ঈদের ছুটি এক দিন বাড়ানোর দাবি যাত্রী কল্যাণ সমিতির

শেয়ার বিজ ডেস্ক: আসন্ন ঈদযাত্রায় যানজট, যাত্রী হয়রানি ও অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধের পাশাপাশি সড়ক দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি কমাতে আগামী ২৭ জুন সরকারি ছুটি ঘোষণার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।

রোববার (১৮ জুন) সকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী এ দাবি জানিয়েছেন।

তিনি বলেছেন, এবারের ঈদে ঢাকা থেকে প্রায় ৮০ লাখ মানুষ গ্রামের বাড়িতে যাবে। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি মনে করে, এবারের ঈদে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুরসহ আশপাশের অঞ্চল থেকে ১ কোটি ১০ লাখের বেশি মানুষ দেশের বিভিন্ন জেলায় যাতায়াত করবে। এছাড়াও এক জেলা থেকে অপর জেলায় আরও প্রায় ৪ কোটি মানুষ যাতায়াত করবে। এতে আগামী ২২ জুন থেকে ৮ জুলাই পর্যন্ত ঈদবাজার, গ্রামের বাড়ি যাতায়াতসহ নানা কারণে দেশের বিভিন্ন শ্রেণির পরিবহনে বাড়তি প্রায় ৮০ কোটি ট্রিপ হতে পারে।

সংবাদ সম্মেলনে মোজাম্মেল হক বলেন, ২২ জুন থেকে ঈদযাত্রা শুরু হলেও প্রধানত বেতন-বোনাস পাওয়ার পর ২৬-২৭ জুন থেকে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ লাখ মানুষ রাজধানী ছাড়বে। কিন্তু, আমাদের গণপরিবহনে সড়ক পথে ৮ থেকে ১০ লাখ, নৌপথে ৮ থেকে ১০ লাখ, রেলপথে দেড় লাখ যাত্রী ওভারলোড হয়ে যাতায়াত করার সক্ষমতা আছে। ২৭ জুন অফিস খোলা থাকায় অনেক মানুষ কর্মস্থলে আটকে যাবেন। ফলে, ২৮ তারিখ সারা দেশে সব শ্রেণির গণপরিবহনে একসাথে সব যাত্রী রাস্তায় নামলে পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে। ২৭ জুন সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হলে যাত্রীচাপ কিছুটা কমতে পারে।

যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব আরও বলেন, পশুবাহী ট্রাক ও রাস্তার ওপর গড়ে ওঠা পশুর হাটের কারণে রাজধানীতে তীব্র যানজটে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়বে ঘরমুখো মানুষ। তাই, এখন থেকে রাজধানীর সব ফুটপাত ও রাস্তা হকার ও অবৈধ পার্কিং থেকে মুক্ত করতে হবে। রাজধানী থেকে দেশের বিভিন্ন জেলায় যাতায়াতের প্রবেশদ্বারগুলো পরিষ্কার রাখা ও প্রধান সড়কে ছোট যানবাহন বিশেষ করে রিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা, ইজিবাইক চলাচল বন্ধ করতে হবে। তা না করা হলে আগামী ২৭ জুন থেকে ঈদের দিন পর্যন্ত রাজধানী অচল হয়ে যাবে।

মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কিছু অসাধু সদস্য ও পরিবহন নেতাদের চাঁদাবাজি ও বিভিন্ন টোল প্লাজার কারণে জাতীয় মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে যানজট হয়।
অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব।

তিনি বলেন, এবারের ঈদেও ট্রেনের টিকিট শতভাগ অনলাইনে দেওয়ায় যাত্রীদের কিছুটা বিড়ম্বনায় পড়ার দৃশ্য ইতোমধ্যে দেখা যাচ্ছে। আগের মতোই এ শুভ উদ্যোগে বাধা হতে পারে টিকিট কালোবাজারি ও অসাধু রেল কর্মচারীরা।

বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রুটের বিমানের টিকিট বিভিন্ন ট্রাভেল এজেন্সি দখল করে নেওয়ায় এবারের ঈদেও যাত্রীসাধারণকে কয়েক গুণ বেশি দামে কিনতে হচ্ছে।

ঈদযাত্রায় অজ্ঞান পার্টি, মলম পার্টি, টানা পার্টিসহ টার্মিনালে নানা প্রতারক চক্রের খপ্পড়ে পড়ে সর্বস্ব খুয়ে ঈদের আনন্দ মাটি হতে পারে। তাই, প্রতিটি বাস, লঞ্চ ও রেল স্টেশনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি। এছাড়া, মহাসড়কে ডাকাতি রোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানানো হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন—সংগঠনের সহ-সভাপতি তাওহিদুল হক লিটন, যুগ্ম মহাসচিব এম মনিরুল হক, প্রচার সম্পাদক মাহমুদুল হাসান রাসেল, মো. আমজাদ হোসেন প্রমুখ।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০