শেয়ার বিজ ডেস্ক: রাশিয়া ও উপসাগরীয় দেশগুলোর মন্ত্রীরা শান্তি অর্জন, নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধময় বিশ্ব গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। রাশিয়ার রাজধানী মস্কোয় এক বৈঠকের পর গালফ কো-অপারেশন (জিসিসি) ভুক্ত দেশগুলো ও রাশিয়ার যৌথ বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়। খবর:
আরব নিউজ।
জিসিসি দেশগুলো ও রাশিয়ার মধ্যে মন্ত্রী পর্যায়ের সংলাপের পর এ বিবৃতি দেয়া হয়। বৈঠকে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক অনেক ইস্যু নিয়ে আলোচনা করা হয়।
জিসিসি দেশগুলো রাশিয়ার সঙ্গে সব ধরনের সহযোগিতা বাড়াতে চায় বলে জানান জোটের মহাসচিব জসিম আল-বুদাইয়ি। তিনি এ আলোচনাকে ফলপ্রসূ বলে মত দিয়েছেন। দুই পক্ষের মধ্যে ২০১১ সালের যে কৌশলগত সংলাপের চুক্তি হয়, সে বিষয়টি মনে করিয়ে দেন তিনি।
বুদাইয়ি বলেন, সব দেশ ও আঞ্চলিক ব্লকের মধ্যে সহযোগিতা বাড়াতে এবং সম্পর্কোন্নয়নের জন্য নেতারা কাজ করছেন, যাতে বিশ্বপর্যায়ে জিসিসি দেশগুলোর প্রভাব বাড়ে।
উভয় পক্ষ বৈশ্বিক অর্থনীতির উন্নয়নে সহায়তার ওপর জোর দিয়েছে এবং তেলের বাজার স্থিতিশীল রাখতে একমত হয়েছে। দুই পক্ষ মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির দ্বারপ্রান্তে বলে মনে করা হয়। তাদের মধ্যে সম্পর্ক কীভাবে আরও গভীর করা যায় সে বিষয়ে কাজ চলছে। তারা অর্থনীতি, বাণিজ্য, জ্বালানি, নির্মাণ স্থাপনা, প্রযুক্তি, বিনিয়োগ প্রভৃতি নিয়ে আলোচনা করেন। এসব খাতে কৌশলগত অংশীদারি বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দেন তারা।
সাম্প্রতিক সময়ে তেল উৎপাদক দেশগুলোর জোট ওপেক+এর কার্যক্রম নিয়ে উভয় পক্ষ প্রশংসা করেন। একই সঙ্গে এ বিষয়ক চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য সব দেশের অন্তর্ভুক্তি চায় তারা যাতে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে এর প্রভাব পড়ে।
জিসিসি মহাসচিব মনে করেন, তেলের বাজারে রাশিয়ার সঙ্গে তাদের এবং ওপেক+এর সহযোগিতার ইতিবাচক প্রভাব রয়েছে।
তিনি বলেন, রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যকার যুদ্ধের বিষয়ে আমাদের অবস্থান জাতিসংঘের কনভেনশন ও নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তিনি আরও বলেন, আরব দেশগুলো জাতিসংঘের নীতিকে সমর্থন করে এবং কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে না। এছাড়া দেশগুলো সব ধরনের দ্বন্দ্ব এড়িয়ে চলার নীতিতে বিশ্বাসী।
রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সার্গেই ল্যাভরভ বলেন, উপসাগরীয় দেশগুলোর সঙ্গে ইরানের সম্প্রীতি এবং আরব লিগে সিরিয়ার প্রত্যাবর্তন নিয়ে রাশিয়া বেশ্ব উচ্ছ্বসিত। সিরিয়ার প্রতি উপসাগরীয় দেশগুলোর মনোভাব এবং দেশটির সার্বভৌমত্বের প্রতি সম্মান প্রদর্শন এ অঞ্চলে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। বিশেষ করে আরব লিগে সিরিয়ার প্রত্যাবর্তন বিশেষ গুরুত্ব বহন করে বলে জানান ল্যাভরভ।
তিনি এ সময় সুদান ও ইয়েমেন সংকট সমাধানের ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, আমরা ইয়েমেনের সংকট সমাধানে উপসাগরীয় দেশগুলোর
প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানাই এবং সমন্বিত সংলাপের আহ্বান করছি।
এ বৈঠকের একপর্যায়ে সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও যুবরাজ ফয়সাল বিন ফারহানের সঙ্গে একান্ত আলাপ করেন। তারা দুই দেশের মধ্যে ঐতিহাসিক বন্ধুত্ব এবং কৌশলগত সহযোগিতা পর্যালোচনা করেন।
ইরানে ইসলামি বিপ্লবের দুই বছর পর ইরাক-ইরান যুদ্ধের সময় ১৯৮১ সালের মে মাসে যাত্রা করে জিসিসি। সৌদি আরব, বাহরাইন, ওমান, কুয়েত, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও কাতারের সমন্বয়ে গঠিত এই রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক জোটের সঙ্গে শিয়া অধ্যুষিত ইরানের সম্পর্ক বিপরীতমুখী ছিল। প্রসঙ্গত বিশ্বে অপরিশোধিত তেলের সরবরাহের এক-পঞ্চমাংশ আসে এ সদস্য রাষ্ট্রগুলো থেকে, যা আরও বাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।