নিজস্ব প্রতিবেদক:ঝুঁকিপূর্ণ গুলশান শপিং সেন্টার বন্ধ করে দেয়ার প্রতিবাদে রাজধানীর গুলশান-১ নম্বর মোড় অবরোধ করে থাকা ব্যবসায়ীরা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছেন। ঢাকার উত্তর সিটি করপোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার গুলশান শপিং সেন্টারে গিয়ে ভবনটি সিলগালা করে দেন। এর প্রতিবাদে ওই মার্কেটের ব্যবসায়ী ও দোকানকর্মীরা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ শুরু করেন। একপর্যায়ে তারা গুলশান-১ নম্বর মোড় সিমেন্টের ব্লক দিয়ে বন্ধ করে দিলে গুরুত্বপূর্ণ এই মোড় দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় চারদিকের রাস্তায় আটকা পড়ে শত শত যানবাহন। এর প্রভাবে অন্যান্য সড়কেও যানজট সৃষ্টি হয়।
পুলিশ অবরোধকারীদের সরিয়ে দিতে গেলে বিকাল সাড়ে ৩টার পর শুরু হয় সংঘর্ষ। এ সময় বৃষ্টির মতো ঢিল ছুড়তে থাকে বিক্ষোভকারীরা। এ পরিস্থিতিতে আশপাশ এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। গুলশান ট্রাফিক বিভাগের সহকারী কমিশনার মোস্তাফিজুর রহমান জানান, পুলিশ বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দিলে বিকাল সোয়া ৪টার দিকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করে। যান চলাচল এখন স্বাভাবিক। আমরা চারদিক থেকে গাড়ি ছাড়ছি। এখন আর কোনো সমস্যা নেই।
ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম রেজা বলেন, গুলশান শপিং সেন্টার ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ। সে কারণেই ভবনটি সিলগালা করে দেয়া হয়। এর আগে আমরা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেছিলাম। তারা সময় চেয়ে লিখিত দিয়েছিলেন, বলেছিলেন ঈদের পরই তারা সরে যাবেন। শতাধিক ব্যবসায়ী এ ব্যাপারে আমাদের কাছে লিখিত দিয়েছিলেন, কিন্তু তারা যাননি।
২০১৭ সালে ২ জানুয়ারি পাশের ডিএনসিসি কাঁচাবাজারে ভয়াবহ আগুন লাগে। প্রায় ২৪ ঘণ্টা পর সেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। ওই ঘটনার পর গুলশান শপিং সেন্টারের অগ্নিনিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। ওই বছরের ২৮ মে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা গুলশান শপিং সেন্টার পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনে ওই ভবনে অগ্নিঝুঁকি সংক্রান্ত ১০টি ত্রুটি
ধরা পড়ে। সে সময় ত্রুটি সারানোর জন্য সময় দিয়ে ভবন মালিকদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল, কিন্তু এসব ত্রুটি সারানো হয়নি বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
২০১৮ সালের ১১ জুন ফায়ার সার্ভিস ঘোষণা করে, ভবনটি ‘ব্যবহার উপযোগী নয়’। ওই নোটিশের বিরুদ্ধে সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিবের কাছে আপিল করেন গুলশান শপিং সেন্টারের সাধারণ সম্পাদক। ফায়ার সার্ভিসের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে যায় দোকান মালিক সমিতি। তবে হাইকোর্ট ফায়ার সার্ভিসের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করার নির্দেশ দেন। ২০২১ সালের ২১ জুন আবারও ওই ভবনটি পরিদর্শন করেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তাদের নিয়ে গঠিত কমিটি। তখনও সিদ্ধান্ত বহাল থাকে।