনিত রোগের চিকিৎসা বাবদ একদিকে যেমন সরকারকে স্বাস্থ্য খাতে বিপুল পরিমাণ ভর্তুকি দিতে হচ্ছে, অন্যদিকে তামাক চাষের ফলে উর্বর জমিতে খাদ্যশস্য চাষের সুযোগ কমে যাচ্ছে। 

পিকেএসএফ ভবনে গতকাল রোববার অনুষ্ঠিত সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ। সেমিনারে সম্মাননীয় অতিথি ছিলেন প্রফেসর ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত এমপি। বিশেষ বক্তা ছিলেন মাদকদ্রব্য ও নেশা নিরোধ সংস্থার (মানস) প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এবং জাতীয় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ উপদেষ্টা কমিটি ও জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ টাস্কফোর্সের সদস্য প্রফেসর ডা. অরূপ রতন চৌধুরী।  

ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত পাঠ্যপুস্তকে ধূমপানের ক্ষতিকারক দিকগুলো সম্পর্কে আরও বিশদভাবে তুলে ধরার আহ্বান জানান এবং এ তামাকের ক্ষতিকর দিক মোকাবিলায় পারিবারিক ও প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসন গড়ে তোলার ব্যাপারে জোর দেন।

ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধন প্রক্রিয়া দ্রুততম সময়ে শেষ করার পাশাপাশি আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন। তিনি তামাক রপ্তানিতে ২৫ শতাংশ শুল্ক পুনর্বহাল করার দাবি করেন।

তিনি বলেন, পিকেএসএফ বিভিন্ন কর্মসূচি ও প্রকল্পের আওতায় তামাকবিরোধী কার্যক্রম বিশেষ করে তামাকের জমিতে বিকল্প ফসল উৎপাদনের জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

ডা. অরূপ রতন চৌধুরী বলেন, ধোঁয়াযুক্ত তামাকের ব্যবহারে যিনি সরাসরি খাচ্ছেন, তার চেয়ে তার আশপাশের পরোক্ষভাবে ধোঁয়া গ্রহণকারী মানুষেরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হন। স্তন ক্যানসার এবং শিশুদের নিউমোনিয়া, ব্রংকাইটিস এবং হুপিং কাশির অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে পরোক্ষ ধূমপান। তিনি বলেন, সিগারেটের ধোঁয়ায় সাত হাজার ৩৬৫ রকমের রাসায়নিক দ্রব্য থাকে, যার মধ্যে ৭০টি রাসায়নিক কারসিনোজেনিক (মানবদেহে ক্যানসার সৃষ্টি করতে পারে এমন)।

সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য দেন পিকেএসএফের জ্যেষ্ঠ উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম তৌহিদ। সেমিনারে ‘টেকসই উন্নয়নে শক্তিশালী তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন: পরিপ্রেক্ষিত বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রজ্ঞা’র হেড অব প্রোগ্রাম হাসান শাহরিয়ার এবং ‘তামাক নয়, খাদ্য ফলাও: পিকেএসএফের প্রচেষ্টা’ শীর্ষক উপস্থাপনা প্রদান করেন পিকেএসএফের পিপিইপিপি প্রকল্পে পরিচালক ড. শরীফ আহম্মদ চৌধূরী। এছাড়া অনুষ্ঠানে ‘কৃষিজমিতে আর নয় তামাক’ শীর্ষক একটি  প্রকাশনার মোড়ক উম্মোচন করা হয়।

গোলাম তৌহিদ বলেন, পিকেএসএফের সমন্বিত কৃষি ইউনিটের মাধ্যমে কুষ্টিয়া, লালমনিরহাট ও কক্সবাজার জেলায় তামাকের পরিবর্তে বিকল্প ফসল চাষ করা হচ্ছে। এছাড়া পিকেএসএফের পিএসিই প্রকল্পের আওতায় হালদা নদীর উজানে বিদ্যমান তামাকচাষিদের বিকল্প জীবিকায়নে যুক্ত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন আয়বর্ধনমূলক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্তকরণের কাজ করা হচ্ছে। 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০