প্রতিনিধি, লালমনিরহাট: লালমনিরহাটের কালীগঞ্জের কাকিনা-মহিপুর-রংপুর আঞ্চলিক সড়ক দিয়ে ভারী ভারী যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ করেছে প্রশাসন। লালমনিরহাট থেকে রংপুরে যেতে ভারী যানবাহনগুলোকে বিকল্প পথ ব্যবহার করতে বলা হয়েছে। গত সোমবার কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) জহির ইমাম জানিয়েছেন, রোববার দিবাগত রাত থেকে এ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, পাঁচ টনের কম মালামাল পরিবহনে সক্ষম যান চলাচলে কোনো বাধা নেই। গত ২১ জানুয়ারি শেয়ার বিজে ‘তিস্তা সেতু-২ এ উত্তেজনা, ১-এর রাজস্ব ফাঁকির দায় নিচ্ছে না কেউ’ শিরোনামে বিশেষ প্রতিবেদন ছাপা হয়। তার প্রেক্ষাপটে এ সড়কে ভারী যানবাহন বন্ধ করা হয়েছে।
জানা যায়, ১২১ কোটি টাকা ব্যয়ে তিস্তা নদীর ওপর ৮৫০ মিটার দৈর্ঘ্যরে শেখ হাসিনা তিস্তা সেতুটি ২০১৮ সালের এপ্রিলে চলাচলের জন্য উš§ুক্ত করে দেয়া হয়। প্রথম ছয় মাস সেতুটির ওপর দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল করায় সেতুটি ও সংযোগ সড়ক মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়ে। ভারী যান চলাচল বন্ধ করতে ২০১৮ সালের অক্টোবরে সেতুটির সংযোগ সড়কে তিনটি ব্যারিকেড তৈরি করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। ফলে ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে সংযোগ সড়কের ওপর থেকে ব্যারিকেডগুলো তুলে ফেলায় আবারও ভারী যান চলাচল শুরু হয়। এতে প্রতিদিন শতাধিক ট্রাক এই রুটে চলাচল করছিল। বুড়িমারী স্থলবন্দর থেকে পাথরবোঝাই ট্রাক দেশের বিভিন্ন এলাকায় যাতায়াত করছিল। সে কারণে কাকিনা-মহিপুর সড়কের বেহাল দশা হয়ে গেছে। হুমকির মুখে পড়েছে শেখ হাসিনা তিস্তা সেতু।
অনুসন্ধানে জানা যায়, বুড়িমারী স্থলবন্দরে এক হাজার ৯০০ ট্রাক তালিকাভুক্ত রয়েছে। প্রায় সব ট্রাকই শেখ হাসিনা তিস্তা সেতুর ওপর দিয়ে চলাচল করছিল। এই রুটে যাতায়াত করায় ৫৫ কিলোমিটার পথ কমে আসে। এতে ১৩ থেকে ১৫ লিটার তেল সাশ্রয় হয়। আবার সেতুতে টোল দিতে হয় না। মূলত এ কারণে সড়ক দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল করতে শুরু করে। এতে একদিকে সরকার রাজস্ববঞ্চিত হচ্ছিল, অন্যদিকে সড়কের ব্যাপক ক্ষতিও হয়।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্লাহ বলেন, রোডস অ্যান্ড হাইওয়ের সড়ক আর এলজিইডির সড়কের এক নয়। রোডস অ্যান্ড হাইওয়ের সকড়ক দিয়ে ৭০-৮০ টন পাথর-বালির ট্রাক চলাচল করে। এতে সড়কটি নষ্ট হয়ে গেছে। তাই সব রকম পণ্যবোঝাই ট্রাক চলাচল বন্ধ করা হয়েছে।
