নিজস্ব প্রতিবেদক:দেশের পুঁজিবাজারে সূচকের নামমাত্র বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে গতকাল রোববারের লেনদেন শেষ হয়েছে। তবে আগের দিনের তুলনায় টাকার অঙ্কে লেনদেন কমে ৪০০ কোটি টাকার ঘরে রয়েছে। মুদ্রানীতি ঘোষণার এদিনে সূচকের নামমাত্র বৃদ্ধি হয়েছে, আর লেনদেন আগের দিনের চেয়ে প্রায় ৪৭ কোটি টাকা কমেছে, যা প্রায় আড়াই মাসের মধ্যে সর্বনি¤œ। এদিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর অপরিবর্তিত ছিল। গতকাল সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ থাকায় ও কেনার চাপ বেশি থাকায় শেয়ারদর বেশি বেড়েছে বিমা খাতের। অন্যদিকে এদিন বিনিয়োগকারীরা বিমুখ ছিলেন আইটি খাতের শেয়ারে। এতে আলোচ্য খাতটিতে শেয়ারদর সবচেয়ে বেশি কমেছে।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গতকাল বিমা খাতের শেয়ারদর বেড়েছে শূন্য দশমিক ৭০ শতাংশ। এদিন খাতটিতে মোট ৫৭টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে। লেনদেন হওয়া শেয়ারের মধ্যে ২৬টি কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে, ২০টির দর কমেছে এবং বাকিগুলোর দর অপরিবর্তিত ছিল। দ্বিতীয় স্থানে ছিল বিবিধ খাতের শেয়ার। খাতটিতে দর বেড়েছে শূন্য দশমিক ৬০ শতাংশ। শূন্য দশমিক ১০ শতাংশ শেয়ারদর বেড়ে তৃতীয় স্থানে ছিল সেবা ও আবাসন খাত। এছাড়া টেলিকমিউনিকেশন, ওষুধ ও রসায়ন, প্রকৌশলী এবং জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে শেয়ারদর বৃদ্ধির বা কমার কোনো পরিবর্তন হয়নি।
এদিকে গতকাল বিনিয়োগকারীদের বিক্রির চাপ থাকায় আইটি খাতের শেয়ারদর সবচেয়ে বেশি কমেছে। খাতটিতে শেয়ারদর কমেছে ১ দশমিক ৪০ শতাংশ। পরের স্থানে থাকা পাট খাতে শেয়ারদর কমেছে ১ শতাংশ। কাগজ ও মুদ্রণ খাতে শূন্য দশমিক ৬০ শতাংশ শেয়ারদর কমে তৃতীয় স্থানে ছিল।
অন্যদিকে গতকাল লেনদেনের দিক থেকে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে বিমা খাতে। খাতটিতে ডিএসইর মোট লেনদেনের ২২ দশমিক ১০ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বিবিধ খাতে ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৫ দশমিক ৩০ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। তৃতীয় স্থানে থাকা ওষুধ ও রসায়ন খাতে ডিএসইর মোট লেনদেনের ১০ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। ৮ দশমিক ৯০ শতাংশ লেনদেন হওয়া খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাত রয়েছে চতুর্থ স্থানে।
ডিএসইর তথ্য মতে, বাজারটিতে ৩৪৮ প্রতিষ্ঠানের মোট ৮ কোটি ৪৮ লাখ ৩০ হাজার ৭৪৬ শেয়ার ও ইউনিট কেনাবেচা হয়েছে। এদিন ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৪১৮ কোটি ২০ লাখ ৪২ হাজার টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৪৬৫ কোটি ৭ লাখ ২৬ হাজার টাকা। অর্থাৎ দিনের ব্যবধানে লেনদেন কমেছে ৪৬ কোটি টাকা। শুধু আগের দিনের চেয়ে লেনদেন কমেনি, বরং চলতি বছরের ১৩ এপ্রিলের পর সর্বনিন্ম লেনদেন হয়েছে। ওইদিন ডিএসইতে লেনদেন হয়েছিল ৪১৪ কোটি ১৩ লাখ ২১ হাজার টাকা।
দাম কমায় ও বিমা খাতের উত্থানের ফলে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ১ দশমিক ৪ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ২৮১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। তবে ডিএসইর অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১ দশমিক ৬৫ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৩৬৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। ডিএস৩০ সূচক দশমিক ৭৫ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ১৮৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) প্রধান সূচক ৬ পয়েন্ট কমে ১৮ হাজার ৫৫৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এদিন সিএসইতে ১৮৭টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ৪৪টির, কমেছে ৫৬টির ও অপরিবর্তিত রয়েছে ৮৭টির দাম। দিনশেষে সিএসইতে ১৩ কোটি ৭০ লাখ ৫৪ হাজার ৭৬৫ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের দিনে লেনদেন হয়েছিল ১৪ কোটি ৬২ লাখ ৬৮ হাজার ৭১৪ টাকার শেয়ার।